Islamic News BD - The Lesson of Peace
মৃত্যুর সময়ের যেসব লক্ষণ মুমিনের জন্য সুসংবাদ
বুধবার, ২৬ জানুয়ারী ২০২২ ১৬:৩০ অপরাহ্ন
Islamic News BD - The Lesson of Peace

Islamic News BD - The Lesson of Peace

সব প্রাণীকেই মৃত্যুর স্বাদ নিতে হবে। কেয়ামতের দিন তাদের প্রতিদান পূর্ণমাত্রায় দেওয়া হবে। সুতরাং যাকে জাহান্নাম থেকে দূরে রাখা হবে এবং জান্নাতে প্রবেশ করানো হবে; তারাই সফল। আর দুনিয়ার জীবন ধোঁকা ছাড়া কিছুই নয়। (সুরা আল-ইমরান : আয়াত ১৮৫)

আল্লাহ তাআলা সফল ব্যক্তিকে জান্নাত দান করবেন। জাহান্নাম থেকে মুক্তি দেবেন। কিন্তু দুনিয়ার এ ধোঁকার জায়গায় কারা সফল? এমন কিছু লক্ষণ আছে যা মৃত্যুর মুহূর্তের অনেকেরই পরিলক্ষিত হয়। নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লা সে বিষয়গুলো সুস্পষ্ট করে তুলে ধরেছেন। তাহলো-

১. কালেমা পড়া মুত্যুর মুহূর্তের শেষ কথা হবে কালেমা। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, যার শেষ কথা হবে লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ সে জান্নাতে প্রবেশ করবে।

২. বিন্দু বিন্দু ঘাম হওয়া মৃত্যুর সময় কপালে বিন্দু বিন্দু ঘাম বের হওয়া। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, মুমিনের মৃত্যুতে কপালে ঘাম বের হয়। ৩. জুমার রাত-দিন মৃত্যু হওয়া বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকে জুমার দিন সূর্যাস্তের আগে মৃত্যু হওয়া। যে মুসলিম ব্যক্তি জুমার দিন বা রাতে মৃত্যুবরণ করে, আল্লাহ তাআলা তাঁকে কবরে বিপদ থেকে হেফাজত করেন।

৪. শহিদ হওয়া ইসলামের জন্য জীবন দেওয়া। প্রকৃতপক্ষে শাহাদাতের নিয়তে মৃত্যুবরণ করা। যারা ইসলামের জন্য শহিদ হয়েছেন কোরআনে তাদেরকে মৃত বলতে নিষেধ করা হয়েছে এবং বলা হয়েছে, কবরে তারা রিজিকপ্রাপ্ত হয়।
আল্লাহর পথে যুদ্ধে বিজয়ী গাজীর মৃত্যু।
প্লেগ বা মহামারিতে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু।
পেটের অসুখে আক্রান্ত ব্যক্তির মৃত্যু।
পানিতে ডুবে মৃত্যু।
প্রাচীর বা পাহাড় ধ্বংসস্তুপের নিচে পড়ে মৃত্যু।
নারীদের সন্তান প্রসবকালীন সময়ের মৃত্যু।
অগ্নিদগ্ধ হয়ে মৃত্যু।
পার্শ্বদেশের ব্যথায় মৃত্যু।
যক্ষ্মা ও দুরারোগ্য ব্যাধিতে মৃত্যু।
সম্পদ জবর দখল থেকে রক্ষা করতে গিয়ে মৃত্যু।
ইসলামী জীবন ব্যবস্থা বাস্তবায়ন করতে গিয়ে মৃত্যু।
নিজের জীবন বাঁচাতে গিয়ে মৃত্যুও উত্তম মৃত্যুর লক্ষণ।
উল্লেখিত সব অবস্থার মৃত্যুকে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম শহিদি মৃত্যু হিসেবে উল্লেখ করেছেন।

৫. সীমান্ত পাহারায় মৃত্যু দেশের সীমান্ত পাহারার কাজে নিয়োজিত ব্যক্তির মৃত্যুও উত্তম। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, একদিন বা একরাত সীমান্ত পাহারা দেওয়ার মর্যাদা হলো- এক মাস রোজা রাখা এবং এক মাস দাঁড়িয়ে ইবাদাত করা থেকেও উত্তম।

৬. নেক কাজের উপর মৃত্যু নেক আমল করার কালীন সময়ে মৃত্যুবরণ করা উত্তম লক্ষণ। তা হতে পারে মানুষের যে কোনো ভালো কাজ। অর্থাৎ মৃত্যুর আগ মূহূর্তে কালেমার তেলাওয়াত, রোজা পালন, দান-সাদকা করা, ন্যায় কথা বলা, ইবাদত-বন্দেগিতে নিয়োজিত থাকা ইত্যাদি।

৭. অত্যাচারী কর্তৃক হত্যা অন্যায়ভাবে কিংবা মিথ্যা দোষী সাব্যস্ত করে কিংবা জোরপূর্বক কাউকে অত্যাচার নির্যাতনে হত্যা করা হলে; সে মৃত্যুও উত্তম মৃত্যুর লক্ষণ। এমন মৃত্যুর উদাহরণ হলো- হজরত হামজা ইবনে আবদুল মুত্তালিব রাদিয়াল্লাহু আনহু মৃত্যু। তাঁকে মক্কার অত্যাচারী নেতারা যুদ্ধের ময়দানে হত্যা করেছিল। হত্যার পরও তার ওপর নির্যাতন করেছিল। এটাও শহিদি মৃত্যু।

সুতরাং মৃত্যুর আগে এসব লক্ষণ মানুষের জন্য উত্তম ও কল্যাণের। এ সব মৃত্যুতে বান্দার জন্য রয়েছে পরকালীন জীবনে চূড়ান্ত সফলতা।

আল্লাহ তাআলা তাঁর বান্দাকে উত্তম মৃত্যুদান করুন। কল্যানকর মৃত্যুবরণ করার তাওফিক দান করুন। আমিন।