ইন্টারনেট ব্যবহারকারী প্রায় প্রতিটি মানুষই এখন কম-বেশি ফেসবুক, টুইটারসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগের সাইট ব্যবহার করেন। কেবল পাশ্চাত্য বিশ্বই নয়, আমাদের দেশেও সাম্প্রতিক সময়ে সোশ্যাল মিডিয়া বিশেষত ফেসবুকের বিস্তার ব্যাপক। ফেসবুক এখন পৃথিবীর অন্যতম আলোচিত মিডিয়া। এক নতুন শক্তির নাম ফেসবুক। ফেসবুক নিয়ে আলোচনা আছে, আছে সমালোচনাও। এর নেতিবাচক ব্যবহার যেমন বাড়ছে, তেমনি বাড়ছে ইতিবাচক ব্যবহারও। একদিকে এর মাধ্যমে দুষ্কৃতকারীরা মিথ্যা ছড়িয়ে দিচ্ছে। অশ্লীলতা ও নগ্নতাকে সহনীয় করে তুলছে। নাস্তিকতা ও ধর্মে অবিশ্বাস তৈরি করছে। অন্যদিকে এর মাধ্যমে হাজারও মুসলিম ভাইবোন নিজেদের কল্যাণকর চিন্তা ও জনহিতকর আইডিয়া অন্যদের মাঝে ছড়িয়ে দিচ্ছেন। ফেসবুকে পেজ ও গ্রুপ খুলে বিভিন্ন কমিউনিটির লোকেরা এক হয়ে এর মাধ্যমে হাজার হাজার ভালো কাজ করা করছেন। জরুরী প্রয়োজনে রক্ত দেওয়া, ক্যান্সার আক্রান্ত আল্লাহর বান্দার পাশে দাঁড়ানো কিংবা বন্যা, শীতসহ নানা প্রাকৃতিক দুর্যোগে অসহায় মানবতার সেবায় এগিয়ে যাওয়া- সবই চলছে ফেসবুককে কেন্দ্র করে।
চাইলেই আপনি একে কাজে লাগিয়ে বিশুদ্ধ বিশ্বাস ও শুভ চিন্তার প্রসার ঘটাতে পারেন। তাই সাম্প্রতিক দিনগুলোয় সমাজহিতৈষী, ভালো মনের মানুষ ও পুণ্যবান মুত্তাকী লোকেরাও লুফে নিচ্ছেন ফেসবুকের সীমানাহীন আঙিনা। বিশ্বের খ্যাতিমান যুগসচেতন অধিকাংশ আলেমই যুক্ত হচ্ছেন ফেসবুকে। বিভিন্ন মাধ্যমে কাজ করা সমকালীন মুসলিম বিশ্বের প্রায় সব বিখ্যাত ইসলাম প্রচারকই আছেন এ উন্মুক্ত প্রাঙ্গনে। আছেন ড. শায়খ মুহাম্মদ আরিফী, ড. ইউসুফ আল কারযাবী, ড. আয়েজ আল কারনীসহ আরব বিশ্বের বিখ্যাত সব ইসলাম প্রচারক, ভারতের স্বনামখ্যাত মুফতী মাওলানা খালেদ সাইফুল্লাহ রহমানী, পাকিস্তানের খ্যাতিমান ইসলাম প্রচারক আলেম ডা. মাওলানা তারেক জামিলসহ প্রাচ্য-পাশ্চাত্যের সবাই। সবার কাছেই এখন ফেসবুক তাদের দাওয়াতী কার্যক্রম তুলে ধরার এক সহজ অনায়াস মাধ্যম।
আরববিশ্বের প্রখ্যাত আলেম, গবেষক, সুবক্তা, জনপ্রিয় লেখক ড. আয়েজ আল কারনীর অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ রয়েছে। ফেসবুক কর্তৃপক্ষ থেকে ভেরিফাইড তার এ পেজের এ পর্যন্ত লাইক সংখ্যা ৫৪ লাখ ৩৯ হাজার ৮৯। সৌদি আরবের আরেক প্রখ্যাত ইসলাম প্রচারক ও খ্যাতিমান কুরআন তিলাওয়াতকারী ড. মুহাম্মদ আল আরিফীর ফেসবুক পেজে লাইকের সংখ্যা আরও অনেক বেশি। তার অফিসিয়াল