যেসব জায়গায় জুমার নামাজ শুদ্ধ হয় নাঅজুর সময় কথা বলা কি নাজায়েজ?কোরআনের চর্চা অব্যাহত রাখা আবশ্যকশাওয়ালের ছয় রোজার ফজিলতসৌদিসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে উদযাপিত হচ্ছে ঈদুল ফিতর
No icon

জীবন ও মৃত্যু সৃষ্টি হয়েছে যে কারণে

সুরা মুলক কোরআনের ৬৭তম সুরা, মক্কায় অবতীর্ণ সুরাটির আয়াত ৩০টি, রুকু ২টি। বেশ কিছু হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, রাতে এ সুরা পাঠ করলে কবরে আল্লাহর আজাব থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে। সুরাটি তার পাঠকারীর জন্য আল্লাহর সাথে কাছে সুপারিশ করবে। সাহাবিরা এ সুরাটিকে মানেআ বা কবরের আজাব প্রতিরোধকারী বলতেন। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন,

سُورَةٌ مِنَ الْقُرْآنِ ثَلَاثُونَ آيَةً، تَشْفَعُ لِصَاحِبِهَا حَتَّى يُغْفَرَ لَهُ: تَبَارَكَ الَّذِي بِيَدِهِ الْمُلْكُ. কুরআনে ত্রিশ আয়াত বিশিষ্ট একটি সুরা আছে। যে ব্যক্তি নিয়মিত ওই সুরা পাঠ করবে তার জন্য সুরাটি ক্ষমা আদায় করা পর্যন্ত সুপারিশ করতে থাকবে। সে সুরা হল, তাবারাকাল্লাযি বিইয়াদিহিল মুলক& । (সুনানে আবু দাউদ: ১৪০০, সুনানে তিরমিজি: ২৮৯১)

আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা. বলেন,

مَنْ قَرَأَ تَبٰرَكَ الَّذِیْ بِیَدِهِ الْمُلْكُ كُلَّ لَيْلَةٍ مَنَعَهُ اللهُ بِهَا مِنْ عَذَابِ الْقَبْرِ، وَكُنَّا فِي عَهْدِ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ نُسَمِّيهَا الْمَانِعَةَ، وَإِنَّهَا فِي كِتَابِ اللهِ سُورَةٌ مَنْ قَرَأَ بِهَا فِي كُلِّ لَيْلَةٍ فَقَدْ أَكْثَرَ وَأَطَابَ. যে ব্যক্তি প্রতি রাতে সুরা মুলক পড়বে আল্লাহ তাআলা তাকে এর মাধ্যমে কবরের আজাব থেকে মুক্ত রাখবেন। আল্লাহর রাসুলের (সা.) যুগে এ সুরাকে আমরা মানেআ অর্থাৎ কবরের আজাব প্রতিরোধকারী বলতাম। যে ব্যক্তি প্রতি রাতে এ সুরা তিলাওয়াত করল সে অনেক তিলাওয়াত করল এবং উত্তম কাজ করল। (সুনানে কুবরা নাসাঈ: ১০৫৪৭)

সুরা মুলকের আলোচ্যবিষয় আল্লাহর বড়ত্ব, তার ক্ষমতার বিভিন্ন নিদর্শন, আখেরাতের জীবন, মুমিনদের পুরস্কার, কাফেরদের শাস্তি ইত্যাদি।

সুরা মুলকের ১-৫ আয়াতে আল্লাহ বলেন,

(১) تَبَارَكَ الَّذِي بِيَدِهِ الْمُلْكُ وَهُوَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ
তাবারাকাল্লাযী বিয়াদিহিল মুলকু ওয়া হুওয়া আলা কুল্লি শাইয়িন কাদীর।
বরকতময় তিনি যার হাতে সর্বময় কর্তৃত্ব। আর তিনি সব কিছুর উপর সর্বশক্তিমান।

