মানুষের কিছু স্বভাবের কারণে সংসার উন্নতি হয় না। হাদিসের বর্ণনায় তা সুস্পষ্টভাবে ওঠে এসেছে। সংসারে উন্নতি না হওয়ার সেসব কারণ কী?
১. সকালে দেরি করে ঘুম থেকে ওঠলে
সকাল সকাল ওঠে যে কোনো কাজ করায় রয়েছে বরকত। সংসারের জন্যও তা প্রযোজ্য। সকাল সকাল কাজ করার গুরুত্ব তুলে ধরে নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন-
اللَّهُمَّ بَارِكْ لِأُمَّتِي فِي بُكُورِهَا হে আল্লাহ! আপনি আমার উম্মতকে ভোরের (সকালের) বরকত দান করুন।
তিনি কোনো ছোট কিংবা বড় বাহিনীকে কোথাও পাঠালে দিনের প্রথমভাগেই পাঠাতেন। (হাদিসটির) বর্ণনাকারী নিজে একজন ব্যবসায়ী ছিলেন। তিনি তার পণ্যদ্রব্য দিনের প্রথমভাগে (ভোরে) পাঠাতেন, ফলে তিনি সম্পদশালী হয়েছিলেন এবং এভাবে তিনি অনেক সম্পদের অধিকারী হয়েছিলেন। (আবু দাউদ ২৬০৬)
২. ঘরের নারীরা নিজেকে বেশি বিচক্ষণ মনে করলে
এমন অনেক সংসার আছে, যেখানে নারীরা নিজেদের পুরুষের চেয়ে বেশি বিচক্ষণ মনে করা। কেননা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, কেয়ামতের আগে সমাজে নারীর শাসন চলবে। এমনটি হলে ওই সংসারে উন্নতি আসবে না।
৩. দুনিয়ার প্রতি বেশি ঝুঁকলে
হজরত আনাস ইবনু মালিক রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, আর যে ব্যক্তির একমাত্র চিন্তার বিষয় হবে দুনিয়া, আল্লাহ তাআলা সেই ব্যক্তির গরীবি ও অভাব-অনটন দুচোখের সামনে লাগিয়ে রাখবেন এবং তার কাজগুলো এলোমেলো ও ছিন্নভিন্ন করে দেবেন। তার জন্য যা নির্দিষ্ট রয়েছে, দুনিয়াতে সে এর চাইতে বেশি পাবে না। (তিরমিজি ২৪৬৫)
৪. ইচ্ছাকৃতভাবে দেরিতে নামাজ পড়লে
যারা অলসতা করে সঠিক সময়ে নামাজ আদায় করে না, তাদের নামাজ কবুল হবে না। দুনিয়াতে তাদের সংসারেও উন্নতি হবে না। কেননা তারা নামাজ সম্পর্কে উদাসীন। তাদের জন্য পরকালে শাস্তি রয়েছে। আল্লাহ তাআলা বলেন, এরপর দুর্ভোগ ওই সব মুসল্লির জন্য, যারা তাদের নামাজ সম্পর্কে উদাসীন। (সুরা মাউন: আয়াত ৪-৫)
৫. দুনিয়ার চিন্তায় পেরেশান হলে
হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, আল্লাহ তাআলা বলেন, হে আদম সন্তান! আমার ইবাদতে মগ্ন হও। আমি তোমার অন্তরকে ঐশ্বর্যমন্ডিত করবো এবং তোমার দারিদ্র দূর করবো। তুমি যদি তা না করো, তাহলে আমি তোমার অন্তর পেরেশানী দিয়ে পূর্ণ করবো এবং তোমার দরিদ্রতা দূর করবো না। (ইবনে মাজাহ ৪১০৭, তিরমিজি ২৪৬৬)
৬. ফজরের নামাজ কাজা করলে
ফজরের নামাজ কাজা করলে রহমত থেকে বঞ্চিত হতে হয়। কারণ ফজরের নামাজ দিয়ে সকাল বেলা বরকত ও রহমতের দিন শুরু হয়। ফজরের নামাজ কাজা করায় সংসারের যাবতীয় রহমত থেকে বঞ্চিত হতে হয়।
৭. দান-সাদকাহ না করলে
দান-সাদকায় সম্পদে বরকত হয়। তাই কেউ যদি দান-সাদকাহ না করে তবে তার সংসারেও উন্নতি হয় না।
সুতরাং মুমিন মুসলমানের উচিত, উল্লেখিত কাজগুলোর ক্ষতি থেকে বিরত থাকা। কোরআন-সুন্নাহর উপর আমল করে সংসারের উন্নতিতে মনোযোগী হওয়া।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে ক্ষতিকর যাবতীয় কাজ থেকে হেফাজত করুন। আমিন।