তিনিই আল্লাহ! যিনি অত্যন্ত ক্ষমাশীল, প্রেমময়। সুরা বুরুজের ছোট্ট একটি আয়াত- ওয়া হুয়াল গাফুরূল ওয়াদুদ;। তাতেই বলা হয়েছে-আর তিনি অত্যন্ত ক্ষমাশীল, প্রেমময়। কত সুন্দর ও উত্তম ঘোষণাই না এটি। কিন্তু তিনি কি ভুলকারী-পাপীর জন্যও ক্ষমাশীল এবং প্রেমময়?
হ্যাঁ, আল্লাহ তাআলা অপরাধীর জন্যও ক্ষমাশীল-প্রেমময়। কারণ কোনো মানুষ যখন ভুল করে আল্লাহর কাছে ক্ষমা চায় বা তাওবাহ করে আল্লাহ তাআলা ওই ব্যক্তিকে ক্ষমা করে দেন। কোরআনুল কারিমের অনেক আয়াতে আল্লাহ তাআলা নিজেকে ক্ষমাকারী, দয়ালু ও প্রেমময় হিসেবে উপস্থাপন করেছেন।মানুষ হিসেবে ভুল করাটাই স্বাভাবিক। শুধু নবি-রাসুলগণ ছাড়া কেউ ভুলের উর্ধ্বে নয়। মানুষ যে ভুল করবে আর আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাইবে এটি তিনি জানেন। আবার ভুল-ত্রুটি করে তাঁর কাছে ক্ষমা চাইবেন; তা-ও মহান আল্লাহর অজানা নয়। তাইতো তিনি কোরআনুল কারিমে ঘোষণা দিয়েছেন যারা বেশি বেশি তাওবাহ করবে; তাদেরকে তিনি ভালোবাসবেন। কোরআন মাজিদে আল্লাহ ঘোষণা দেন-
اِنَّ اللّٰهَ یُحِبُّ التَّوَّابِیۡنَ নিশ্চয়ই আল্লাহ তাআলা বেশি বেশি তাওবাকারীকে ভালোবাসেন। (সুরা বাকারা : আয়াত ২২২)
তাই মানুষের উচিত, ভুল হয়ে গেলে তাতে কিংবা পাপের পথে অবিচল না থেকে, অনুতপ্ত হয়ে খালিস অন্তরে আল্লাহর কাছে তওবা করা। আর এ তাওবার মাধ্যমেই শয়তান এবং মানুষের মধ্যে পার্থক্য ফুটে ওঠে।অপরাধী বা ভুলকারীর প্রতি যে মহান আল্লাহ ক্ষমাশীল ও প্রেমময় তা সুস্পষ্টভাবে ওঠে এসেছে হাদিসের বর্ণনায়। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নিজে এ ঘোষণা দেন-
হজরত আনাস রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, প্রত্যেক আদম সন্তানই গুনাহগার। আর গুনাহগারদের মধ্যে তওবাকারীগণই উত্তম। (ইবনে মাজাহ)আদম সন্তান তথা মানুষের এ পাপ-অপরাধ ইচ্ছা-অনিচ্ছায় হয়ে থাকে। পাপ-ভুল যেভাবেই হোক না কেন জানা-অজানা হাজরো পাজে জর্জরিত থাকলেও হতাশ হওয়ার কোনো কারণ নেই। কারণ তিনিই মহান আল্লাহ; যিনি ক্ষমাশীল এবং প্রেমময়। বান্দা তাওবাহ করলে আল্লাহ সবাইকে সব ভুল-পাপ-অপরাধ থেকে ক্ষমা করে দেবেন। তাওবাহকারীকৈ শুধু ক্ষমাই করবেন না; তিনি তাওবাহকারীকে ক্ষমাও ভালোবাসেন।সুতরাং জানা-অজানা হাজারো পাপে জর্জরিত থাকলেও; হতাশায় না ভুগে গাফুরুর রাহিম মহান আল্লাহ তাআলার কাছে ফিরে আসতে হবে। মৃত্যুর সময় ঘনিয়ে আসার আগে পাপ বা ভুলকারীদের আল্লাহর পথে ফিরে আসার সময় আছে; সুযোগ আছে। যে সুযোগ ক্ষণিক পরে নাও থাকতে পারে।আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে কোরআন-সুন্নাহর সুসংবাদে ভুল বা অপরাধ থেকে ক্ষমার নিয়তে তাওবাহ করার তাওফিক দান করুন। তাওবাহ করার মাধ্যমে আল্লাহর ভালোবাসায় নিজেকে নিয়োজিত করার তাওফিক দান করুন। আমিন।