Islamic News BD - The Lesson of Peace
আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনে অনর্থক কথা ও কাজ বর্জন করা
বুধবার, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ২৩:৩৬ অপরাহ্ন
Islamic News BD - The Lesson of Peace

Islamic News BD - The Lesson of Peace

বর্তমান যুগে কিছু মানুষের মধ্যে অনলাইনে এসে বিভিন্ন বিষয়ে (কোনো কোনো ক্ষেত্রে) অহেতুক কথাবার্তা বলার প্রবণতা বেড়েছে। যে বিষয়ে তাদের পড়াশোনা কিংবা পর্যাপ্ত জ্ঞান নেই, সে বিষয়েও তারা যা ইচ্ছা তাই বলার চেষ্টা করে। নিজের ব্যক্তিত্ব, জ্ঞান ও বয়স বিবেচনা না করেই সব বিষয়ে বিশেষজ্ঞ ভাব নেওয়ার চেষ্টা করে। অথচ অনর্থক কথা-কাজ মুমিনের জন্য শোভনীয় নয়। 

রাসুল (সা.) বলেছেন, কোনো ব্যক্তির ইসলামের অন্যতম সৌন্দর্য হলো অর্থহীন কথা বা কাজ ত্যাগ করা। (তিরমিজি, হাদিস : ২৩১৮)

কারণ কখনো কখনো শুধু দুষ্টামির ছলে কিংবা ভাইরাল হওয়ার আশায় বলা একটি অপরিপক্ব উক্তি সারা জীবনের কান্নার কারণ হতে পারে। আবার ধর্মীয় বিষয়ে হলে গোটা জীবনের আমল নষ্ট হয়ে আখিরাতও ধ্বংস হতে পারে। তাই আমাদের প্রিয় নবীজি (সা.) তাঁর উম্মতদের কথাবার্তায় সতর্ক হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। বিলাল ইবনুল হারিস আল-মুজানি (রা.) নামের রাসুল (সা.)-এর সাহাবি থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসুল (সা.)-কে বলতে শুনেছি, তোমাদের মধ্যে কোনো ব্যক্তি কখনো আল্লাহ তাআলার সন্তুষ্টির কথা বলে, যার সম্পর্কে সে ধারণাও করে না যে তা কোথায় গিয়ে পৌঁছবে, অথচ আল্লাহ তাআলা তার এ কথার কারণে তাঁর সঙ্গে মিলিত হওয়ার দিন পর্যন্ত তার জন্য স্বীয় সন্তুষ্টি লিখে দেন। আবার তোমাদের মধ্যে কোনো ব্যক্তি কখনো আল্লাহ তাআলার অসন্তুষ্টির কথা বলে, যার সম্পর্কে সে চিন্তাও করে না যে তা কোন পর্যন্ত গিয়ে পৌঁছবে। অথচ এ কথার কারণে আল্লাহ তাআলা তাঁর সঙ্গে মিলিত হওয়ার দিন পর্যন্ত তার জন্য অসন্তুষ্টি লিখে দেন। (তিরমিজি, হাদিস : ২৩১৯)

এর প্রমাণ ইবলিস শয়তান। একটি বাক্যই তাকে কিয়ামত পর্যন্ত অভিশপ্ত করে দিয়েছে। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘তিনি বলেন, হে ইবলিস! আমি যাকে আমার দুই হাতে সৃষ্টি করেছি, তার প্রতি সিজদাবনত হতে তোমাকে কিসে বাধা দিল? তুমি কি ঔদ্ধত্য প্রকাশ করলে, না তুমি অধিকতর উচ্চ মর্যাদাসম্পন্ন? সে বলল, আমি তার চেয়ে শ্রেষ্ঠ। আপনি আমাকে আগুন থেকে সৃষ্টি করেছেন এবং তাকে সৃষ্টি করেছেন কাদা থেকে। তিনি বলেন, তুমি এখান থেকে বের হয়ে যাও, কেননা নিশ্চয়ই তুমি বিতাড়িত। আর নিশ্চয়ই তোমার ওপর আমার অভিশাপ থাকবে, কর্মফল দিন পর্যন্ত। (সুরা : সদ, আয়াত : ৭৫-৭৮)

অনেকে আছে মানুষকে বিনোদন দিতে অনলাইনে এসে অসংলগ্ন কথাবার্তা বলে। মানুষকে আনন্দ দেওয়ার উদ্দেশ্যেও অনর্থক কথা বলার অনুমতি নেই। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, আর মানুষের মধ্য থেকে কেউ কেউ না জেনে আল্লাহর পথ থেকে মানুষকে বিভ্রান্ত করার জন্য বেহুদা কথা খরিদ করে, আর তারা ওগুলোকে হাসিঠাট্টা হিসেবে গ্রহণ করে; তাদের জন্য রয়েছে লাঞ্ছনাকর শাস্তি। (সুরা : লুকমান, আয়াত : ৬)

আবার কেউ কেউ মানুষকে কষ্ট দেওয়ার জন্য ‘রোস্ট ভিডিও’ তৈরি করে। কারণ এ ধরনের নেতিবাচক ভিডিওগুলো মানুষ বেশি দেখে, অথচ মানুষকে কষ্ট দিতে অনর্থক কথা বলা আরো ভয়ংকর। কবি ইয়াকুব হামদুনি বলেছেন, তরবারির ক্ষতের (শারীরিক) আরোগ্য আছে, কিন্তু জিভের দ্বারা সৃষ্ট ক্ষতের (মানসিক) আরোগ্য নেই। (তাজুল উরুস, পৃষ্ঠা ৩৭৩)

এটা মুমিনের কাজ নয়। যারা মুমিন, তারা এমন করতে পারে না। রাসুল (সা.) বলেছেন, মুমিন কখনো দোষারোপকারী, অভিশাপদাতা, অশ্লীলভাষী ও গালাগালকারী হয় না। (তিরমিজি, হাদিস : ২০১৩)

অতএব, আমাদের সবার উচিত, সব ধরনের অনর্থক কথা ও কাজ বর্জন করা। মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনে মনোনিবেশ করা।