যেসব জায়গায় জুমার নামাজ শুদ্ধ হয় নাঅজুর সময় কথা বলা কি নাজায়েজ?কোরআনের চর্চা অব্যাহত রাখা আবশ্যকশাওয়ালের ছয় রোজার ফজিলতসৌদিসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে উদযাপিত হচ্ছে ঈদুল ফিতর
No icon

মৃত ব্যক্তির নামে কোরবানি করার বিধান

কোরবানি ইসলামের একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। কোরআনে আল্লাহ তাআলা নামাজের সাথে যুক্ত করে কোরবানি করার নির্দেশ দিয়েছেন। আল্লাহ বলেন,

اِنَّاۤ اَعۡطَیۡنٰکَ الۡکَوۡثَرَ فَصَلِّ لِرَبِّکَ وَ انۡحَرۡ اِنَّ شَانِئَکَ هُوَ الۡاَبۡتَرُ নিশ্চয় আমি তোমাকে কাওসার দান করেছি। সুতরাং তোমার রবের উদ্দেশে সালাত আদায় করো ও কোরবানি করো। নিশ্চয় তোমার প্রতি শত্রুতা পোষণকারীই নির্বংশ। (সুরা কাওসার: ১-৩)

অন্য আয়াতে আল্লাহ বলেন,

وَالۡبُدۡنَ جَعَلۡنٰهَا لَکُمۡ مِّنۡ شَعَآئِرِ اللّٰهِ لَکُمۡ فِیۡهَا خَیۡرٌ فَاذۡکُرُوا اسۡمَ اللّٰهِ عَلَیۡهَا صَوَآفَّ فَاِذَا وَجَبَتۡ جُنُوۡبُهَا فَکُلُوۡا مِنۡهَا وَ اَطۡعِمُوا الۡقَانِعَ وَ الۡمُعۡتَرَّ کَذٰلِکَ سَخَّرۡنٰهَا لَکُمۡ لَعَلَّکُمۡ تَشۡکُرُوۡنَ لَنۡ یَّنَالَ اللّٰهَ لُحُوۡمُهَا وَ لَا دِمَآؤُهَا وَ لٰکِنۡ یَّنَالُهُ التَّقۡوٰی مِنۡکُمۡ ؕ کَذٰلِکَ سَخَّرَهَا لَکُمۡ لِتُکَبِّرُوا اللّٰهَ عَلٰی مَا هَدٰىکُمۡ وَ بَشِّرِ الۡمُحۡسِنِیۡنَ আর কোরবানির উটকে আমি তোমাদের জন্য আল্লাহর অন্যতম নিদর্শন বানিয়েছি; তোমাদের জন্য তাতে রয়েছে কল্যাণ। সুতরাং সারিবদ্ধভাবে দন্ডায়মান অবস্থায় সেগুলির উপর আল্লাহর নাম উচ্চারণ কর যখন সেগুলি কাত হয়ে পড়ে যায় তখন তা থেকে খাও। যে অভাবী, মানুষের কাছে হাত পাতে না এবং যে অভাবী চেয়ে বেড়ায়-তাদেরকে খেতে দাও। এভাবেই আমি ওগুলিকে তোমাদের অনুগত করে দিয়েছি; যাতে তোমরা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ কর। আল্লাহর কাছে পৌঁছে না এগুলোর গোশত ও রক্ত; বরং তার কাছে পৌঁছে তোমাদের তাকওয়া। এভাবেই তিনি সে সবকে তোমাদের অধীন করে দিয়েছেন, যাতে তোমরা আল্লাহর তাকবির পাঠ করতে পার, এজন্য যে, তিনি তোমাদেরকে হিদায়াত দান করেছেন; সুতরাং তুমি সৎকর্মশীলদের সুসংবাদ দাও। (সুরা হজ: ৩৬, ৩৭)

যারা জিলহজ মাসের ১০, ১১ ও ১২ তারিখে নিজেদের নিত্য প্রয়োজনীয় খরচ ছাড়া অতিরিক্ত সাড়ে সাত তোলা সোনা বা এর সমমূল্যের মালিক হয়, হানাফি মাজহাব অনুযায়ী তাদের ওপর কোরবানি করা ওয়াজিব। অন্যান্য মাজহাবে কোরবানি ওয়াজিব নয়, বরং সুন্নতে মুআক্কাদা।

অন্যান্য নফল ইবাদতের মতো মৃত ব্যক্তির পক্ষ থেকে নফল কোরবানি করে তার সওয়াবের আশা করা যায়। আয়েশা (রা.) বলেন,

أَنَّ رَجُلاً قَالَ لِلنَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم إِنَّ أُمِّيَ افْتُلِتَتْ نَفْسُهَا وَإِنِّي أَظُنُّهَا لَوْ تَكَلَّمَتْ تَصَدَّقَتْ فَلِيَ أَجْرٌ أَنْ أَتَصَدَّقَ عَنْهَا قَالَ نَعَمْ এক ব্যক্তি নবিজিকে (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললো, আমার মা হঠাৎ মারা গেছেন। তার ব্যাপারে আমি ধারণা করি, তিনি যদি কথা বলতে পারতেন তবে সাদাকার অসিয়ত করতেন। আমি যদি তার পক্ষে সাদাকা্ করি, তবে কি আমার এ কাজের কোন সাওয়াব হবে? নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, হ্যাঁ। (সহিহ মুসলিম: ৪০৭৪)

মৃত ব্যক্তি যদি কোরবানির জন্য অসিয়ত না করে থাকে তবে মৃত ব্যক্তির নামে দেওয়া কোরবানি নফল কোরবানি গণ্য হবে এবং ওই কোরবানির গোশত নিজেরা খাওয়া যাবে, আত্মীয়-স্বজনকেও দেওয়া যাবে।আর যদি মৃত ব্যক্তি কোরবানির ওসিয়ত করে গিয়ে থাকে, তবে ওই অসিয়ত পূরণের জন্য দেওয়াে কোরবানির গোশত নিজেরা খাওয়া যাবে না এবং ধনী আত্মীয়দের দেওয়া যাবে না। ওই গোশত দরিদ্র ও মিসকিনদের মাঝে সদকা করে দিতে হবে।