Islamic News BD - The Lesson of Peace
কী পরিমাণ সম্পদ দান-সাদকা করা যাবে?
রবিবার, ২৩ মে ২০২১ ১২:৪৯ অপরাহ্ন
Islamic News BD - The Lesson of Peace

Islamic News BD - The Lesson of Peace

বিদায় হজের সময় রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পবিত্র নগরী মক্কায় অবস্থান করছিলেন। সে সময় হজরত সাদ ইবনে আবি ওয়াক্কাস রাদিয়াল্লাহু আনহু অসুস্থ ছিলেন। প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাকে দেখতে গেলেন। প্রচুর সম্পদের অধিকারী হজরত সাদ রাদিয়াল্লাহু আনহু তাঁর সম্পদ সাদকা করার ইচ্ছা পোষণ করলেন। কী পরিমাণ সম্পদ দান-সাদকা করা যাবে? এ হাদিসে তা ফুটে উঠেছে।সাহাবি হজরত সাদ ইবনে আবি ওয়াক্কাস রাদিয়াল্লাহু আনহু ছিলেন প্রচুর সম্পদের অধিকারী। তার মৃত্যুর পর একমাত্র কন্যাসন্তান ছাড়া আর কোনো ওয়ারিস ছিল না। যখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাকে দেখতে গেলেন, তখন তিনি বললেন-
`ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমার যে কী কষ্ট হচ্ছে, তা তো আপনি দেখতেই পাচ্ছেন। মনে হচ্ছে আর বাঁচব না। আমার প্রচুর সম্পদ রয়েছে। অথচ আমার একটি মাত্র মেয়ে ছাড়া আমার ওয়ারিস হওয়ার মতো আর কেউ নেই।

এ অবস্থায় আমি কি আমার সম্পদের দুই-তৃতীয়াংশ দান-সাদকা করতে পারি?
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, না।

তিনি আবার প্রশ্ন করলেন, তবে আমি কি অর্ধেক দান-সাদকা করে দিতে পারি?
এবারও রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন- না।

তখন তিনি জানতে চাইলেন, তবে কি এক-তৃতীয়াংশ সম্পদ দান-সাদকা করতে পারি?
এবার রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন- এক-তৃতীয়াংশ সম্পদও তো অনেক। দান-সাদকা করার ক্ষেত্রে বিশ্বনবির উপদেশ) তারপর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যা বললেন, তা উম্মতের জন্য গুরুত্বপূর্ণ নসিহত। তাহলো-
إِنَّكَ أَنْ تَذَرَوَرَثَتَكَ أَغْنِيَاءَخَيْرٌمِنْ أَنْ تَذَرَهُمْ عَالَةً يَتَكَفَّفُونَ النَّاسَ وَلَسْتَ تُنْفِقُ نَفَقَةً تَبْتَغِي بِهَا وَجْهَ اللهِ إِلاَّ أُجِرْتَ بِهَا حَتّى اللّقْمَةَ تَجْعَلُهَا فِي فِي امْرَأَتِكَ ;সন্দেহ নেই, তোমার ওয়ারিসদের তুমি যদি এমন অভাবীরূপে রেখে যাও, যার ফলে তারা মানুষের কাছে হাত পাতবে, এ অবস্থার তুলনায় তাদের তুমি সচ্ছলরূপে রেখে যাওয়া অনেক ভালো। আল্লাহর সন্তুষ্টির প্রত্যাশায় তুমি যা কিছুই ব্যয় করবে, তোমাকে এর প্রতিফলন দেয়া হবে। এমনকি তুমি তোমার স্ত্রীর মুখে যে লোকমাটি তুলে দাও; সে জন্যও তুমি পুরস্কার (প্রতিদান) পাবে। (বুখারি)

এ হাদিসে দান-সাদকার পরিমাণ কেমন হবে তা সুস্পষ্ট। হাদিসে উল্লেখিত বিষয়টি দান-সাদকার ক্ষেত্রে স্মরণে রাখা জরুরি। কেননা দান-সাদকার মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ আমলেও ভারসাম্য রক্ষা করতে হবে। যে ব্যাপারে উল্লেখিত হাদিসে দিকনির্দেশনা দিয়েছেন স্বয়ং রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম। কুরআন-সুন্নাহতে বারবার দান-সাদকার কথা বলা হলেও তিনি তিন ভাগের দুই ভাগ; অর্ধেক দান করায় সম্মতি দেননি। অতঃপর তিন ভাগের এক ভাগের ব্যাপারে সম্মতি দিয়েছেন। আবার এ অংশকেও বেশি বলেছেন।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে দান-সাদকার ক্ষেত্রে হাদিসের অনুসরণ ও অনুকরণে বেশি বেশি দান করার তাওফিক দান করুন। নিজের পরিবার-পরিজনের প্রতি লক্ষ্য রাখার তাওফিক দান করুন। আমিন।