Islamic News BD - The Lesson of Peace
মুহাম্মাদ (সা.) বিশ্ববাসীর জন্য রহমত
মঙ্গলবার, ২৮ ডিসেম্বর ২০২১ ১৬:১৮ অপরাহ্ন
Islamic News BD - The Lesson of Peace

Islamic News BD - The Lesson of Peace

নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের শুভাগমন ছিল বিশ্ববাসীর জন্য আনন্দের। দেড় হাজার বছর আগে অজ্ঞতার অন্ধকার দূর করতেই তাঁর আগমন ঘটেছির। বাস্তবে হয়েছিলও তাই। তিনি একত্ববাদের সুমহান বাণী নিয়ে আরবের মুরুর বুকে মা আমিনার কোল আলোকিত করে সমগ্র বিশ্বমানবতার জন্য রহমত নিয়ে জন্ম নিয়েছিলেন। হজরত মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। তিনিই রাহমাতুল্লিল আলামিন।

অশান্তি আর অজ্ঞতায় যখন পুরো বিশ্ব অন্ধকারে হাবুডুবু খাচ্ছিল তখন তিনি অমানিশার এ অন্ধকার দূর করতে শান্তির জীবন ব্যবস্থা ইসলাম নিয়ে দুনিয়ায় আগমন করেন। মানুষের ঘরে ঘরে ইসলামের দাওয়াত পৌছে দেন। তাঁর আগমনেই সমগ্র বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠিত হয়। তাইতো তিনি সারা বিশ্বের সব মুমিনের কাছে রাহমাতুল্লিল আলামিন।

শুধু মুমিন মুসলমানের জন্য তিনি রাহমাতুল্লিল আলামিন নাকি বিশ্বজাহানের সব মানুষের জন্য রাহমাতুল্লিল আলামিন? হ্যাঁ, তিনি বিশ্বজাহানের সব মানুষের জন্যই রহমত নিয়ে এসেছেন। তাঁর জীবন ইতিহাসই এর সাক্ষী। তিনি ধর্ম বর্ণ গোত্র জাতিগোষ্ঠী নির্বিচারে সবার প্রতি সমতা বিধান করেছিলেন। সবাইকে দিয়েছিলেন ধর্মীয় স্বাধীনতা। কারো প্রতি তিনি জুলুম করেননি। সবার অধিকারের প্রতি তিনি ছিলেন সমাজ সজাগ। তিনি সবার জন্য অনুকরণীয় আদর্শ।

তিনি মানুষের দুঃখ-কষ্ট, অভাব-যাতনা সব হৃদয় দিয়ে উপলব্দি করতেন। ইসলামের সুমহান শিক্ষাও তাই। বাস্তব জবীনে নবি আরাবি নিজেই ইয়াতিম ছিলেন। তাঁর জন্মের আগেই তিনি বাবাকে হারান। মাতৃস্নেহ ও দাদার আদরও বেশি দিন পাননি তিনি। অল্প বয়সে চাচার পরিবারে তার ঠাঁই হয। তিনি চাচা আবু তালিবের নিবিড় যন্তে বেড়ে ওঠেন। আল্লাহ তাআলা তাকে ইয়াতিম হিসেবেই পেয়েছিলেন। তিনিই তাঁকে সঠিক পথের সন্ধান দেন। মানুষের জন্য তাঁর অন্তরে ছিল অফুরন্ত ভালোবাসা। সে কথাই মহান আল্লাহ সুরা দোহায় তুলে ধরেছিলেন এভাবে-
أَلَمْ يَجِدْكَ يَتِيمًا فَآوَى তিনি কি আপনাকে এতীমরূপে পাননি? এরপর তিনি আশ্রয় দিয়েছেন। (সুরা দোহা : আয়াত ৬)
وَوَجَدَكَ ضَالًّا فَهَدَى তিনি আপনাকে পেয়েছেন পথহারা, এরপর পথপ্রদর্শন করেছেন। (সুরা দোহা : আয়াত ৭)
وَوَجَدَكَ عَائِلًا فَأَغْنَى তিনি আপনাকে পেয়েছেন নিঃস্ব, এরপর অভাবমুক্ত করেছেন। (সুরা দোহা : আয়াত ৮)
فَأَمَّا الْيَتِيمَ فَلَا تَقْهَرْ সুতরাং আপনি ইয়াতিমের প্রতি কঠোর হবেন না; (সুরা দোহা : আয়াত ৯)
وَأَمَّا السَّائِلَ فَلَا تَنْهَرْ সওয়ালকারীকে (জানতে চাওয়া লোকদের) ধমক দেবেন না। (সুরা দোহা : আয়াত ১০)
>وَأَمَّا بِنِعْمَةِ رَبِّكَ فَحَدِّثْ আর আপনার পালনকর্তার নেয়ামতের কথা প্রকাশ করুন। (সুরা দোহা : আয়াত ১১)

চাচা আবু তালিবের কাছে থাকা অবস্থায় তিনি যৌবনে পদার্পন করেন। চাচার সঙ্গে ব্যবসা-বাণিজ্য শুরু করেন। তাঁর বিশ্বস্ততা ও আমানতদারিতার কারণেই তিনি মক্কার ধনাঢ্য ও উত্তম চরিত্রের অধিকারী খাদিজার ব্যবসা-বাণিজ্য দেখাশোনার দায়িত্ব পান। ব্যবসা-বাণিজ্যের সম্প্রসারণ ও চারিত্রিক মাধুর্যে মক্কার সম্ভ্রান্ত ব্যবসায়ী নারী খাদিজা তাকে বিবাহের প্রস্তাব দেন। তখন তার বয়স ছিল ২৫ বছর। তিনি হজরত খাদিজা রাদিয়াল্লাহু আনহাকে বিয়ে করেন।

৪০ বছর বয়সে তিনি পেয়ে যান মহা সত্যের সন্ধান। তার প্রতি নাজিল হয় আসমানি গ্রন্থ কোরআন। নবুয়তের মহান দায়িত্ব পেয়ে তিনি পথহারা মানুষকে সত্যের পথে আহ্বানের সংগ্রামে জড়িয়ে পড়েন। তার এ সংগ্রামে অংশগ্রহণ করে স্ত্রী হজরত খাদিজা রাদিয়াল্লাহু আনহা। এ সংগ্রামে তাঁর স্ত্রী দান করেন তার সব সম্পদ।