পবিত্র কাবাঘরে ১২০ কেজি স্বর্ণের নতুন গিলাফএ বছর পবিত্র হজের খুতবা দেবেন পবিত্র মসজিদুল হারামের ইমাম ও খতিব শায়খ ড. সালেহ বিন হুমাইদজুলুমকারীদের জন্য আখেরাতে কঠিন শাস্তি অপেক্ষা করছেকোরআন ও হাদিসে নারীর সামাজিক ও রাজনৈতিক অধিকারযে পদ্ধতিতে হজ করা উত্তম
No icon

মোনাজাতে হাত ওঠানো কি জরুরি?

আল্লাহর কাছে মোনাজাত বা দোয়া করার সময় হাত ওঠানো জরুরি নয়। হাত না উঠিয়েও দোয়া করা যায়। হাত না উঠিয়েও আল্লাহর কাছে নিজের যে কোনো প্রয়োজন তুলে ধরা যায় বা ক্ষমা প্রার্থনা করা যায়। তবে নামাজের বাইরে দোয়া করার সময় হাত ওঠানো মুস্তাহাব। বেশ কিছু হাদিসে দোয়ার সময় হাত ওঠানোর কথা এসেছে।সালমান ফারসি (রা.) থেকে বর্ণিত আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, তোমাদের রব অত্যন্ত লজ্জাশীল ও দয়ালু। বান্দা যখন তাঁর কাছে কিছু চেয়ে হাত ওঠায় তখন তার হাত খালি ফিরিয়ে দিতে লজ্জাবোধ করেন। (সুনানে তিরমিজি)

 মালেক ইবনে য়াসার (রা.) থেকে বর্ণিত আরেকটি হাদিসে আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়সাল্লাম) বলেছেন, তোমরা আল্লাহর নিকট দোয়ার সময় হাতের তালু ওপরে সম্মুখে রেখে দোয়া করবে, হাতের পৃষ্ঠ ওপরে রেখে নয়। (সুনানে আবু দাউদ)

মোনাজাতের শুরুতে যা পড়বেন

মোনাজাতের শুরুতে হামদ ও দরুদ পড়া অর্থাৎ আল্লাহর প্রশংসা করা ও নবিজির (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) প্রতি দরুদ পাঠ করা সুন্নত। তাই যে কোনো দোয়া করার সময় শুরুতেই হামদ ও দরুদ পাঠ করুন এভাবে, আলহামদুলিল্লাহি রাব্বিল আলামীন ওয়াস-সালাতু ওয়াস-সালামু আলা সাইয়িদিল মুরসালিন ওয়া আলা আলিহি ওয়া সাহবিহি আজমাইন। অর্থাৎ সকল প্রশংসা জগৎসমূহের রব আল্লাহর। সালাত ও সালাম বর্ষিত হোক নবিদের সর্দারের ওপর এবং তার পরিবার-পরিজন ও সাহাবিদের ওপর।ফুযালা ইবনে ওবাইদ (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এক ব্যক্তিকে নামাজে দোয়া করতে শুনলেন, সে আল্লাহ তা আলার প্রশংসা করেনি এবং নবিজির (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) প্রতি দরুদও পাঠ করেনি। তখন রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, এই ব্যক্তি তাড়াহুড়ো করে ফেলেছে, তারপর তিনি তাকে ডাকলেন এবং তাকে ও অন্যদেরও বললেন, আপনারা কেউ যখন নামাজ পড়বেন, তখন শুরু করবেন রবের প্রশংসা ও গুণাবলী বর্ণনার মাধ্যমে, তারপর নবির (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) প্রতি দরুদ পাঠ করবেন, তারপর যা ইচ্ছা দোয়া করবেন। (মুসনাদে আহমদ)

আবদুল্লাহ ইবন মাসউদ (রা.) বলেন, একদিন আমি নামাজ পড়ছিলাম, নবিজি (সা.), আবু বকর ও ওমর (রা.) উপস্থিত ছিলেন। আমি যখন বৈঠকে বসলাম, তখন আল্লাহর প্রশংসা ও গুণাবলী বর্ণনা করলাম, তারপর নবিজির প্রতি দরুদ পাঠ করলাম, তারপর নিজের জন্য দোয়া করলাম। তখন নবিজি (সা.) বললেন, চাও, তোমাকে দেওয়া হবে; চাও, তোমাকে দেওয়া হবে। (সুনানে তিরমিজি)

এই দুটি হাদিসে নবিজি (সা.) যদিও বিশেষত নামাজে দোয়া করার পদ্ধতি শিখিয়েছেন, কিন্তু তা নামাজে ও নামাজের বাইরে সব মোনাজাত ও দোয়ার ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য। নবিজির (সা.) এই কথার ওপর ভিত্তি করে আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রাদিয়াল্লাহু আনহু) বলতেন, আপনারা কেউ যদি রবের কাছে কোনো দোয়া (নামাজে ও নামাজের বাইরে যে কোনো দোয়া) করতে চান, তাহলে আগে আল্লাহর যথাযথ প্রশংসা ও গুণাবলী বর্ণনা করবেন, তারপর নবিজির (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) প্রতি দরুদ পাঠ করবেন, তারপর দোয়া করবেন। এভাবে দোয়া করলে দোয়া কবুল হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। (তাবরানি)