Islamic News BD - The Lesson of Peace
উলামায়ে কেরাম মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে নির্বাচিত একটি জামাআত
শুক্রবার, ০৯ জুন ২০২৩ ০১:১৮ পূর্বাহ্ন

Islamic News BD - The Lesson of Peace

কোরআন-হাদিসের গভীর জ্ঞানের অধিকারী উলামায়ে কেরামকে আল্লাহ তাআলা ইহকালে বিশেষ মর্যাদায় ভূষিত করেছেন এবং পরকালেও তাঁরা অনন্য মর্যাদার আসনে সমাসীন হবেন।

পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা ইলমে দ্বিন ও উলামায়ে কেরামের বিশেষ সম্মান ও অনন্য মর্যাদা সম্পর্কিত অনেক আয়াত নাজিল করেছেন। এক আয়াতে আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেছেন, ‘তোমাদের মধ্যে যারা ঈমান এনেছে ও যাদের জ্ঞান দান করা হয়েছে  আল্লাহ তাদের  মর্যাদায় উন্নত করবেন। তোমরা যা কিছু কর আল্লাহ সে সম্বন্ধে পরিপূর্ণ অবগত।’ (সুরা মুজাদালা, আয়াত :  ১১)  

এই আয়াতের ব্যাখ্যায় হাফেজ ইবনে হাজার আসকালানি (রহ.) বলেন, এই আয়াতের মর্ম হলো, আলেম মুমিনকে আল্লাহ তাআলা আলেম নন—এমন মুমিনের ওপর শ্রেষ্ঠত্ব দান করবেন। ‘মর্যাদায় উন্নত করা’ শ্রেষ্ঠত্ব প্রদান করার বিষয়ই প্রমাণ বহন করে। এর দ্বারা দুনিয়া ও আখিরাত উভয় জগতে মর্যাদায় উন্নত করাকেই বোঝানো হয়েছে। (ফাতহুল বারি ১/১৭২)

অন্য আয়াতে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘হে নবী, আপনি বলুন, যারা জানে (অর্থাৎ আলেম) আর যারা জানে না (অর্থাৎ আলেম নয়) উভয় কি সমান হতে পারে? (কখনোই না)।

কিন্তু উপদেশ গ্রহণ তো কেবল বোধসম্পন্ন লোকেরাই করে।’ (সুরা জুমার, আয়াত : ৮)
এই আয়াতের ব্যাখ্যায় আল্লামা আলুসি (রহ.) বলেন, আয়াতটি জ্ঞানের বাস্তবতার সুস্পষ্ট বর্ণনা এবং ইলম ও আমলের মর্যাদার প্রতি ইঙ্গিত করার জন্য। আয়াতের প্রশ্নবোধক শব্দটি এ কথা বোঝায় যে প্রথম প্রকার তথা যারা জানে তারা মর্যাদার সুউচ্চ স্তরে আছে আর দ্বিতীয় প্রকার তথা যারা জানে না তারা অকল্যাণের সর্বশেষ প্রান্তরে আছে, যার কারো নিকট অস্পষ্ট নয়। (তাফসিরে রুহুল মাআনি, ১২/৩৭৪)

অন্য আয়াতে আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেছেন, ‘আল্লাহ বান্দাদের মধ্য থেকে যারা আলেম, শুধু তারাই আল্লাহকে ভয় করে থাকে।’ (সুরা ফাতির, আয়াত : ২৮) 

ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, এই আয়াতে উলামায়ে কেরামের মর্যাদা ও একটি বিশেষ গুণকে বিশেষায়িত করা হয়েছে। আয়াতে এ কথা বোঝানো হয়েছে যে বিশেষ করে আলেমরা আল্লাহকে ভয় করে থাকে। এ বিশেষ গুণে অন্য লোকেরা আলেমদের সমমানের নয়। যেন আল্লাহ তাআলা বলতে চান, ‘নিশ্চয়ই আমার মাখলুকের মধ্য থেকে আমার শ্রেষ্ঠত্ব, বড়ত্ব ও রাজত্ব সম্পর্কে যে যত বেশি জানে, সে-ই আমাকে বেশি ভয় করে।’ (তাফসিরে মাজহারি ৮/১৭)

এ কথা কোরআন-হাদিস দ্বারা প্রমাণিত যে যাকে ইলমে দ্বীন গ্রহণ করার জন্য নির্বাচন করবেন, তিনিই দুনিয়া ও আখিরাতে আলেম বা তালেবে ইলম হিসেবে সৌভাগ্যবান হওয়ার মর্যাদা লাভ কববেন। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তিনি যাকে ইচ্ছা কেবল তাকেই বিশেষ জ্ঞান দান করেন। আর যাকে বিশেষ জ্ঞান দান করা হয়, সে প্রভুত কল্যাণকর বস্তুপ্রাপ্ত হয়। উপদেশ তারাই গ্রহণ করে, যারা জ্ঞানবান।’ (সুরা বাকারা, আয়াত : ২৬৯)
অন্য আয়াতে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘অতঃপর আমি এ কিতাবের ওয়ারিশ বানিয়েছি আমার বান্দাদের মধ্যে তাদের, যাদের আমি মনোনীত করেছি।’ (সুরা ফাতির, আয়াত : ৩২)

এই আয়াতের ব্যাখ্যায় আল্লামা ইবনে কাসির (রহ.) বলেন, এই নিয়ামতের মাধ্যমে সব মানুষের মধ্য থেকে উলামায়ে কেরামই সর্বাধিক ঈর্ষান্বিত এবং এই রহমতের ব্যাপারে তারাই সবচেয়ে বেশি উপযুক্ত। (তাফসিরে ইবনে কাসির ৩/৭০১)

এ ছাড়া অন্য আয়াত ও অসংখ্য হাদিস দ্বারা প্রমাণিত যে উলামায়ে কেরাম যদি তাকওয়া, আমল, ইখলাস ও ইলমে দ্বিনের প্রকৃত অনুসারী হয়, তাহলে তারা দুনিয়াতেও মর্যাদাবান এবং আখিরাতেও সম্মানের অধিকারী হবেন, ইনশাআল্লাহ। আল্লাহ সবাইকে কবুল করুন।