যেসব জায়গায় জুমার নামাজ শুদ্ধ হয় নাঅজুর সময় কথা বলা কি নাজায়েজ?কোরআনের চর্চা অব্যাহত রাখা আবশ্যকশাওয়ালের ছয় রোজার ফজিলতসৌদিসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে উদযাপিত হচ্ছে ঈদুল ফিতর
No icon

জুমার দিনের ফজিলত

সপ্তাহের ফজিলতপূর্ণ দিন হলো শুক্রবার। মুসলিম উম্মাহর জন্য জুমার দিনটি হলো নেয়ামত। এই দিনটি নেক আমলে ভরপুর।

পবিত্র কোরআনে এই দিনটির গুরুত্ব সম্পর্কে বলা হয়েছে, হে ইমানদারগণ, জুমার দিন যখন সালাতের জন্য (তোমাদের) ডাকা হয় (তখন) তোমরা আল্লাহর স্মরণে ধাবিত হও এবং ক্রয়-বিক্রয় বন্ধ করো। এটাই তোমাদের জন্য সর্বোত্তম, যদি তোমরা তা জানতে (সুরা জুমা-৯)।

আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রসুল (সা.) বলেছেন, সূর্য উদিত হওয়ার দিনগুলোর মধ্যে জুমার দিন সর্বোত্তম। এই দিনে আদম (আ.)-কে সৃষ্টি করা হয়েছে। এই দিনে তাঁকে জান্নাতে প্রবেশ করানো হয়েছে এবং এই দিনে তাঁকে জান্নাত থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে।

রসুল (সা.) বলেন, যে ব্যক্তি জুমার দিন গোসল করে উত্তম পোশাক পরবে এবং সুগন্ধি ব্যবহার করবে এবং এরপর সে নামাজ আদায় করার জন্য মসজিদে আসে এবং মুসল্লিদের গায়ের ওপর দিয়ে টপকে সামনে না যায় এবং ইমামের খুতবার সময় চুপ থাকে এবং নামাজ আদায় করে তাহলে তার এই আমল পূর্ববর্তী জুমার দিন থেকে পরের জুমা পর্যন্ত সব সগিরা গুনাহর কাফফারা হয়ে যায় (আবু দাউদ) সুবহানাল্লাহ।

এই দিনের কয়েকটি আমল-

১. শুক্রবার ফজরের নামাজ মসজিদে গিয়ে জামাতে আদায় করা বেশি ফজিলতপূর্ণ। ২. গোসল করা ৩. উত্তম পোশাক পরিধান করা ৪. সুগন্ধি ব্যবহার করা ৫. আগে আগে মসজিদে যাওয়া।

এ ব্যাপারে পবিত্র কোরআনের সুরা জুমার নয় নং আয়াতে ইরশাদ রসুল (সা.) বলেছেন, জুমার দিনে মসজিদের দরজায় ফেরেশতারা অবস্থান নেন এবং ক্রমানুসারে আগে আগমনকারীদের নাম লিখতে থাকেন। যিনি সবার আগে পৌঁছেন তিনি একটি মোটা তাজা উট কোরবানির সওয়াব লাভ করেন। যিনি এরপরে আসেন তিনি একটি গাভী কোরবানি, এরপর যিনি আসেন তিনি একটি ছাগল কোরবানি এবং এরপর যিনি আসেন তিনি একটি মুরগি জবাই করার সওয়াব লাভ করেন। তারপর ইমাম সাহেব যখন খুতবা শুরু করেন তখন ফেরেশতারা লেখা বন্ধ করেন এবং মনোযোগ সহকারে খুতবা শুনতে থাকেন (বুখারি)।

৬. জুমার দিন সুরা কাহাফ তেলওয়াত করা। আবু সাইদ খুদরি (রা.) থেকে বর্ণিত, রসুল (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি জুমার দিন সুরা কাহাফ পাঠ করবে, আল্লাহতায়ালা তাকে পুরো সপ্তাহ সব ধরনের ফিতনা থেকে নিরাপদ রাখবেন। যদি দাজ্জালও বের হয় তবু আল্লাহতায়ালা তাকে নিরাপদ রাখবেন। (আল আহাদিসুল মুখতারা)।

৭. বেশি বেশি দরুদ পাঠ করা, এই দিনের আরেকটি বিশেষ আমল হচ্ছে রসুল (সা.) ওপর বেশি বেশি দরুদ পাঠ করা। এই মর্মে রসুল (সা.) বলেছেন, এই দিন তোমরা আমার ওপর বেশি বেশি দরুদ পাঠ করো। কেননা তোমাদের দরুদ আমার সম্মুখে পেশ করা হয়। যে আমার ওপর বেশি বেশি দরুদ পাঠ করবে কেয়ামতের দিন সে আমার সবচেয়ে বেশি নিকটবর্তী হবে (আল সুনানুল কুবরা) সুবহানাল্লাহ।

৮. জুমার দিনের মধ্যে এমন একটি সময় আছে যে তখন কোনো মুসলমান আল্লাহর কাছে যে দোয়া করবে আল্লাহ তা কবুল করবেন। আর বেশির ভাগ আলেমের মতানুসারে সে সময়টি হলো আসরের নামাজের পর থেকে মাগরিব নামাজের আগ পর্যন্ত।

জুমার নামাজ পরিত্যাগকারীর জন্য রয়েছে কঠিন শাস্তি। কাব ইবনে (রা.) থেকে বর্ণিত, রসুল (সা.) বলেছেন, এমন দিন আসবে একদল লোক জুমার নামাজের আজান শোনার পরও মসজিদে আসবে না। আল্লাহ তাদের অন্তরে মোহর মেরে দেবেন। এরপর তারা উদাসীনদের দলভুক্ত হয়ে যাবে। (মুসলিম)।

আমাদের সবার উচিত জুমার দিনের প্রস্তুতি গ্রহণ করা। দিনটি অবহেলায় ত্যাগ না করে বেশি বেশি নেক আমল করা। ইবাদাত বন্দেগির মধ্যে অতিবাহিত করা। আল্লাহ রাব্বুল আলামিন আমাদের সবাইকে জুমার দিনের গুরুত্ব অনুধাবন করে কোরআন ও হাদিসের আলোকে এই দিনের দিকনির্দেশনা মেনে চলার তৌফিক দান করুন।