Islamic News BD - The Lesson of Peace
যে তাকওয়ার গুণে মুমিন পাবে সুনিশ্চিত জান্নাত
রবিবার, ০১ আগস্ট ২০২১ ২১:০৯ অপরাহ্ন
Islamic News BD - The Lesson of Peace

Islamic News BD - The Lesson of Peace

মুমিনের প্রকৃত পুরস্কার হলো মহান আল্লাহর সান্নিধ্য বা দিদার। আল্লাহকে যথাযথভাবে ভয় করার মাধ্যম সুনিশ্চিত জান্নাত লাভ করবে মুমিন। তাকওয়া অবলম্বনকারীদের সামনে জান্নাতকে খুব কাছাকাছি উপস্থাপন করা হবে। তাদের বলা হবে- এই সেই জান্নাত যার ওয়াদা তোমাদের সঙ্গে করা হয়েছিল।তাকওয়া ছোট্ট একটি গুণ। এটি হলো প্রকাশ্যে-অপ্রকাশ্যে সর্বাবস্থায় আল্লাহ তাআলাকে ভয় করা।মুমিন ব্যক্তি যখনই নিজেকে আল্লাহর প্রেমে একাকার করে দিতে পারবে তখনই তার জন্য পরকালের সব কাজ সহজ হয়ে যাবে। চিরস্থায়ী জান্নাতই শুধু তার প্রাপ্তি। এ জান্নাত কিংবা নাজাতের জন্য অনেক বেশি আমল করতে হবে এমনটি নয়। বরং রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন-


অল্প (একনিষ্ঠ)আমলই নাজাতের জন্য যথেষ্ট হবে। প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ঘোষিত এমনই একটি অল্প বা সহজ আমল হলো মুক্তাকি হওয়া বা আল্লাহকে বেশি বেশি ভয় করা। তিনি এ আমলের ঘোষণা ও নির্দেশ পেয়েছেন কুরআনে। আল্লাহ বলেন- وَأُزْلِفَتِ الْجَنَّةُ لِلْمُتَّقِينَ غَيْرَ بَعِيدٍ - هَذَا مَا تُوعَدُونَ لِكُلِّ أَوَّابٍ حَفِيظٍ - مَنْ خَشِيَ الرَّحْمَن بِالْغَيْبِ وَجَاء بِقَلْبٍ مُّنِيبٍ - ادْخُلُوهَا بِسَلَامٍ ذَلِكَ يَوْمُ الْخُلُودِ - لَهُم مَّا يَشَاؤُونَ فِيهَا وَلَدَيْنَا مَزِيدٌ ‘আর জান্নাতকে উপস্থিত করা হবে মুত্তাকিদের জন্য, (সেখানে) কোনো দূরত্ব থাকবে না। এরই প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছিল প্রত্যেক (আল্লাহ) অভিমুখী, (তাঁর হুকুমের) হিফাজতকারীর জন্য। যারা না দেখে পরম দয়াময়কে ভয় করে এবং (আল্লাহ) অভিমুখী ক্বলবে (অন্তর নিয়ে) উপস্থিত হয়। (সুরা ক্বাফ : আয়াত ৩১-৩৩)

যারা আল্লাহকে ভয় করে। এ ভয় তাদের রাখে পাপমুক্ত। তাদের জন্য জান্নাতকে রাখা হবে খুব কাছাকাছি। এমন কাছাকাছি; যেখান থেকে জান্নাতকে নাগালের মধ্য থেকে দেখা যায়। এটি পরকালের বিচার দিবসে হাশরের ময়দানের চিত্র। তখন জান্নাতের দিকে ইশারা করে বলা হবে, দুনিয়াতে তোমাদেরকে যে জান্নাতের ঘোষণা দেয়া হয়েছিল, এটিই সেই জান্নাত।সুতরাং মুত্তাকি হওয়ার উপায়- উল্লেখত আয়াতে মুত্তাকি হওয়ার ৪টি উপায় তুলে ধরা হয়েছে। যার দুটি প্রকাশ্য আর দুটি গোপনীয়। প্রকাশ্য উপায় দুটি তখনই সফলতা লাভ করবে, যখন গোপনীয় দুটি উপায়ে মানুষ নিজেকে তৈরি করে নেবে।

