Islamic News BD - The Lesson of Peace
শিরকমিশ্রিত ঈমান গ্রহণযোগ্য নয়
শুক্রবার, ০১ অক্টোবর ২০২১ ১৭:১৮ অপরাহ্ন
Islamic News BD - The Lesson of Peace

Islamic News BD - The Lesson of Peace

পরকালে মুক্তির একমাত্র মাধ্যম ঈমান। ঈমান ছাড়া আমলের কোনো মূল্য নেই। তবে ঈমানটা হতে হবে শিরকমুক্ত। শিরকমিশ্রিত ঈমান আল্লাহর কাছে গ্রহণযোগ্য নয়। ঈমানের কয়েকটি মৌলিক বিষয় রয়েছে। ;আল্লাহর প্রতি ঈমান রাখা সেসবের প্রথম।আর এর প্রথম কথা হলো, তাঁর অস্তিত্ব স্বীকার করা, একমাত্র তাঁকে রব ও সত্য বলে মেনে নেয়া। সৃষ্টি ও ইবাদতের মধ্যে তাঁর সাথে কাউকে শরিক না করা। একমাত্র তিনিই নিরঙ্কুশ ক্ষমতার অধিকারী, সঙ্কটমোচনকারী মনে করবে। আর বিপদাপদে তাকেই মুক্তিদাতা হিসেবে বিশ্বাস করবে। তাঁর বিশেষ হক ও একান্ত বৈশিষ্ট্যগুলোতে কাউকে শরিক করবে না। সাধারণ উপায়-উপকরণের ঊর্ধ্বের বিষয়ে আল্লাহ ছাড়া কারো কাছে সাহায্য প্রার্থনা করবে না। দৃঢ় বিশ্বাস রাখবে যে, জীবন-মৃত্যু, উপকার-অপকার, সুস্থতা ও নিরাপত্তা তাঁরই হাতে। তিনিই তা দান করে থাকেন। রিজিকদাতা একমাত্র তিনিই। গোটা জগতের এক ও অদ্বিতীয় স্রষ্টা তিনিই। শরিয়ত প্রবর্তন ও হালাল-হারাম নির্ধারণ তাঁরই অধিকার। এতে কাউকে শরিক করবে না। না কোনো মতবাদকে, না কোনো নেতা বা দলকে, না তা কোনো রাষ্ট্র বা সম্প্রদায়কে। মোট কথা, তাওহিদকে পূর্ণরূপে ধারণ করা এবং শিরক থেকে পুরোপুরি বেঁচে থাকাই ঈমানের প্রধান বুনিয়াদ। আল্লাহ তায়ালার কাছে মুশরিকের ঈমানের কোনো মূল্য নেই। কেউ শিরক করে তাওবাহীন অবস্থাতে মারা গেলে তাকে তিনি কখনো মাফ করবেন না।


ইরশাদ হচ্ছে, তাদের বেশির ভাগই আল্লাহকে বিশ্বাস করে; কিন্তু তাঁর সাথে শরিক করে। তবে কি তারা আল্লাহর সর্বগ্রাসী শাস্তি থেকে অথবা তাদের অজান্তে কিয়ামতের আকস্মিক উপস্থিতি থেকে নিরাপদ? বলুন! এটাই আমার পথ : আল্লাহর প্রতি মানুষকে আহ্বান করি স্বজ্ঞানে আমি এবং আমার অনুসারীরাও। আল্লাহ মহিমান্বিত! আর যারা আল্লাহর সাথে শরিক করে, আমি তাদের অন্তর্ভুক্ত নই (সূরা ইউসুফ : ১০৬-১০৮)। সবসময় আল্লাহ তায়ালার দাবি তো এটাই যে, আল্লাহর প্রতি ঈমান যেন খাঁটি তাওহিদের সাথে হয় এবং সব ধরনের শিরকের মিশ্রণ থেকে পবিত্র হয়। ইরশাদ হচ্ছে, ;বলুন! আমি তো আদিষ্ট হয়েছি, আল্লাহর আনুগত্যে একনিষ্ঠ হয়ে তাঁর ইবাদত করতে; আরো আদিষ্ট হয়েছি, আমি যেন আত্মসমর্পণকারীদের অগ্রগামী হই (সূরা জুমার : ১১-১২)। আল্লাহর সাথে কাউকে শরিক করা হারাম। এতে ঈমান নষ্ট হয়ে যায় এবং মানুষ কাফির ও মুশরিকে পরিণত হয়।


পাথর বা মূর্তিকে শরিক করুক, কিংবা জিন বা শয়তান শরিক করুক; অথবা ফেরেশতাদের করুক কিংবা কোনো নবী ও রাসূল শরিক করুক, যাদেরকে আল্লাহ তায়ালা পাঠিয়েছেন তাওহিদ গ্রহণ ও শিরক বর্জনের পয়গাম দিয়ে। কিংবা এমন কোনো আলেম ও ওলি শরিক করুক, যিনি জীবনভর মানুষকে তাওহিদের দাওয়াত দিয়েছেন কিংবা এমন কোনো নেতা ও গুরুকে শরিক করুক, যে কথা ও কাজ দ্বারা মানুষকে তাওহিদ থেকে নিবৃত্ত রেখেছে। সর্বাবস্থায় শিরক শিরকই বটে। আর এতে লিপ্ত ব্যক্তি খোদাদ্রোহী কাফির ও মুশরিক।
ইরশাদ হচ্ছে,তারা আল্লাহ ছাড়া তাদের পণ্ডিত ও সংসারবিরাগীদেরকে তাদের পালনকর্তারূপে গ্রহণ করেছে এবং মরিয়ম তনয় ঈসাকেও। অথচ তারা এক প্রভুর ইবাদতের জন্যই আদিষ্ট হয়েছিল। তিনি ছাড়া কোনো মাবুদ নেই, তারা যাকে শরিক করে তা থেকে তিনি কত পবিত্র (সূরা তাওবা-৩১)!


পবিত্র কুরআনে সব প্রকারের শিরককে প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে এবং সব শ্রেণীর মুশরিককে জাহান্নামের হুঁশিয়ারি শোনানো হয়েছে, ইরশাদ হচ্ছে হে আদম সন্তান! আমি কি তোমাদের নির্দেশ দেইনি যে, তোমরা শয়তানের দাসত্ব করো না; কারণ সে তোমাদের প্রকাশ্য শত্রু। আর তোমরা আমারই ইবাদত করো, এটাই সরলপথ (সূরা ইয়াসিন : ৬০-৬১)।
আল্লাহ আমাদের শিরকমুক্ত ঈমান দান করুন!