পেজটিকে লাইক করেছেন ১৫,৪৪৪,১৯০ জন। তার পেজটিও ফেসবুক কর্তৃপক্ষ কর্তৃক ভেরিফাইড। আধুনিক মিডিয়ায় তুলনামূলক ধর্মতত্ত্বের আলোচনার মাধ্যমে সারা বিশ্বে খ্যাতি লাভ করা ভারতের ডা. জাকির নায়েকের ভেরিফাইড অফিসিয়াল পেজ লাইক করেছেন ৬,১৩১,০৮০ জন। আরব আমিরাতের বিশ্বখ্যাত ইসলামী সঙ্গীতশিল্পী আহমেদ বুখাতিরের ভেরিফাইড অফিসিয়াল ফ্যান পেজের লাইককারীর সংখ্যা ১,৭৬৪,৮৫০ জন।
তারা প্রতিদিন তাদের স্ট্যাটাসে বিভিন্ন আমল ও দুআ থেকে নিয়ে সৎ কাজের নানা দিক তুলে ধরেন। আরও তুলে ধরেন প্রাণীর ছবিহীন দুআ ও আমলের দারুণ দারুণ সব পোস্টার। সকাল-সন্ধ্যার যিকর, বিভিন্ন সময় ও উপলক্ষ সংক্রান্ত কুরআন-হাদীসের নির্দেশনা তুলে ধরেন তারা এসব পেজে।
আসলে ফেসবুক বা সামাজিক যোগাযোগকে আপনি ভালো কাজে লাগাবেন না কেন, যুগের যে কোনো কার্যকর উপায়কে ইসলাম ও মানবতার কল্যাণে কাজে লাগানোই তো ইসলামের শিক্ষা। আল্লাহ রাব্বুল ‘আলামীন কি বলছেন দেখুন :
তুমি তোমার রবের পথে প্রজ্ঞা (সম্ভব সব মাধ্যম-উপায় কাজে লাগিয়ে) ও সুন্দর উপদেশের মাধ্যমে আহ্বান কর এবং সুন্দরতম পন্থায় তাদের সঙ্গে বিতর্ক কর। নিশ্চয় একমাত্র তোমার রবই জানেন কে তার পথ থেকে ভ্রষ্ট হয়েছে এবং হিদায়াতপ্রাপ্তদের তিনি খুব ভালো করেই জানেন। {সূরা আন-নাহল, আয়াত : ১২৫}
তবে ফেসবুকের মতো একটি উন্মুক্ত মাধ্যমকে কাজে লাগিয়ে আখিরাতের কল্যাণ নিশ্চিত করতে হলে আমাদের কিছু বিষয় মাথায় রাখতে হবে। অন্যথায় এখানে গিয়ে নিজের ঈমান, আমল ও আখলাক ধ্বংস হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
লজ্জা ও নৈতিকতাবোধ ঠিক রাখা :
এটা জানা কথা, পরিমিত লজ্জা মানব চরিত্রকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যায়। লজ্জা নারীর বিশেষ ভূষণ। লাজ খোয়ানো মানুষ হেন অপরাধ নেই করতে পারে না। তাই ফেসবুকে যেন লজ্জা বিসর্জন হয়ে না যায়। ফেসবুকে আপনার বিচরণ, শেয়ার, লাইক, কমেন্ট এবং চ্যাট যেন লজ্জার সীমা অতিক্রম না করে।
আজকাল ইন্টারনেট জগত এবং আমাদের চারপাশের সমাজে লজ্জার অভাব বড় প্রকট। অথচ হাদীসে বর্ণিত লজ্জার একটি ঘটনা পড়ুন: আবদুল্লাহ ইবন উমর রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত,
একদা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জনৈক আনসারী ব্যক্তির কাছ দিয়ে গমন করছিলেন; ওই ব্যক্তি তার ভাইকে লজ্জা-শরমের ব্যাপারে নছীহত ও ভর্ৎসনা করিছিল (যে, তুমি এত লজ্জা কর কেন?) রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তাকে এ বিষয়ে ছেড়ে দাও; (লজ্জা-শরম ভালো জিনিস) যেহেতু লজ্জা-শরম ঈমানের একটি শাখা। [বুখারী : ২৪]
