চার বছরের বেশি সময় পর মসজিদে আসেন কাশ্মীরের মুসলিম নেতা মিরওয়াইজ ওমর ফারুক। মসজিদের বাইরে ও ভেতরে হাজার হাজার মুসল্লি তাঁকে স্বাগত জানান। এরপর শ্রীনগরের গ্র্যান্ড মসজিদের মিম্বারে খুতবা দিতে দাঁড়ালে অঝোরে কেঁদে ফেলেন তিনি। মুসল্লিদের উপচে পড়া ভিড়ে বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েন তিনি। মসজিদে ভেতরে তৈরি হয় আবেগঘন পরিবেশ। গত শুক্রবার (২২ সেপ্টেম্বর) শ্রীনগরের ৬০০ বছরের ঐতিহ্যবাহী গ্র্যান্ড মসজিদে এমন দৃশ্য দেখা যায়।
জুমার আগে খুতবায় ‘বিচ্ছিন্নতাবাদী’ নেতা মিরওয়াইজ বলেন, ‘দীর্ঘ সাড়ে চার বছর পর আমি আপনাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে এসেছি। ২০১৯ সালে ৪ আগস্টের পর থেকে কর্তৃপক্ষ আমাকে আমার বাড়ির বাইরে বের হতে দেয়নি। গৃহবন্দি ও স্বজাতি থেকে বিচ্ছিন্নতার দীর্ঘ সময়টি আমার বাবার মৃত্যুর পর সবচেয়ে কঠিন সময় ছিল। অনেকে মনে করেছে, আমাদের মনোবল দুর্বল হয়ে পড়েছে। না, বরং তা আরো বৃদ্ধি পেয়েছে।’
তিনি আরো বলেন, ‘আমি জানতাম, এমন পরিস্থিতি মোটেও সহজ নয়। আমাদের পরিচয়ের ওপর হামলা করা হয়েছে। এখন আল্লাহর ইচ্ছায় আমি আপনাদের নিয়ে ঐতিহাসিক এ মসজিদে ইমামতি করতে পারব। আমি আপনাদের আবেগ ভাষায় প্রকাশ করতে পারব না। এখন এটি ধৈর্য ধারণের সময়। হয়তো এখন আমাদের কথা শোনার মতো কেউ নেই, আমাদের কোনো স্থান নেই। তবে আল্লাহর প্রতি আমাদের বিশ্বাস অটুট রাখতে হবে।’
আল-জাজিরার প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ২০১৯ সালের ৫ আগস্ট জম্মু ও কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা সংবিধান থেকে তুলে নেওয়ার পর সেখানে ব্যাপক বিক্ষোভ হয়। তখন অন্য নেতাদের মতো ‘বিচ্ছিন্নতাবাদী’ নেতা মিরওয়াইজকেও গৃহবন্দি করা হয়। এমনকি শ্রীনগরের গ্র্যান্ড মসজিদটি রাজনৈতিক ও ধর্মীয় ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ হওয়ায় তা বন্ধ করে দেওয়া হয়। এরপর ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে তা নামাজের জন্য খোলা হয়।
সূত্র : আল-জাজিরা