অজুর সময় কথা বলা কি নাজায়েজ?কোরআনের চর্চা অব্যাহত রাখা আবশ্যকশাওয়ালের ছয় রোজার ফজিলতসৌদিসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে উদযাপিত হচ্ছে ঈদুল ফিতরবৃহস্পতিবার পবিত্র ঈদুল ফিতর
No icon

কেয়ামতের দিন কোরআন যাদের জন্য সুপারিশ করবে

কোরআন আল্লাহর পক্ষ থেকে নাজিলকৃত গ্রন্থ। সৃষ্টির উপর স্রষ্টার মর্যাদা যেমন, পৃথিবীর সব কথা, বক্তব্য ও গ্রন্থের ওপর কোরআনের মর্যাদাও তেমন। আল্লাহ তাআলা কোরআন সম্পর্কে বলেছেন,

اِنَّهٗ لَقُرۡاٰنٌ كَرِیۡمٌ فِیۡ كِتٰبٍ مَّكۡنُوۡنٍ لَّا یَمَسُّهٗۤ اِلَّا الۡمُطَهَّرُوۡنَ تَنۡزِیۡلٌ مِّنۡ رَّبِّ الۡعٰلَمِیۡنَ নিশ্চয় এটি মহিমান্বিত কোরআন, যা আছে সুরক্ষিত কিতাবে, পূত-পবিত্র (ফেরেশতা) ছাড়া (শয়তানেরা) তা স্পর্শ করতে পারে না, তা সৃষ্টিকুলের রবের কাছ থেকে নাজিলকৃত। (সুরা ওয়াকিয়া: ৭৭-৮০)

কোরআন অধ্যয়ন ও তিলাওয়াত ইসলামে অত্যন্ত ফজিলতপূর্ণ আমল। ইসলামের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ফরজ ইবাদত নামাজ কোরআন তিলাওয়াত ছাড়া আদায় করা যায় না। নামাজে কোরআন তিলাওয়াত করা ফরজ। নামাজের বাইরেও কোরআন তিলাওয়াত সর্বোত্তম নফল ইবাদত। আল্লাহ তাআলা বলেন,

اِنَّ الَّذِیۡنَ یَتۡلُوۡنَ كِتٰبَ اللّٰهِ وَ اَقَامُوا الصَّلٰوۃَ وَ اَنۡفَقُوۡا مِمَّا رَزَقۡنٰهُمۡ سِرًّا وَّ عَلَانِیَۃً یَّرۡجُوۡنَ تِجَارَۃً لَّنۡ تَبُوۡرَ নিশ্চয় যারা আল্লাহর কিতাব অধ্যয়ন করে, নামাজ কায়েম করে এবং আল্লাহ যে রিজিক দিয়েছেন তা থেকে গোপনে ও প্রকাশ্যে ব্যয় করে, তারা এমন ব্যবসার আশা করতে পারে যা কখনো ধ্বংস হবে না। (সুরা ফাতির: ২৯)

পৃথিবীতে কোরআন যাদের সঙ্গী হবে, যারা কোরআন তেলাওয়াত করবে, কোরআনের বিধান অনুযায়ী জীবন যাপন করবে, কেয়ামতের কঠিন দিনে কোরআন তাদের তাদের পক্ষে সাক্ষ্য দেবে, সুপারিশ করবে, তাদের জন্য ছায়া হবে। আবু উমামা বাহেলি (রা.) থেকে বর্ণিত আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন,

اقْرَءُوا الْقُرْآنَ فَإِنَّهُ يَأْتِي يَوْمَ الْقِيَامَةِ شَفِيعًا لِأَصْحَابِهِ اقْرَءُوا الزَّهْرَاوَيْنِ الْبَقَرَةَ وَسُورَةَ آلِ عِمْرَانَ فَإِنَّهُمَا تَأْتِيَانِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ كَأَنَّهُمَا غَمَامَتَانِ أَوْ كَأَنَّهُمَا غَيَايَتَانِ أَو فِرْقَانِ مِنْ طَيْرٍ صَوَافَّ تُحَاجَّانِ عَنْ أَصْحَابِهِمَا اقْرَءُوا سُورَةَ الْبَقَرَةِ فَإِنَّ أَخْذَهَا بَرَكَةٌ وَتَرْكَهَا حَسْرَةٌ وَلَا تستطيعها البطلة তোমরা কোরআন পড়। কোরআন পাঠ কেয়ামতের দিন তিলাওয়াতকারীর জন্য সুপারিশকারী হয়ে আসবে। তোমরা দুই উজ্জ্বল সুরা বাকারা ও আলে ইমরান পড়বে। কেয়ামতের দিন এ সুরা দুটি মেঘখণ্ড অথবা দুটি সামিয়ানা অথবা দু টি পক্ষ প্রসারিত পাখির ঝাঁকরূপে আসবে এবং তাদের পাঠকদের জন্য আল্লাহর কাছে সুপারিশ করবে। বিশেষ করে তোমরা সুরা বাকারা পড়বে। সুরা বাকারা পড়া বরকত আর তা না পড়া আক্ষেপ। এ সুরা অলস ও নির্বোধরা পড়তে পারবে না। (সহিহ মুসলিম: ৮০৪)

আরেকটি হাদিসে বলা হয়েছে, কোরআন যেমন তার অনুসারীদের জান্নাতের দিকে নিয়ে যাবে, কোরআন-বিমুখদের জাহান্নামের দিকেও নিয়ে যাবে। জাবের (রা.) থেকে বর্ণিত আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন,

الْقُرْآنُ شَافِعٌ مُشَفَّعٌ وَمَاحِلٌ مُصَدَّقٌ، مَنْ جَعَلَهُ أَمَامَهُ قادَهُ إِلَى الْجَنَّةِ وَمَنْ جَعَلَهُ خَلْفَهُ سَاقَهُ إِلَى النَّارِ কোরআন (কেয়ামতের দিন) সুপারিশ করবে এবং তার সুপারিশ গ্রহণযোগ্য হবে। কোরআন সত্যায়িত প্রতিবাদী। যে ব্যক্তি তাকে নিজের সামনে রাখবে, সে ব্যক্তিকে সে পথ দেখিয়ে জান্নাতের দিকে নিয়ে যাবে। আর যে ব্যক্তি তাকে পেছনে রাখবে, সে ব্যক্তিকে সে জাহান্নামের দিকে টেনে নেবে। (সহিহ ইবনে হিব্বান: ১২৪) তাই আমরা যেন দুনিয়াতে কোরআনের সঙ্গী হই, কোরআন পাঠ করি, অনুসরণ করি। কোনোভাবেই যেন কোরআন-বিমুখদের তালিকায় আমাদের নাম না ওঠে। আল্লাহ তওফিক দিন!