Islamic News BD - The Lesson of Peace
সন্তানের প্রথম শিক্ষাগুলো কী হবে?
মঙ্গলবার, ১৫ জুন ২০২১ ০৫:৩১ পূর্বাহ্ন
Islamic News BD - The Lesson of Peace

Islamic News BD - The Lesson of Peace

সন্তান-সন্তুতি মহান আল্লাহর নেয়ামত। আবার বাবা-মার জন্য এক মহাপরীক্ষাও বটে। তাই এ নেয়ামতের শুকরিয়া আদায় ও পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে সন্তানকে প্রথমেই কিছু গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা ও করণীয় বোঝাতে হবে। আর সন্তানকে প্রথম থেকে কী শেখাতে হবে, কুরআনুল কারিমে মহান আল্লাহ তা সুস্পষ্টভাবে তুলে ধরেছেন। সন্তানের জন্য প্রথম শিক্ষাগুলো কী?

মহান আল্লাহ তাআলার দেওয়া ধন-সম্পদের মধ্যে সন্তান-সন্তুতি অন্যতম। তাদের মাধ্যমেও আল্লাহ তাআলা বাবা-মাকে পরীক্ষা করবেন। আল্লাহ তাআলা বলেন-
وَاعْلَمُواْ أَنَّمَا أَمْوَالُكُمْ وَأَوْلاَدُكُمْ فِتْنَةٌ وَأَنَّ اللّهَ عِندَهُ أَجْرٌ عَظِيمٌ আর জেনে রাখ! তোমাদের ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি অকল্যাণের সম্মুখীনকারী (মহা পরীক্ষা)। বস্তুতঃ আল্লাহর কাছে রয়েছে মহাসাওয়াব। (সুরা আনফাল : আয়াত ২৮

 ১. শিরকমুক্ত ইবাদতের কথা বলতে হবে সন্তানকে প্রথমেই এ কথা শেখাতে হবে যে, আল্লাহর সঙ্গে কাউকে শরিক করা যাবে না। হজরত লোকমান যেমনটি তাঁর সন্তানকে বলেছিলেন। কেননা শিরক সবচেয়ে বড় জুলুম। আল্লাহ তাআলা সে কথা কুরআনে এভাবে তুলে ধরেছেন-
وَإِذْ قَالَ لُقْمَانُ لِابْنِهِ وَهُوَ يَعِظُهُ يَا بُنَيَّ لَا تُشْرِكْ بِاللَّهِ إِنَّ الشِّرْكَ لَظُلْمٌ عَظِيمٌ যখন লোকমান উপদেশচ্ছলে তার পুত্রকে বললঃ হে বৎস, আল্লাহর সাথে শরীক করো না। নিশ্চয় আল্লাহর সাথে শরীক করা মহা অন্যায়। (সুরা লোকমান : আয়াত ১৩)

২. আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস বাড়াতে হবে হজরত লোকমান তার সন্তানকে মহান আল্লাহর ইলম ও কুদরতের ব্যঅপকতা এবং অতিসুক্ষ্ম বিষয়গুলো তুলে ধরেছেন। আল্লাহর প্রতি সব গোপন-প্রকাশ্য গোনাহ, অবিশ্বাস থেকে মুক্ত থাকতে হবে। মানুষের বিশ্বাস যেন দৃঢ় হয়, সে বিষয়ে মহান আল্লাহ বলেন-
يَا بُنَيَّ إِنَّهَا إِن تَكُ مِثْقَالَ حَبَّةٍ مِّنْ خَرْدَلٍ فَتَكُن فِي صَخْرَةٍ أَوْ فِي السَّمَاوَاتِ أَوْ فِي الْأَرْضِ يَأْتِ بِهَا اللَّهُ إِنَّ اللَّهَ لَطِيفٌ خَبِيرٌ হে সন্তান! কোনো বস্তু যদি সরিষার দানা পরিমাণও হয়; অতঃপর তা যদি থাকে প্রস্তর ভেতরে অথবা আকাশে অথবা ভূ-গর্ভে; তবে আল্লাহ তাও উপস্থিত করবেন (আল্লাহর প্রতি এমন বিশ্বাস স্থাপন করা)। নিশ্চয়ই আল্লাহ গোপন ভেদ জানেন, সবকিছুর খবর রাখেন। (সুরা লুকমান : আয়াত ১৬) ৩. কৈশোর থেকে ৬ জিনিসের শিক্ষা দেওয়া

