Islamic News BD - The Lesson of Peace
যেসব জিকিরে শুরু হবে মুমিনের দিন
শনিবার, ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২১ ১৬:৫২ অপরাহ্ন
Islamic News BD - The Lesson of Peace

Islamic News BD - The Lesson of Peace

জিকির বা আল্লাহর স্মরণ কেন্দ্রিক হবে মুমিনের জীবন। সকাল, বিকাল, সন্ধ্যা, ঘুমানোর আগে, পরে কিংবা পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের সঙ্গে সাধ্যমতো সদা-সর্বদা জিহ্বা ও অন্তরকে আল্লাহর স্মরণ তথা জিকিরে আদ্র করে রাখাই মুমিনের কাজ। তবে আল্লাহর স্মরণের জন্য দিনের শুরু তথা সকাল সবচেয়ে উপযুক্ত সময়। কারণ প্রত্যেক মুমিন বান্দাই সারাদিনের সব প্রতিকুলতার মোকাবেলায় জিকিরের মাধ্যমে আধ্যাত্মিক খাদ্য ও শক্তি সংগ্রহ করে থাকে।

দিনের শুরুতে সকালের গুরুত্বপূর্ণ এ সময়টি আবার দুইভাগে বিভক্ত। প্রথমটি হলো- ঘুম থেকে ওঠে ফজর নামাজ পড়া পর্যন্ত। দ্বিতীয় সময়টি হলো- ফজর নামাজের পর থেকে সালাতুদ দোহা বা চাশতের নামাজ পর্যন্ত।

প্রথম সময়ের জিকির

সাধারণত মুমিন বান্দা দিনের প্রথম সময়ে ঘুম থেকে ওঠে নামাজের প্রস্তুতি নেন। নামাজ পর্যন্ত আল্লাহর স্মরণে অনেক দোয়া-ই পড়ে থাকেন। তাহলো-

১. ঘুম থেকে ওঠে

হজরত হুজাইফা ইবনুল ইয়ামান ও আবু যার রাদিয়াল্লাহু আনহুমা বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ঘুম থেকে উঠে বলতেন-

الْحَمْدُ لِلَّهِ الَّذِي أَحْيَانَا بَعْدَ مَا أَمَاتَنَا وَإِلَيْهِ النُّشُورُ উচ্চারণ : আলহামদুলিল্লাহিল্লাজি আহইয়ানা বাদা মা আমাতানা ওয়া ইলাইহিন নুশুর।

অর্থ :সব প্রশংসা আল্লাহর জন্য, যিনি আমাদেরকে জীবিত করেছেন মৃত্যুর (ঘুমের) পরে, আর তাঁর কাছেই আমাদের ফিরে যেতে হবে। (বুখারি, মুসলিম)

২. টয়লেটে প্রবেশ ও বাহিরে

ঘুম থেকে ওঠে প্রাকৃতিক প্রয়োজনে টয়লেটে প্রবেশ এবং বাহির হতেও রয়েছে আল্লাহর কাছে আশ্রয় ও ক্ষমা প্রার্থনার জিকির। হজরত আনাস রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইস্তিঞ্জার জন্য গেলে এ দোয়াটি পড়তেন-

بِسْمِ اللهِ اَللَّهُمَّ إنِّي أعُوْذُ بِكَ مِنَ الْخُبُثِ وَالْخَبَائِثِ উচ্চারণ : বিসমিল্লাহি আল্লাহুম্মা ইন্নি আউজুবিকা মিনাল খুবুসি ওয়াল খাবায়িসি।

অর্থ : আল্লাহর নামে; হে আল্লাহ! আমি আপনার আশ্রয় প্রার্থনা করছি- অপবিত্রতা, অকল্যাণ, খারাপ কর্ম থেকে আর পুরুষ ও নারী শয়তান থেকে। - ইস্তিঞ্জার পরের জিকির

হজরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইস্তিঞ্জা শেষে বেরিয়ে আসলে এই দোয়া পড়তেন-

غُفْرَانَكَ উচ্চারণ : গুফরানাকা।

অর্থ : আপনার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করি। (তিরমিজি)

৩. অজু করতে জিকির

অজুর আগে বিসমিল্লাহ বলা সুন্নাত। তাই বিসমিল্লাহ বা পুরো বিসল্লাহ বলা-

- بسم الله বিসমিল্লাহ

- بِسْمِ اللهِ الرَّحْمَنِ الرَّحِيْم

উচ্চারণ : বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।

অর্থ : পরম করুণাময় দয়াবান আল্লাহর নামে।

৪. অজুর পরের জিকির

অজু করার পর ৩টি মাসনুন জিকির একাধিক হাদিসে ওঠে এসেছে। তাহলো-

হজরত ওমর রাদিয়াল্লাহ আনহু বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, যদি কেউ সুন্দরভাবে এবং পরিপূর্ণভাবে অজু করে এরপর এ জিকির করবে-

أَشْهَدُ أَنَّ لاَ إِلٰهَ إِلاَّ الله (وَحْدَهُ لاَ شَرِيكَ لَهُ) وَأَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدا عَبْدُهُ وَرَسُولُهُ উচ্চারণ : আশহাদু আল্ লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু (ওয়াহদাহু লা শারিকা লাহু) ওয়া আশহাদু আন্না মুহাম্মাদান আবদুহু ওয়া রাসুলুহু।

অর্থ : আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ছাড়া কোনো উপাস্য নেই (তিনি একক, তাঁর কোনো শরিক নেই) এবং আরও সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁর বান্দা (দাস) ও রাসুল (প্ররিত বার্তা বাহক)।

তবে জান্নাতের আটটি দরজাই তাঁর জন্য খুলে দেওয়া হবে; সে যে দরজা দিয়ে ইচ্ছা করবে জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে। (মুসলিম)

তিরমিজির এক বর্ণনায় এ জিকিরটি ওঠে এসেছে-

<اللَّهُمَّ اجْعَلْنِي مِنَ التَوَّابِينَ ، واجْعَلْني مِنَ المُتَطَهِّرِينَ উচ্চারণ :আল্লাহুম্মাঝআলনি মিনাত তাওয়াবিনা ওয়াঝআলনি মিনাল মুতাত্বাহ্হিরিন।

অর্থ : হে আল্লাহ! আপনি আমাকে তাওবাকারীগণের অন্তর্ভূক্ত করুন এবং যারা গুরুত্ব ও পূর্ণতা সহকারে পবিত্রতা অর্জন করেন আমাকে তাঁদেরও অন্তর্ভুক্ত করুন।>

তাহলে তা একটি পত্রে লিখে তার উপর সীলমোহর অঙ্কিত করে রেখে দেওয়া হবে। কেয়ামতের আগে সেই মোহর ভাঙ্গা হবে না। (নাসাঈ, তাবারানি)

৫. আজান শুনে জিকির

মুয়াজ্জিনের আজান শুনে উত্তর দেওয়া জিকির। হাদিসে এসেছে-

&যখন তোমরা মুয়াজ্জিনকে আজান দিতে শুনবে, তখন মুয়াজ্জিন যেরূপ বলে তোমরাও অনুরূপ বলবে। (বুখারি)

মুয়াজ্জিন যখন হাইয়া আলাস সালাহ ও হাইয়া আলাল ফালাহ বলবে; তখণ শ্রোতা লা হাওলা ওয়া লা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ বলবেন। এভাবে যে ব্যক্তি মুয়াযযিনের সঙ্গে সঙ্গে আজানের বাক্যগুলি অন্তর থেকে বলবে, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে। (মুসলিম)