১. প্রকাশ্য বা বাহ্যিক উপায় তাকওয়ার গুণ লাভে মানুষের দুটি উপায় প্রকাশ্য বা দৃশ্যমান। যা দেখা যায়। অন্যায় বা গোনাহ করলে যেমন দেখা যায় তেমনি মানুষের গোনাহমুক্ত জীবন-যাপনও প্রকাশ পায়।
- আওয়াব বা প্রত্যাবর্তনকারী
আল্লাহর দিকে খুব বেশি ফিরে আসা। গোনাহ হয়ে গেলেই তাওবা করে ফিরে আসা। অত্যাধিক তাওবা-ইসতেগফার এবং তাসবিহ-তাহলিল ও জিকির-আজকার করা। ঘটে যাওয়া গোনাহের কথা স্মরণ করে নির্জনে আল্লাহর দরবারর মিনতি করে ফিরে আসা।হাফিজ বা নিজেকে সংরক্ষণকারী নিজেকে বিশুদ্ধ রাখা। গোনাহমুক্ত রাখা। কোনো মানুষই জন্মের সময় পাপ বো গোনাহ নিয়ে জম্মায়নি কিংবা অপরাধী হয়ে জন্মায়নি। মানুষ যেভাবে জন্ম নিয়েছে ঠিক সেভাবে নিজেকে সংরক্ষণ করা।আবার এ সংরক্ষণ দ্বারা মহান আল্লাহ বিধানকে সংরক্ষণ করার কথাও বলা হয়েছে। তাই নিজেকে সংরক্ষণ করা কিংবা মহান আল্লাহর বিধানকে সংরক্ষণ করার মাধ্যমে দায়িত্ব পালন ও গোনাহমুক্ত জীবন গঠন করাই অন্যতম উদ্দেশ্য।

২. অপ্রকাশ্য বা গোপনীয় উপায় মানুষের প্রকাশ্য বা বাহ্যিক উপায় অবলম্বন করা তখনই সফল হবে যখন অপ্রকাশ্য উপায় দুটি মানুষ যথাযথ পালন করতে পারবে। আর তাহলো-

মান খাশিয়ার রাহমানা বিল গাইবি অর্থাৎ রহমানকে না দেখে ভয় করে অর্থাৎ দয়াময় আল্লাহকে দেখেনি কিন্তু তাকে ভয় করে। আল্লাহ যেমন দয়াময় তেমনি তিনি কাহহার বা পরাক্রমশালী।
যদিও আল্লাহকে ক্ষমতা ও কঠোরতায় ভয় করার কথা। তথাপিও মানুষ পরাক্রমশালী আল্লাহকে এ গুণে ভয় না করে বরং দয়াময় আল্লাহকে ভালোবাসায় হৃদয় দিয়ে ভয় করবে।

৪. আল্লাহমুখী অন্তর নিয়ে উপস্থিত হওয়া দয়াময় আল্লাহকে ভয় করার জন্য কালবে মুনিব তথা আল্লাহমুখী ক্বলব বা অন্তর নিয়ে তার দিকে অগ্রসর হওয়া। একনিষ্ঠ অন্তর নিয়ে আল্লাহর দিকে অগ্রসর না হলে তা তার ভালোবাসা বা নৈকট্য পাওয়া যাবে না।উল্লেখিত ৪টি উপায়ের সমষ্টিতেই তৈরি হয় একটি গুণ তাকওয়া। তাকওয়ার অধিকারী ব্যক্তিই হলেন মুত্তাকি। আর মুত্তাকি ব্যক্তিই মহান আল্লাহকে প্রকাশ্য ও অপ্রকাশ্যে ভালোবাসে।

সুতরাং যখনই কোনো বান্দার মধ্যে ভালোবাসামিশ্রিত ভয় এবং আল্লাহমুখী অন্তরে নিয়ে তার দিকে উপস্থিত হওয়ার প্রবণতা বৃদ্ধি পায়, তখনই সেখানে পাওয়া যাবে প্রকাশ্য উপায় আওয়াব ও হাফিজ আল্লাহর ভয়ের পাশাপাশি কুরআনে নির্দেশিত উপায়ে বেশি বেশি তাওবা-ইসতেগফার করাও জরুরি। আর মুত্তাকি ব্যক্তিই সব সময় তাওবা-ইসতেগফারে নিজেকে নিয়োজিত রাখবে-