আগামী ২৯ জুন শুরু হবে কোরবানি। আজ থেকে কোরবানির আগ পর্যন্ত বিশেষ কিছু কাজ নিষিদ্ধ। কেননা জিলহজ মাসের শুরু থেকে কোরবানির আগ পর্যন্ত ১০ দিন এ কাজগুলো থেকে বিরত থাকা নবিজির সুন্নত। হাদিসের বর্ণনা থেকে তা সুস্পষ্ট। সেই কাজগুলো কী?
নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, তোমাদের মধ্যে যারা কোরবানি দেওয়ার ইচ্ছা পোষণ করে, তারা যেন জিলহজ মাসের চাঁদ ওঠার পর থেকে কোরবানি সম্পন্ন করা পর্যন্ত নিজ নিজ চুল ও নখ কাটা থেকে বিরত থাকে। (মুসলিম, মিশকাত)
হজরত উম্মে সালমা রাদিয়াল্লাহু আনহা আরও বর্ণনা করেছেন, নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, যখন জিলহজ-এর ১০ দিন আসে এবং তোমাদের কেউ কোরবানি করার নিয়ত করে; তখন সে যেন নিজের চুল ও চামড়ার কোনো অংশ না কাটে। (মুসলিম)
সুতরাং যারা কোরবানি করার ইচ্ছা পোষণ করে তাদের উচিত, জিলহজ মাসের শুরু থেকে যেসব কাজ নিষিদ্ধ, তাহলো-
১. মাথার চুল কাটা কিংবা মাথা ন্যাড়া করা।
২. হাত ও পায়ের নখ কাটা।
৩. মোচ ছেঁটে ছোট করে নেওয়া।
৪. শরীরের অন্যান্য অযাচিত পশম (নাভি ও বগলের নিচের অযাচিত পশম) কাটা কিংবা পশম বিলুপ্তকারী ওষুধ ব্যবহার করা।
হাদিসের নির্দেশনা অনুযায়ী জিলকদ মাসের শেষ দিকে উল্লেখিত কাজগুলো সম্পন্ন করা উচিত। যাতে জিলহজ মাসের শুরু থেকে কোরবানির দিন পর্যন্ত চুল, মোচ, হাত ও পায়ের নখ এবং শরীরের অযাচিত লোম কাটার প্রয়োজন না হয়।
এ বিষয়ে ইসলামিক স্কলারদের মতামত হলো-
১. ইমাম আবু হানিফা রাহমাতুল্লাহি আলাইহির মতে, জিলহজ মাসের প্রথম দশদিন অর্থাৎ কোরবানির সম্পন্ন হওয়ার আগ পর্যন্ত নখ, চুল ইত্যাদি কাটা মাকরুহ বা নিষিদ্ধ নয়, তবে না কাটাই উত্তম।
২. ইমাম শাফেঈ রাহমাতুল্লাহি আলাইহির মতে, উল্লেখিত কাজগুলো করা নিষিদ্ধ (মাকরুহে তানজিহি) তবে হারাম নয়। তবে ওলামায়ে কেরামগণের মতে কোরবানির পশু জবাইয়ের পর চুল, নখ ইত্যাদি কাটা মুস্তাহাব।
উল্লেখ্য, অনেকেই কোরবানি দাতার জন্য কোরবানির আগে এ কাজগুলো করাকে হারাম বলেছেন। না, তা ঠিক নয়; বরং একান্তই যদি কেউ কোরবানির আগে এ কাজগুলো করে অর্থাৎ চুল, চামড়া বা নখ কাটে; তবে তার জন্য কোনো কাফফারা বা জরিমানা নেই।
তবে উল্লেখিত আমলগুলোকে ফোকাহায়ে কেরাম মুস্তাহাব বলেছেন। কেউ এর ব্যতিক্রম করলে আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাইতে হবে। তাই জিলকদ মাসের শেষ দিনের মধ্যে নখ ও চুল না কাটলে তা লম্বা হয়ে যেতে পারে। যা সুন্নাতের পরিপন্থী।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে জিলহজ মাসের সম্মানের প্রতি লক্ষ্য রেখে হাদিসের ওপর আমল করতে উল্লেখিত বিধি-নিষেধগেুলোর প্রতি যত্নবান হওয়ার তাওফিক দান করুন। আমিন।