মক্কা ও মদিনার কারণে সৌদি আরব ইসলাম ধর্মের প্রাণকেন্দ্র হিসেবে পরিচিত। একই সঙ্গে উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রেও দেশটির বিশ্ববিদ্যালয়গুলো শীর্ষ তালিকায় স্থান করে নিচ্ছে। যুক্তরাজ্যভিত্তিক র্যাংকিং প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান টাইমস হায়ার এডুকেশনের তথ্যমতে, বিশ্বের পাঁচ শ বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকার মধ্যে দেশটির অন্তত ১৯টি বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে। এর মধ্যে ১০১তম স্থানে রয়েছে জেদ্দায় অবস্থিত কিং সাউদ ইউনিভার্সিটি। তাই বিশ্বের নানা দেশের শিক্ষার্থীর পছন্দের তালিকায় দেশটি স্থান করে নিচ্ছে।
তাফসির, ফিকহ, দাওয়াহ, আরবি ভাষা ও ইসলামী বিষয় ছাড়াও অর্থনীতি, ব্যবসায় প্রশাসন, শিক্ষা, আইন, বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ও প্রকৌশল বিষয়েও উচ্চশিক্ষার সুযোগ রয়েছে। তবে যে বিষয়েই পড়া হোক, এক বছর বা দুই বছর মেয়াদি আরবি ভাষা শিক্ষা কোর্স সম্পন্ন করার পর সংশ্লিষ্ট বিষয়ে ভর্তির সুযোগ মেলে। সৌদি আরবের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের (https://studyinsaudi.moe.gov.sa/) ওয়েবসাইটে নির্ধারিত নিয়ম অনুসরণ করে দেশটির ২২টি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনটিতে ভর্তির আবেদন করা যাবে। গত মে মাসে ঢাকাস্থ সৌদি দূতাবাস এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, সৌদি আরবের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ২৫৬ জন বাংলাদেশি শিক্ষার্থীর জন্য শিক্ষাবৃত্তি বরাদ্দ করা হয়েছে। স্নাতক, স্নাতকোত্তর ও পিএইচডি পর্যায়ে ভর্তির জন্য আবেদন করা যাবে। স্নাতক পর্যায়ে ভর্তির জন্য আবেনদকারীর বয়স ১৭ থেকে ২৫ বছরের মধ্যে হতে হবে। স্নাতকোত্তরের জন্য বয়সসীমা ৩০ বছর এবং পিএইচডির জন্য ৩৫।
এদিকে কিং সাউদ ইউনিভার্সিটির নিজস্ব ওয়েবসাইটেও (https://ali-admit.ksu.edu.sa/) আবেদন গ্রহণ করা হচ্ছে। এখানে শিক্ষাবৃত্তির আওতায় নির্দিষ্ট পরিমাণ মাসিক ভাতা, শিক্ষা ও আবাসনের ব্যবস্থা ও গ্রীষ্মকালীন ছুটিতে দেশে যাওয়ার বিমান টিকিট অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ভেদে সুযোগ-সুবিধার তারতম্য হয়ে থাকে।
দেশটির কয়েকটি বিখ্যাত বিশ্ববিদ্যালয় হলো কিং আবদুল আজিজ ইউনিভার্সিটি, কিং ফাহদ ইউনিভার্সিটি অব পেট্রোলিয়াম অ্যান্ড মিনারেলস, কিং সাউদ ইউনিভার্সিটি, ইমাম মুহাম্মদ ইবনে সাউদ ইসলামিক ইউনিভার্সিটি, ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব মদিনা, উম্মুল কুরা ইউনিভার্সিটি, তায়েফ ইউনিভার্সিটি, তায়েবা ইউনিভার্সিটি, নর্দার্ন বর্ডার ইউনিভার্সিটি। এর মধ্যে ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব মদিনায় বিশ্বের দেড় শতাধিক দেশের ২০ হাজারের বেশি শিক্ষার্থী পড়াশোনা করে। গত বছর বিশ্ববিদ্যালয়টি গিনেস বুক রেকর্ড করে বিশেষ সম্মাননা সনদ লাভ করে।
আবেদনের ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দেওয়ার বিষয়টি প্রায় অভিন্ন হয়ে থাকে। প্রাথমিকভাবে প্রয়োজনীয় কাগজগুলো হলো জন্ম সনদ ও এর আরবি অনুবাদ, পুলিশ ক্লিয়ারেন্স ও এর আরবি অনুবাদ, পাসপোর্ট, শিক্ষা সনদ ও নম্বরপত্র ও এর আরবি অনুবাদ, মেডিক্যাল সার্টিফিকেট ও এর আরবি অনুবাদ, প্রশংসাপত্র ও এর আরবি অনুবাদ, পাসপোর্ট সাইজ ছবি, ভোটার আইডি কার্ড, জীবনবৃত্তান্ত, দুজন প্রসিদ্ধ ইসলামী ব্যক্তিত্ব বা শিক্ষাবিদের কাছ থেকে দুটি প্রত্যয়নপত্র, আরবি ভাষা কোর্সের সনদ ও হিফজ সনদ (যদি থাকে)। বিশেষ ক্ষেত্রে গবেষণাপত্র থাকা প্রয়োজন। এসব কাগজের পাশাপাশি মেয়ে শিক্ষার্থীর ক্ষেত্রে সৌদি আরবে অবস্থানরত মাহরামের ইকামা ও পাসপোর্ট এবং বৈবাহিক ক্ষেত্রে কাবিননামা ও এর অনুবাদ প্রয়োজন হয়। এর মধ্যে শিক্ষাগত যোগত্যার সনদ, জন্ম সনদ, পুলিশ ক্লিয়ারেন্সসহ প্রয়োজনীয় কাগজগুলো সংশ্লিষ্ট শিক্ষাবোর্ড ও মন্ত্রণালয় থেকে সত্যায়ন করতে হয়।