অজুর সময় কথা বলা কি নাজায়েজ?কোরআনের চর্চা অব্যাহত রাখা আবশ্যকশাওয়ালের ছয় রোজার ফজিলতসৌদিসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে উদযাপিত হচ্ছে ঈদুল ফিতরবৃহস্পতিবার পবিত্র ঈদুল ফিতর
No icon

জুমার দুটি আজানের প্রচলন যেভাবে হয়

জুমার দিনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আমল জুমার নামাজ আদায় করা। জুমার নামাজ আদায় করা ওয়াজিব। কোরআনে আল্লাহ তাআলা জুমার নামাজের জন্য দ্রুত মসজিদে উপস্থিত হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। জুমার নামাজের গুরুত্ব বোঝাতে আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন,

من تَرَكَ ثلاث جمعٍ تهاوناً بها طبع الله على قلبه যে ব্যক্তি অলসতা করে ধারাবাহিকভাবে তিনটি জুমার জামাতে অনুপস্থিত থাকে, আল্লাহ তা আলা তার অন্তরে মোহর মেরে দেন। (সুনানে নাসাঈ: ১৩৭২)

জুমার দিন খুতবার আগেই মসজিদে চলে যাওয়া জরুরি। জুমার আজানের পর দুনিয়াবি কাজকর্ম করার ব্যাপারে কোরআনে নিষেধাজ্ঞা এসেছে। দ্রুত মসজিদে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আল্লাহ বলেন,

یٰۤاَیُّهَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡۤا اِذَا نُوۡدِیَ لِلصَّلٰوۃِ مِنۡ یَّوۡمِ الۡجُمُعَۃِ فَاسۡعَوۡا اِلٰی ذِکۡرِ اللّٰهِ وَ ذَرُوا الۡبَیۡعَ ذٰلِکُمۡ خَیۡرٌ لَّکُمۡ اِنۡ کُنۡتُمۡ تَعۡلَمُوۡنَ হে মুমিনগণ, যখন জুমার দিনে সালাতের জন্য আহবান করা হয়, তখন তোমরা আল্লাহর স্মরণের দিকে ধাবিত হও আর বেচা-কেনা বর্জন কর। এটাই তোমাদের জন্য সর্বোত্তম, যদি তোমরা জানতে। (সুরা জুমা: ৯)

তাই জুমার আজান হয়ে গেলে মসজিদে চলে যাওয়া, সব দুনিয়াবি কাজ বন্ধ করে দেওয়া কুরআনের সরাসরি নির্দেশে ওয়াজিব বা অবশ্য কর্তব্য।

আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আবু বকর ও ওমরের (রা.) যুগে অন্যান্য নামাজের মতো জুমার জন্যও একটি আজান ও ইকমত প্রচলিত ছিল। ইমাম যখন খুতবার জন্য মিম্বরে বসতেন, তখন জুমার প্রথম ও একমাত্র আজান হতো। তারপর নামাজ শুরু করার আগে যথা নিয়মে ইকামত দেওয়া হতো। ওসমানের খেলাফতকালে মুসলমানদের সংখ্যা বেড়ে গেলে তিনি দুটি আজানের প্রচলন করেন। জুমার প্রথম আজানটি দেওয়া হতো মদিনার অদূরে জাওরা নামক স্থানে, সেটা ছিল মদিনার বাজার। দ্বিতীয় আজান আগের প্রথম আজানের মতো খুতবার আগে ইমামের সামনে দাঁড়িয়ে দেওয়া হতো।সহিহ বুখারির বর্ণনায় সায়িব ইবনে ইয়াজিদ (রাযি.) বলেন, নবিজি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আবু বকর (রা.) এবং ওমরের (রা.) সময় জুমার দিন ইমাম যখন মিম্বরের ওপর বসতেন, তখন প্রথম আজান দেয়া হত। পরে যখন ওসমান (রা.) খলিফা হলেন এবং লোকসংখ্যা বৃদ্ধি পেল, তখন তিনি যাওরাহ থেকে তৃতীয় আজান (ইকামতকেও আজান গণ্য করে তৃতীয় আজান বলা হয়েছে) দেওয়ার প্রচলন করেন। আবু আবদুল্লাহ (ইমাম বুখারি রহ.) বলেন, যাওরাহ হলো মাদিনার অদূরে অবস্থিত একটি বাজার। (সহিহ বুখারি: ৮৬৬)

সুরানে আবু দাউদের বর্ণনায় সায়েব ইবনে ইয়াজিদ (রা.) বলেন, আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আবু বকর (রা.) ও ওমরের (রা.) যুগে ইমাম যখন খুতবা দেয়ার উদ্দেশ্যে মিম্বরে বসতেন, তখন যে আজান দেওয়া হত তাই ছিল জুমার প্রথম আজান। তারপর ওসমানের (রা.) খেলাফতকালে যখন মুসলমানদের সংখ্যা বৃদ্ধি পায়, তখন তিনি তৃতীয় আজানের প্রবর্তন করেন। (ইকামতকেও আজান গণ্য করে তৃতীয় আজান বলা হয়েছে) তার নির্দেশ অনুযায়ী জাওরা নামক স্থানে আজান দেওয়া হয়। তারপর এই নিয়ম ধারাবাহিকভাবে চলে আসছে। (সুনানে আবু দাউদ: ১০৮৭)