(২)
الَّذِي خَلَقَ الْمَوْتَ وَالْحَيَاةَ لِيَبْلُوَكُمْ أَيُّكُمْ أَحْسَنُ عَمَلاً وَهُوَ الْعَزِيزُ الْغَفُورُ
আল্লাযী খালাকাল মাওতা ওয়াল হায়াতা লিইয়াবলুওয়াকুম আইয়ুকুম আহছানু আমালাওঁ ওয়া হুওয়াল আঝীঝুল গাফূর।
যিনি মৃত্যু ও জীবন সৃষ্টি করেছেন যাতে তিনি তোমাদেরকে পরীক্ষা করতে পারেন যে, কে তোমাদের মধ্যে আমলের দিক থেকে উত্তম। আর তিনি মহাপরাক্রমশালী, অতিশয় ক্ষমাশীল।(৩)
الَّذِي خَلَقَ سَبْعَ سَمَاوَاتٍ طِبَاقاً مَا تَرَى فِي خَلْقِ الرَّحْمَنِ مِنْ تَفَاوُتٍ فَارْجِعِ الْبَصَرَ هَلْ تَرَى مِنْ فُطُورٍ
আল্লাযী খালাকা সাবআ সামাওয়াতিন তিবাকান মা তারা ফী খালকির রাহমানি মিন তাফাউত ফারজিইল বাসারা হাল তারা মিন ফুতূর।
যিনি সাত আসমান স্তরে স্তরে সৃষ্টি করেছেন। পরম করুণাময়ের সৃষ্টিতে তুমি কোন অসামঞ্জস্য দেখতে পাবে না। আবার দৃষ্টি ফেরাও, কোন ত্রুটি দেখতে পাও কি?

(৪)
ثُمَّ ارْجِعِ الْبَصَرَ كَرَّتَيْنِ يَنْقَلِبْ إِلَيْكَ الْبَصَرُ خَاسِئاً وَهُوَ حَسِيرٌ
সুম্মার জিইল বাসারা কাররাতাইনি ইয়ানকালিব ইলাইকাল বাসারু খাসিআওঁ ওয়া হুওয়া হাসীর।
অতঃপর তুমি বার বার তাকিয়ে দেখ, তোমার দৃষ্টি ব্যর্থ ও পরিশ্রান্ত হয়ে তোমার দিকে ফিরে আসবে।

(৫)
وَلَقَدْ زَيَّنَّا السَّمَاءَ الدُّنْيَا بِمَصَابِيحَ وَجَعَلْنَاهَا رُجُوماً لِلشَّيَاطِينِ وَأَعْتَدْنَا لَهُمْ عَذَابَ السَّعِيرِ
ওয়া লাকাদ ঝাইয়ান্নাস সামাআদ দুনইয়া বিমাসাবীহা ওয়া জাআলনাহা রুজূমাল লিশশায়াতীনি ওয়া আ তাদনা লাহুম আজাবাস সাঈর।
আমি নিকটবর্তী আসমানকে প্রদীপপুঞ্জ দ্বারা সুশোভিত করেছি এবং সেগুলোকে শয়তানদের প্রতি নিক্ষেপের বস্তু বানিয়েছি। আর তাদের জন্য প্রস্তুত করে রেখেছি জ্বলন্ত আগুনের আজাব।

এ আয়াতগুলো থেকে যে শিক্ষা ও নির্দেশনা আমরা পাই:

১. আল্লাহর অস্তিত্ব, জ্ঞান ও ক্ষমতার অসংখ্য নিদর্শন আমাদের ঘিরে আছে। আমাদের কর্তব্য এ নিদর্শনগুলো দেখে আল্লাহর অস্তিত্ব ও বড়ত্ব অনুভব করা এবং একমাত্র তারই ইবাদত করা।

২. বিশ্বজগতের সর্বময় রাজত্ব ও ক্ষমতা আল্লাহর হাতে, তিনি সব কিছুর ওপর একচ্ছত্র ক্ষমতার অধিকারী। তার কোনো সৃষ্টির শক্তি বা ক্ষমতা তার ক্ষমতা ও পরিকল্পনাকে ব্যর্থ করে দিতে পারে না। তিনি যা চান, তাই হয়।

৩. আল্লাহ তাআলা জীবন ও মৃত্যু সৃষ্টি করেছেন মানুষকে পরীক্ষা করার জন্য। আল্লাহ পরীক্ষা করতে চান ভালো ও মন্দ কাজ করার সুযোগ পেয়ে কারা ভালো কাজ করে, মন্দ কাজ থেকে বিরত থাকে।

৪. আকাশে তারকারাজি সৃষ্টির উদ্দেশ্য আকাশের শোভাবর্ধন ও আকাশকে শয়তানদের থেকে সুরক্ষিত করা। এ ছাড়া রাতের বেলা দিক নির্ণয় ও পথ চেনা সহজ করাও তারকারাজি সৃষ্টির উদ্দেশ্য। কোরআনের আরেক আয়াতে আল্লাহ বলেছেন,