সফরের ক্লান্তি ও কষ্ট বিবেচনা করে ইসলাম মুসাফিরদের শরিয়ত পালনে কিছু ছাড় দিয়েছে। যেমন রমজানের ফরজ রোজা মুসাফিররা চাইলে ভেঙে পরে কাজা করে নিতে পারেন, জুমার নামাজ ও কুরবানি মুসাফিরদের ওপর ওয়াজিব নয়। এ ছাড়া প্রতিদিনের চার রাকাত বিশিষ্ট ফরজ নামাজগুলো অর্থাৎ জোহর, আসর ও ইশার নামাজ মুসাফিরদের জন্য আল্লাহ সংক্ষীপ্ত করে দিয়েছেন। সফর অবস্থায় এ নামাজগুলো দুরাকাত পড়তে হয়। আল্লাহ সুবাহানাহু ওয়াতাআলা বলেন,
وَ اِذَا ضَرَبۡتُمۡ فِی الۡاَرۡضِ فَلَیۡسَ عَلَیۡکُمۡ جُنَاحٌ اَنۡ تَقۡصُرُوۡا مِنَ الصَّلٰوۃِ
যখন তোমরা দেশে-বিদেশে সফর কর, তখন নামাজ সংক্ষেপ করাতে দোষ নেই। (সুরা নিসা: ১০১)
কেউ তার আবাস থেকে ৪৮ মাইল বা ৭৮ কিলোমিটার দূরে যাওয়ার নিয়ত করে নিজের শহর থেকে বের হলে শরিয়তের পরিভাষায় তাকে মুসাফির বলা হয়। মুসাফির গণ্য হওয়ার জন্য সফর পরিমাণ দূরত্ব অতিক্রম করা জরুরি নয়। সফরের নিয়তে নিজের শহর থেকে বের হয়ে এক মাইল অতিক্রম করলেও সে মুসাফির গণ্য হবে।মুসাফির ব্যক্তি যদি ভুল করে চার রাকাত বিশিষ্ট কোনো ফরজ নামাজ কসর না করে চার রাকাতই পড়ে নেয়, তাহলে দেখতে হবে সে দুই রাকাতের পর বৈঠক করেছে কি না, যদি করে থাকে তাহলে তার ওই ফরজ নামায আদায় হয়ে যাবে। এ ক্ষেত্রে প্রথম দুরাকাত ফরজ এবং শেষ দুই রাকাত নফল হবে। নামাজের ভেতরেই যদি এ ভুলের কথা মনে পড়ে, তাহলে নামাজ শেষে সাহু সিজদা দিতে হবে। হাসান বসরি (রহ.) বলেন, কোনো মুসাফির ভুলে জোহরের নামাজ চার রাকাত পড়ে ফেললে সাহু সিজদা করবে। (মুসান্নাফ আবদুর রাযযাক: ২/৫৪১)
নামাজের ভেতরে মনে না পড়লে এবং সাহু সিজদা না দিলেও নামাজ হয়ে যাবে। আবার পড়তে হবে না।আর যদি চার রাকাত বিশিষ্ট কোনো ফরজ নামাজ চার রাকাত পড়ে এবং মাঝের বৈঠকও করতে ভুলে যায়, তাহলে তার ফরজ বাতিল হয়ে ওই নামায নফল হয়ে যাবে। তাকে পুনরায় ওই ফরজ নামাজ পড়ে নিতে হবে। (আদ্দুররুল মুখতার ২/১২৮)