লজ্জা যে ঈমানে শাখা তা আরও দ্ব্যর্থহীন ভাষায় বলা হয়েছে অন্য হাদীসে। যেমন : আবূ হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
ঈমানের সত্তরের কিছু বেশি অথবা (বর্ণনাকারীর সন্দেহ) ষাটের কিছু বেশি শাখা-প্রশাখা আছে। তন্মধ্যে নিম্নতম হলো পথ থেকে কষ্টদায়ক বস্তু সরিয়ে ফেলা এবং সর্বোত্তম হচ্ছে লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ বলা। আর লজ্জাও ঈমানের একটি শাখা। [ইবন মাজাহ : ৬৭]
বিশ্বস্তদের বন্ধু বানান :
বিশ্বস্ততা ও সত্যনিষ্ঠতা হলো সম্পর্কের ক্ষেত্রে নিরাপত্তার চাবিকাঠি। সত্যবাদী ও বিশ্বস্ত বন্ধুরা আপনাকে আঘাত দেবে না। পক্ষান্তরে মিথ্যাবাদী ও অবিশ্বস্ত বন্ধু আপনার জন্য খামোখাই অকল্যাণ ডেকে আনবে। সুতরাং একেবারে অচেনা ছদ্মনামি কোনো আইডিকে আপনি বন্ধু বানাবেন না।
ভালো বন্ধু খুঁজে নিন :
যার ফেসবুক আপডেটগুলো আপনাকে উপকৃত করে, চেতনাকে শানিত কিংবা তথ্য বা জ্ঞানের ভাণ্ডার সমৃদ্ধ করছে অথবা আপনাকে নতুন নতুন অভিজ্ঞতায় আলোকিত করছে- তিনি ওই ব্যক্তি থেকে উত্তম যে তার নিত্যনতুন আপডেটে শুধু প্রেম-ভালোবাসা কিংবা উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার কথাই শেয়ার করে। অতএব আপনি প্রথম শ্রেণীর বন্ধু তালিকাতেই সন্তুষ্ট থাকুন। কিয়ামতের দিন অসৎ সঙ্গীর জন্য আফসোস করতে হবে। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন,
হায় আমার দুর্ভোগ, আমি যদি অমুককে বন্ধুরূপে গ্রহণ না করতাম। অবশ্যই সে তো আমাকে উপদেশবাণী থেকে বিভ্রান্ত করেছিল, আমার কাছে তা আসার পর। আর শয়তান তো মানুষের জন্য চরম প্রতারক। {সূরা আল-ফুরকান, আয়াত: ২৭-২৮}
সৎ সঙ্গ ও সঙ্গী বিষয়ে আমরা যা শুনি ও পাঠ্যে পড়ি, ফেসবুকেও বন্ধুদের বেলায় সে কথা প্রযোজ্য। আমাদের নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একদিকে যেমন সৎ সঙ্গী গ্রহণে উৎসাহিত করেছেন, অন্যদিকে তেমন অসৎ সঙ্গী থেকে দূরে থাকতে অতি তাকিদ দিয়েছেন। এ বিষয়ে একটি চমৎকার হাদীস বর্ণিত হয়েছে আবূ মূসা আশআরী রাদিয়াল্লাহু আনহু কর্তৃক। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