নামাজের শিক্ষা।
 মানুষকে ভালো বলার শিক্ষা।
অন্যায় থেকে নিষেধ করা।
এক্ষেত্রে সবর কর। প্রথম তিনটি কাজ করতে গিয়ে যে বিপদই আসুক না কেন, ধৈর্যের সঙ্গে তা মোকাবেলা করা। কেননা এসব বিষয়ে মহান আল্লাহ বলেছেন-
يَا بُنَيَّ أَقِمِ الصَّلَاةَ وَأْمُرْ بِالْمَعْرُوفِ وَانْهَ عَنِ الْمُنكَرِ وَاصْبِرْ عَلَى مَا أَصَابَكَ إِنَّ ذَلِكَ مِنْ عَزْمِ الْأُمُورِ হে সন্তান! নামাজ প্রতিষ্ঠা কর; সৎকাজে আদেশ দাও, মন্দকাজে নিষেধ কর এবং (এসব বাস্তবায়নে বিপদ আসলে)

বিপদাপদে সবর কর। নিশ্চয়ই এটা সাহসিকতার কাজ। (সুরা লুকমান : আয়াত ১৭)

অহংকার ও গর্ব না করার শিক্ষা
মধ্যমপন্থা অবলম্বন করা শেখানো

এ ৬ কাজের সমন্বয় সন্তানকে সত্যিকারের মানুষে পরিণত করবে। সে কারণেই প্রথম কাজ হচ্ছে- নামাজ প্রতিষ্ঠা করা। অনেকের এমন সন্তান রয়েছে; যারা নামাজ পড়ে না। এ জন্য ওই সন্তানের ব্যাপারে মহান আল্লাহর কাছে জবাবদিহি করতে হবে।

নামাজের শিক্ষা এ কারণেই রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সব ঈমানদারের প্রতি সন্তানের ব্যাপারে প্রথমে দুইটি নির্দেশ করেছেন। একটি হলো- নামাজ; আর দ্বিতীয়টি হলো- পর্দা। হাদিসে এসেছে-
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, তোমরা তোমাদের সন্তান-সন্তুতিদের নামাজ আদায় করতে আদেশ করবে; যখন তারা ৭ বছর বযসে পৌঁছবে। আর নামাজের জন্য তাদেরকে শাসন করবে; যখন তারা ১০ বছর বয়সে পৌঁছবে। আর তখন তাদের জন্য আলাদা বিছানা বা শয্যার ব্যবস্থা করবে। (আবু দাউদ, মিশকাত)

নামাজ শেখানোয় বাবা-মার করণীয় সন্তানকে ৭ বছরে নামাজ পড়াতে হলে ৫ বছর থেকেই কুরআন শেখানোর চেষ্টা করতে হবে। চেষ্টা থাকলে ২ বছরে নামাজের জন্য প্রয়োজনীয় সুরা ও নামাজের নিয়মে অভ্যস্ত করানোও হবে সহজ। আর ৭ বছর বয়সে সন্তান নামাজের প্রতি আগ্রহী হবে। যদি ৭ বছর বয়সে এসে নামাজের নিয়ম ও সুরা শেখা না হয়; তবে সে নামাজের প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলবে। সুতরাং বাবা-মার করণীয় হচ্ছে ৫ বছর থেকেই তাকে সঙ্গে রেখে নামাজের নিয়ম ও সুরা শেখানোর চেষ্টা করা।

মনে রাখতে হবে

যে ছেলে-মেয়ের বয়স ১০ বছর কিংবা ১১/১২ বছর; নামাজ ফরজ হোক আর না হোক; ওই ছেলে-মেয়ে যদি নামাজ না পড়ে আর তা বাবা-মার জানা থাকে তবে বাবা-মার আমলনামায় নামাজ কাজা করার গোনাহ হবে।