Islamic News BD - The Lesson of Peace
কটূ ও কড়া কথা বলা যাবে কি?
শনিবার, ১২ ফেব্রুয়ারী ২০২২ ১৬:৩৩ অপরাহ্ন
Islamic News BD - The Lesson of Peace

Islamic News BD - The Lesson of Peace

ইসলাম ও বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রীয় আইনে প্রয়োজনে হত্যা ও যুদ্ধের অনুমতি রয়েছে। কিন্তু পরিস্থিতি যত খারাপই হোক না কেন; কোথাও কটূভাষা, মন্দ কথা বা কড়া কথা বলার অনুমতি নেই। চাই মুসলিম হোক কিংবা অমুসলিম-কাফের-মুশরিক হোক। আর ইসলাম সব সময় সুন্দর ও উত্তমভাবে কথা বলার নির্দেশ দেয়।

কটূভাষা ও মন্দ কথা শয়তানের কাজ। এর মাধ্যমে মানুষের মধ্যে বিভেদ বা বৈরিতা সৃষ্টি হয়। শয়তানই মানুষকে কথার মারপ্যাচে ফেলে দিয়ে অস্থিতিশীল অবস্থা তৈরি করে থাকে। এ কারণেই মহান আল্লাহ নির্দেশ দেন-

وَ قُلۡ لِّعِبَادِیۡ یَقُوۡلُوا الَّتِیۡ هِیَ اَحۡسَنُ ؕ اِنَّ الشَّیۡطٰنَ یَنۡزَغُ بَیۡنَهُمۡ ؕ اِنَّ الشَّیۡطٰنَ کَانَ لِلۡاِنۡسَانِ عَدُوًّا مُّبِیۡنًا আর আমার বান্দাদের বলুন তারা যেন এমন কথা বলে, যা অতি সুন্দর। নিশ্চয়ই শয়তান তাদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টির উস্কানি দেয়; নিশ্চয়ই শয়তান মানুষের প্রকাশ্য শত্রু। (সুরা বনি ইসরাইল : আয়াত ৫৩) আয়াত নাজিলের কারণ

এ আয়াতটি হজরত ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহুর একটি ঘটনায় তা নাজিল হয়। তাহলো- এক ব্যক্তি হজরত ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহুকে গালি দিলে জবাবে হজরত ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহুও তার বিরুদ্ধে কঠোর ভাষা প্রয়োগ করেন। শুধু তা-ই নয়, তিনি তাকে হত্যা করতেও মনস্থ করেন। ফলে দুই গোত্রের মধ্যে যুদ্ধ বেঁধে যাওয়ারও আশংকা তৈরি হয়। তখন এই আয়াত নাজিল হয়।

এ আয়াতে আল্লাহ তাআলা দুইটি বিষয়ে সতর্ক করেছেন। একটি হলো- কথা বলতে হবে এমন ভাবে যেন, কথাগুলো হয় সুন্দর এবং উত্তম। আপোসে কথোপকথনের সময় জিহ্বাকে যেন সাবধানে ব্যবহার করা হয়। যেন ভালো কথা বলা হয়। কথায় যেন দোষ-ত্রুটির কোনো কিছু না থাকে।

এমনকি অবিশ্বাসী কাফের, মুশরিক এবং কিতাবধারীদের সম্বোধন করার বা কথা বলার প্রয়োজন দেখা দিলে, তাদের সঙ্গে করুণাসিক্ত কণ্ঠে ও নরমভাবে কথা বলবে। কথায় যেন ইসলামের সৌন্দর্য বিনয় ও নম্রতা প্রকাশ পায়। কথাবার্তা বা সম্বোধন যদি বিনম্র ও ভদ্রোচিত না হয় তবে তাতে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। কেনন শয়তান মানুষের প্রকাশ্য শত্রু।

দ্বিতীয় হলো- কথাবার্তা সাবধান হতে হবে এ জন্য যে, মানুষের প্রকাশ্য ও চিরশত্রু শয়তান জিভের সামান্যতম বিচ্যুতি দ্বারা মানুষের পরস্পরের মধ্যে ফাসাদ সৃষ্টি করতে পারে। কাফের ও মুশরিকদের অন্তরে ইসলাম ও মুসলমানের প্রতি আরও বেশি বিদ্বেষ ও শত্রুতা ভরে দিতে পারে। হাদিসে পাকে এসেছে-

নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, তোমাদের মধ্যে কোনো ব্যক্তি যেন তার কোনো ভাই (মুসলমান) এর প্রতি অস্ত্র দ্বারা ইঙ্গিত না করে। কেননা, সে জানে না, হতে পারে শয়তান তার হাত দ্বারা সেই অস্ত্র চালিয়ে দেবে। (আর তা সেই মুসলিম ভাইকে আঘাত করবে এবং এতে তার মৃত্যুও হয়ে যেতে পারে।) আর এর কারণেই সে জাহান্নামে যাবে। (বুখারি, মুসলিম)

সুতরাং মুমিন মুসলমানের উচিত, কোরআনের দিকনির্দেশনা অনুযায়ী কথাবার্তা বলা। এমনকি অবিশ্বাসীদের সঙ্গে কথা বলার প্রয়োজন হলেও উত্তম ভাষায় কথা বলা। কেউ গালি-গালাজ করলেও তার জবাবে গালি না দিয়ে উত্তম ভাষায় কথা বলা। আর এতেই ফুটে ওঠবে ইসলামের চিরন্তন সৌন্দর্য ও সুমহান আদর্শ।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে সব সময় সবার সঙ্গে উত্তম ভাষায় কথা বলার তাওফিক দান করুন। শয়তানের আক্রমণ ও প্ররোচনা থেকে মুক্ত থাকার তাওফিক দান করুন। কোরআনের নির্দেশ নিজেদের মধ্যে বাস্তবায়ন করার তাওফিক দান করুন। আমিন।