সৎ ও অসৎ বন্ধুর উদাহরণ আতর বিক্রেতা ও কামারের ন্যায়। আতর বিক্রেতা হয়তো তোমাকে একটু আতর লাগিয়ে দেবে, অথবা তুমি তার কাছ থেকে আতর ক্রয় করবে, অথবা তুমি তার কাছে আতরের ঘ্রাণ পাবে। আর কামার হয়তো তোমার দেহ বা কাপড় পুড়িয়ে দেবে নয়তো তার কাছ থেকে খারাপ গন্ধ পাবে। [বুখারী : ২১০১; মুসলিম : ২৬২৮]
তালিকা থেকে বিদায় করুন :
প্রিয় বোন, অফলাইনের মতো অনলাইনেও আপনার সম্পর্কের পরিধি নিরাপদ রাখা চাই। ফেসবুকে বন্ধু তালিকায় মেয়েদেরই খুঁজে খুঁজে অ্যাড করুন। একান্ত প্রয়োজনে কোনো ছেলেকে অ্যাড করলেও বৈধ প্রয়োজনসীমা যেন অতিক্রম না করে। ফেসবুকের বাইরে যার সঙ্গে আপনার সম্পর্ক বা ঘনিষ্ঠতা অনুমোদিত নয়, ফেসবুকেও তার সঙ্গে সম্পর্কের সীমানা সেটাই।
অর্থহীন সময় অপচয় নয় :
প্রত্যেকের নিজস্ব লক্ষ্য ও মনোযোগ রয়েছে। আপনার মনোযোগ ও রুচিকে সবসময় উন্নত করুন। ফেসবুকে রুচিবোধসম্পন্ন এবং সুন্দর দৃষ্টিভঙ্গির লোকদের ছেঁকে বের করুন। এমন ব্যক্তির সঙ্গ আপনাকে কোনো উপকারই দিতে পারবে না যে শুধু গেমস বা খেল-তামাশা নিয়ে ব্যস্ত থাকে। যে গানের সিলেবল বা রুচিহীন ছবি পোস্ট-শেয়ারে সীমিত থাকে। যে বা যারা অন্যদের নিয়ে ঠাট্টা-মশকরা বা জরুরী বিষয়ে খেল-তামাশা করা ছাড়া কিছুই জানে না। কেয়ামতের দিন আপনাকে ফেসবুকে দেয়া অর্থহীন সময় বিষয়েও জবাবদিহি করতে হবে।
লাইক শেয়ার ভেবে-চিন্তে :
কোনো বিষয়ে লাইক দিলে তা আপনার দিকে পথ দেখাবে। লাইক পাওয়া ব্যক্তিকে আপনার প্রতি আগ্রহী করবে। অতএব আপনি কী বলছেন, কী পড়ছেন এবং কোনটাতে লাইক দিচ্ছেন তা জেনে-বুঝেই দিন। ফেসবুকে কতই না পেজ ওপেন করা হয়েছে খারাপ ও কুৎসিত, যা ধর্ম ও চরিত্রবিরোধী। আর কত জনকেই দেখা যায় নির্বুদ্ধিতাবশত এসব পেজকে লাইক দেন। অথচ তারা খেয়াল করেন না, এই লাইক দেয়াটা ওই পাতা উন্মোচনকারীকে এসব গালমন্দ ও ন্যক্কারজনক কথাবার্তায় আরও উৎসাহিত করবে। তার লাইক দেয়ার মাধ্যমে বিষয়টি আরও প্রচার পাবে। আল্লাহ বলেন,
পাপ ও সীমালঙ্ঘনের ব্যাপারে একে অন্যের সহায়তা করো না। আল্লাহকে ভয় কর। নিশ্চয় আল্লাহ কঠোর শাস্তিদাতা। {সূরা আল-মায়িদাহ্, আয়াত : ২}
ভালো জিনিস শেয়ার করুন :
অন্যদের সঙ্গে গিভ অ্যান্ড টেক বা দাও এবং নাও নীতি পরিহার করুন। আপনি যদি এ নীতির ওপর চলেন তাহলে অচিরেই আপনি এমন স্বার্থপর ব্যক্তি হিসেবে পরিচিতি পাবেন যে কি-না সবকিছুতেই বিনিময় প্রত্যাশা করে- এমনকি অনুগ্রহেরও। বিনিময় বা বদলার জন্য অপেক্ষায় না থেকে সৌজন্যবোধের পরিচয় দিন। শেয়ারযোগ্য মনে করলে সেটি পোস্টকারীর সঙ্গে পরিচয় বা দীর্ঘ সম্পর্ক আছে কি-না তার প্রতি খেয়াল না করে অবশ্যই শেয়ার করুন। ভালো কাজের প্রচার ও উৎসাহ প্রদান- সবই পুণ্য বয়ে আনে। আল্লাহ বলেন,
