Islamic News BD - The Lesson of Peace
যে বৃষ্টিকে দুর্ভিক্ষের কারণ বলেছেন বিশ্বনবি
সোমবার, ২১ জুন ২০২১ ১৬:২৩ অপরাহ্ন
Islamic News BD - The Lesson of Peace

Islamic News BD - The Lesson of Peace

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম স্বাভাবিক বৃষ্টি দেখলে বলতেন, এটা আল্লাহর রহমত। আবার আকাশ মেঘাচ্ছন্ন হলেই তাঁর মুখমণ্ডল বিবর্ণ হয়ে যেত। বিপদের ভয়ে একবার বের হতেন। আবার প্রবেশ করতেন। কখনো সামনে আসতেন। কখনো পেছনে যেতেন। আর বৃষ্টি শুরু হলেই তার উৎকণ্ঠা-দুঃশ্চিন্তা ও ভয় কমে যেত।' (বুখারি-মুসলিম) আবার এ বৃষ্টিকে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম দুর্ভিক্ষের কারণ হিসেবেও উল্লেখ করেছেন। কিন্তু কেন?

বৃষ্টি বর্ষণের জ্ঞান একমাত্র আল্লাহ তাআলার। অদৃশ্যের পাঁচটি জ্ঞানের একটি মেঘ থেকে বৃষ্টি। আল্লাহ তাআলাই মেঘমালা থেকে বৃষ্টি বর্ষণ করেন। হাদিসে এসেছে-

যে বৃষ্টি দুর্ভিক্ষের কারণ

বৃষ্টির পানিতে যেমন প্রাণের সঞ্চার হয়; আবার এ বৃষ্টির ফলেই তৈরি হয় দুর্ভিক্ষ। হাদিসে পাকের বর্ণনায় তাও ওঠে এসেছে-

হাদিসে উল্লেখিত বৃষ্টি হলো- অতিবৃষ্টি। যে বৃষ্টিতে মানুষের জীবন বিপর্যস্ত হয়। ফল-ফসলের ক্ষতি হয়। এমনকি অতিবৃষ্টি হলে ফল-ফসল জন্মায় না। ফলে দুর্ভিক্ষের পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। সে কারণেই বৃষ্টি শুরু হলেই দুর্ভিক্ষ থেকে বাঁচতে কল্যাণের বৃষ্টির জন্য প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এভাবে দোয়া করতেন-


اللَّهُمَّ صَيِّبًا نَافِعًا< উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা সাইয়্যেবান নাফিআ।

অর্থ : হে আল্লাহ! আপনি মুষলধারায় যে বৃষ্টি দিচ্ছেন, তা যেন আমাদের জন্য উপকারি হয়। (বুখারি, নাসাঈ)

অতিবৃষ্টি বন্ধে দোয়া

বৃষ্টিতে সৃষ্ট দুর্ভিক্ষ থেকে বাঁচতে দোয়া করতেন বিশ্বনবি। আর বৃষ্টি যদি ভয়াবহভাবে বাড়ে, অবিরাম বৃষ্টি হতে থাকে, বন্যার সৃষ্টি হয় তবে এ বৃষ্টিই দুর্ভিক্ষের দিকে ধাবিত হয়। সুতরাং বৃষ্টির কারণে দুর্ভিক্ষ, অনিষ্টতা ও ক্ষতি হওয়া থেকে বাঁচতে প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অতিবৃষ্টি বন্ধে এ দোয়া করতেন-

<اللَّهُمَّ حَوَالَيْنَا وَلاَ عَلَيْنَا، اللَّهُمَّ عَلَى الآكَامِ وَالْجِبَالِ وَالآجَامِ وَالظِّرَابِ وَالأَوْدِيَةِ وَمَنَابِتِ الشَّجَرِ উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা হাওয়ালাইনা ওয়া লা আলাইনা আল্লাহুম্মা আলাল আকামি ওয়াল ঝিবালি ওয়াল আঝামি ওয়াজ জিরাবি ওয়াল আওদিয়াতি ওয়া মানাবিতিশ শাঝারি।

অর্থ : হে আল্লাহ! আমাদের আশে পাশে, আমাদের উপর নয়। হে আল্লাহ! টিলা, মালভূমি, উপত্যকায় এবং বনভূমিতে বর্ষণ করুন। অতিবৃষ্টির দুর্ভিক্ষ থেকে বাঁচতে বিশ্বনবির দোয়া

হজরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা বর্ণনা করেন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আকাশে মেঘ দেখলে কাজ-কর্ম ছেড়ে দিয়ে তার দিকেই মনোনিবেশ করতেন। তিনি বলতেন-

اللّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنْ شَرِّ مَا فِيهِ উচ্চারণ : ;আল্লহুম্মা ইন্নি আউজুবিকা মিন শাররি মা ফিহি=

অর্থ : =হে আল্লাহ! আমি তোমার কাছে (অতিবৃষ্টির অকল্যাণ থেকে) আশ্রয় চাই। এতে যে মন্দ রয়েছে তা থেকেও)।

এতে (এ দোয়া পড়লে) যদি আল্লাহ মেঘ পরিষ্কার করে দিতেন। তবে তিনি আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আদায় করতেন। আর যদি বৃষ্টি বর্ষণ শুরু হলেই (আবার) বলতেন-

=اللّهُمَّ سَقْيًا نَافِعًا= =উচ্চারণ :=আল্লহুম্মা সাক্বইয়ান নাফিআ=

অর্থ : হে আল্লাহ! তুমি কল্যাণকর পানি দান কর। (আবু দাউদ, নাসাঈ, ইবনে মাজাহ, মিশকাত)

সুতরাং অনাবৃষ্টিই নয় বরং অতিবৃষ্টির সময়ও মহান আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করা। বৃষ্টির ক্ষতি থেকে বেঁচে থাকতে বেশি বেশি প্রার্থনা করা সুন্নাত।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে অতিবৃষ্টিতে সৃষ্ট দুর্ভিক্ষ থেকে নিজেদের মুক্ত রাখার তাওফিক দান করুন। কুরআন-সুন্নাহর ওপর যথাযথ আমল করার তাওফিক দান করুন। আমিন।