Islamic News BD - The Lesson of Peace
চলন্ত বাসে ইশারায় ফরজ নামাজ আদায় করা যাবে?
বুধবার, ১৮ জুন ২০২৫ ১৬:১১ অপরাহ্ন
Islamic News BD - The Lesson of Peace

Islamic News BD - The Lesson of Peace

নামাজ ইসলামের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। আল্লাহ তাআলা পবিত্র কোরআনে ৮২ বার সরাসরি নামাজের কথা বলেছেন। নামাজের গুরুত্ব সম্পর্কে বহু হাদিস বর্ণিত রয়েছে। সুরা বাকারার শুরুতে মুত্তাকিদের প্রধান বৈশিষ্ট্য হিসেবে ইমান, নামাজ আদায় ও জাকাত প্রদানের কথা উল্লেখ করে আল্লাহ তাআলা বলেন, এই সেই কিতাব, যাতে কোন সন্দেহ নেই, মুত্তাকিদের জন্য হেদায়াত। যারা গায়েবের প্রতি ইমান আনে, নামাজ আদায় করে এবং আমি তাদেরকে যে রিজিক দিয়েছি তা থেকে ব্যয় করে। (সুরা বাকারা: ৩, ৪)

প্রতিদিন পাঁচ ওয়াক্তে ১৭ রাকাত নামাজ আদায় করা ফরজ। ইশার নামাজের পর তিন রাকাত বেতর আদায় করা ওয়াজিব। এ নামাজগুলো দাঁড়িয়ে, রুকু-সিজদা করে আদায় করা ফরজ। কোনো গ্রহণযোগ্য ওজর ছাড়া ফরজ বা ওয়াজিব নামাজ বসে বা ইশারায় আদায় করা যায় না।

চলন্ত বাসে যেহেতু দাঁড়িয়ে ও রুকু-সিজদা করে স্বাভাবিকভাবে নামাজ আদায় করা যায় না, তাই ফরজ নামাজ বাসে ওঠার আগে, গন্তব্যে পৌঁছে বা পথিমধ্যে বাস থেকে নেমে স্বাভাবিকভাবে আদায় করা সম্ভব হলে স্বাভাবিকভাবে রুকু-সিজদাসহই আদায় করতে হবে। ওয়াক্তের মধ্যে স্বাভাবিকভাবে নামাজ আদায়ের সুযোগ থাকা সত্ত্বেও বাসের সিটে বসে ইশারায় নামাজ আদায় করলে তা শুদ্ধ হবে না।

আর যদি দূরের যাত্রা হওয়ার কারণে বাসে ওঠার আগে বা গন্তব্যে পৌঁছে ওয়াক্তের মধ্যে নামাজ আদায় করা না যায়, পথিমধ্যে বাস নেমে নামাজ আদায় করাও অসম্ভব, কষ্টকর বা ঝুঁকিপূর্ণ হয়, তাহলে নামাজের ওয়াক্ত হলে বাসের সিটে বসেই ইশারায় নামাজ আদায় করে নেবে এবং সতর্কতামূলক পরবর্তীতে ওই নামাজের কাজা আদায় করে নিতে হবে।

চলন্ত ট্রেনে বসে নামাজ আদায় করা যাবে?

আমাদের দেশের ট্রেনে সাধারণত নামাজ ঘর থাকে। চলন্ত ট্রেনে নামাজ ঘরে দাঁড়িয়ে নামাজ আদায় করা সম্ভব হলে ফরজ নামাজ বসে আদায় করা জায়েজ হবে না। প্রয়োজনে কিছু ধরে দাঁড়ানো যেতে পারে। নামাজে স্বাভাবিকভাবে দাঁড়িয়ে থাকা কষ্টকর হলে কোনো কিছুর ওপর ভর করে বা কিছু ধরে দাঁড়ানো জায়েজ। যদি কিছু ধরেও নামাজে দাঁড়িয়ে থাকা অসম্ভব হয়, তাহলে বসে নামাজ পড়া জায়েজ হবে।চলন্ত ট্রেনে নামাজে দাঁড়ানোর সময় কেবলার দিক নিশ্চিত হয়ে সেদিকে ফিরে দাঁড়াবে। ট্রেন ঘুরে যাওয়ার কারণে কিবলার দিক পবির্তন হয়েছে বুঝতে পারলে নামাজের ভেতরই কেবলার দিকে ঘুরে যাবে। কিবলার দিক পরিবর্তন হয়েছে বোঝার পরও কিবলার দিকে না ঘুরলে নামাজ নষ্ট হয়ে যাবে। ওই নামাজ আবার পড়তে হবে। তবে কেউ যদি শুরুতে কিবলার দিক নিশ্চিত হয়ে কিবলামুখী হয়ে দাঁড়ায় এরপর নামাজের ভেতর কিবলা পরিবর্তন হয়েছে বুঝতে না পারে এবং ওই দিকে ফিরেই নামাজ শেষ করে, তাহলে নামাজ হয়ে যাবে।

নফল ও সুন্নাত নামাজ কোনো ওজর বা অসুবিধা ছাড়াও বসে আদায় করা জায়েজ। চলন্ত ট্রেনেও এ নামাজগুলো বসে আদায় করা যাবে। তবে ওজর ছাড়া বসে নামাজ আদায় করলে দাঁড়িয়ে আদায়কৃত নামাজের অর্ধেক সওয়াব পাওয়া যায়। ইমরান ইবনে হোসাইন (রা.) বলেন, আমি রাসুলকে (সা.) বসে নামাজ আদায় সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন, যদি দাঁড়িয়ে নামাজ আদায় করে, তবে তাই উত্তম। আর বসে নামাজ আদায় করলে দাঁড়িয়ে নামাজ আদায়কারীর অর্ধেক সওয়াব পাওয়া যাবে। (সহিহ বুখারি: ১১১৫)