সৎকর্ম ও আল্লাহভীতিতে একে অন্যের সাহায্য করো। (প্রাগুক্ত)।
ফেসবুক ওয়াল যেন আমলনামা :
আপনার ফেসবুক ওয়ালে শুধু তা-ই রাখবেন যা সুন্দর ও কল্যাণকর। আপনি হুশিয়ার থাকবেন নিষিদ্ধ বিষয় থেকে। কারণ তা এক ধরনের গোনাহে জারিয়া বা চলমান পাপ। ফেসবুক ওয়াল হলো আপনার আমলনামা। তারিখ অনুযায়ী পেছনে গেলেই আপনার কর্মের ফিরিস্তি হাজির করবে। আল্লাহ বলেন,
অবশ্যই তোমাদের ওপর তত্ত্বাবধায়ক নিযুক্ত আছে। সম্মানিত আমল লেখকরা। তারা জানে যা তোমরা করো। [সূরা আল-ইনফিতার, আয়াত : ১০-১২]
ফলবতী গাছ হোন :
আপনি ফলবতী গাছ হোন, যার ছায়া অন্যদের অজ্ঞতার তাপ থেকে রক্ষা করে। যার ফল অবসরের ক্ষুধা মেটায়। আপনার বন্ধুরা তথ্য দেয়ার পর তাদের জন্য উপকারী বিষয় উপস্থাপন করুন। তাদের কষ্ট বেদনায় নিজের কমিউনিটি নিয়ে পাশে দাঁড়ান। অন্যের উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায় সান্ত্বনা ও সাহস দিন। একে অন্যের সঙ্গে আপনার লেনদেনে ভারসাম্য রক্ষা করুন। পরের জন্য বোঝা হয়ে দাঁড়াবেন না। মানুষের ব্যক্তিগত বিষয়ে নাক গলাবেন না। অন্যের সমালোচনা করবেন না। আল্লাহর বাণীটি সব সময় মনে রাখুন। রাব্বুল আলামীন বলেন,
হে মুমিনগণ, তোমরা অধিক অনুমান থেকে দূরে থাক। নিশ্চয় কোনো কোনো অনুমান তো পাপ। আর তোমরা গোপন বিষয় অনুসন্ধান করো না এবং একে অপরের গীবত করো না। তোমাদের মধ্যে কি কেউ তার মৃত ভাইয়ের গোশত খেতে পছন্দ করবে? তোমরা তো তা অপছন্দই করে থাক। আর তোমরা আল্লাহকে ভয় কর। নিশ্চয় আল্লাহ অধিক তাওবা কবূলকারী, অসীম দয়ালু। {সূরা আল-হুজুরাত, আয়াত : ১২}
আপনার ফেসবুকের পাতাটিকে বানান ইসলামের ও শান্তির এবং সৌন্দর্য ও ভালোবাসার। এমন পাতা যা আপনার নাম ও কীর্তিতে সদা সর্বদা আলোচিত ও স্পন্দিত হতে থাকবে। সর্বোপরি মনে রাখবেন, আপনার প্রতিটি কর্মকাণ্ড পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। আর আমাদের সবাইকে আল্লাহর কাছে প্রতিটি সময়ের হিসাব দিতে হবে। দুনিয়ায় যখন যা করেছি, কিয়ামতের দিন এর সব কিছুর রেকর্ডই আল্লাহ দেখিয়ে দেবেন। কুরআনুল কারীমে দৃষ্টি দিয়ে দেখুন :
সেদিন মানুষ বিক্ষিপ্তভাবে বের হয়ে আসবে যাতে দেখানো যায় তাদেরকে তাদের নিজদের কৃতকর্ম। অতএব, কেউ অণু পরিমাণ ভালকাজ করলে তা সে দেখবে, আর কেউ অণু পরিমাণ খারাপ কাজ করলে তাও সে দেখবে। {সূরা সূরা যিলযাল, আয়াত : ৬-৮}