আবদুল্লাহ ইবনে আমর (রা.) বলেন, এক সফরে রাসুল (সা.) আমাদের পেছনে রয়ে গিয়েছিলেন। আমরা আসরের নামাজ শুরু করতে দেরি করে ফেলেছিলাম। তিনি যখন আমাদের কাছে পৌঁছলেন, আমরা অজু করছিলাম এবং তাড়াহুড়ার কারণে আমাদের পা মাসেহ করার মত হালকাভাবে ধুয়ে নিচ্ছিলাম। তখন রাসুল (সা.) উচ্চৈস্বরে বললেন, পায়ের গোড়ালির জন্য জাহান্নামের শস্তি রয়েছে। দুবার অথবা তিনবার তিনি এ কথা বললেন। (সহিহ বুখারি, সহিহ মুসলিম)
এ হাদিস থেকে যে শিক্ষাগুলো আমরা পাই
১. অজু করার সময় অজুর অঙ্গ-প্রত্যঙ্গগুলো পরিপূর্ণরূপে ধোয়া ফরজ। পায়ের গোড়ালি, হাতের কুনুই, হাত ও পায়ের আঙুলসহ যে সব জায়গা শুকনো থেকে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে তা ভালো করে ধুতে হবে। চামড়া পর্যন্ত পানি পৌঁছার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধক হয় এমন কিছু লেগে থাকলে তা সরাতে হবে। কারণ আল্লাহ অজুর জন্য যে অঙ্গগুলো ধোয়ার নির্দেশ দিয়েছেন তা পরিপূর্ণরূপে ধোয়া ছাড়া অজু শুদ্ধ হয় না। উল্লিখিত ঘটনায় এ কারণেই রাসুল (সা.) ওই সাহাবিদের সতর্ক করেছিলেন।
২. অজুর অঙ্গগুলোর কিছু অংশ শুকনো থেকে গেলে অজু হবে না। এ অবস্থায় নামাজ পড়লে নামাজও হবে না। অজু করার পর কোনো অঙ্গের কিছু অংশ শুকনো মনে হলে তা ধুয়ে নিতে হবে। ওমর রা. বলেন, একবার এক ব্যক্তি অজু করে এলে দেখা গেলো তার পায়ের এক নখ পরিমাণ জায়গা শুকনো রয়ে গেছে। রাসুল (সা.) তাকে বললেন, ফিরে গিয়ে সুন্দরভাবে আবার অজু করো। ওই ব্যক্তি ফিরে গিয়ে আবার অজু করে তারপর নামাজ আদায় করলো। (সহিহ মুসলিম)
৩. এ হাদিস থেকে বোঝা যায় চামড়ার মোজা পরিহিত না থাকলে অজুর সময় পা ধুতে হবে, শুধু মাসাহ করলে অজু শুদ্ধ হবে না। শিয়া সম্প্রদায় মনে করে, অজুর সময় পায়ে মোজা না থাকলেও শুধু পা মাসাহ করলেই অজু হয়ে যায়। ইমাম তিরমিজি (রহ.) তার কিতাবে এ হাদিসটি উল্লেখ করে বলেছেন, এ হাদিসের ফিকহ হলো, মোজা পরিহিত না থাকলে অজুর সময় পা মাসাহ করা বৈধ নয়।