ফিলিস্তিন ও অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার অধিবাসীদের প্রতি সংহতি জানিয়ে বিশ্বব্যাপী বিশেষ দোয়া অনুষ্ঠিত হয়েছে। গত শুক্রবার মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো ছাড়াও যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, যুক্তরাজ্য, দক্ষিণ কোরিয়া, তুরস্ক, মিসর, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকাসহ বিশ্বের মসজিদগুলোতে ফিলিস্তিনিদের শান্তি ও নিরাপত্তা কামনায় জুমার নামাজের পর বিশেষ দোয়া করা হয় এবং গাজায় যুদ্ধবিরতি ও মানবিক অধিকার প্রতিষ্ঠার দাবিতে পদযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়।
বিশেষত মক্কার পবিত্র মসজিদুল হারামে জুমার খুতবায় ফিলিস্তিনের স্বাধীনতা এবং সেখানকার অধিবাসীদের শান্তি ও নিরাপত্তা প্রার্থনা করে দোয়া করা হয়। জুমার খুতবায় পবিত্র মসজিদুল হারামের খতিব শায়খ ড. ফয়সাল বিন জামিল গাজাবি এই প্রার্থনা করেন। তিনি বলেন, ‘হে আল্লাহ, আপনি ফিলিস্তিনে আমাদের ভাইদের সাহায্য করুন। হে আল্লাহ, আপনি তাদের শক্তিমত্তা, বিজয় ও সাহায্য দান করুন। তাদের দুঃখ ও সংকট দূর করুন, তাদের অবিচল রাখুন, তাদের অসুস্থ, যুদ্ধাহতদের সুস্থ করুন এবং নিহতদের শহীদের মর্যাদা দান করুন।’
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে জুমার পর অবরুদ্ধ গাজায় যুদ্ধ বন্ধের দাবিতে শোভাযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়। ওয়াশিংটন ডিসির ক্যাপিটল হিল ভবনের পাশে ফিলিস্তিনে স্বাধীনতা ও গাজায় যুদ্ধবিরতির দাবিতে অবস্থান কর্মসূচিতে মুসলিমদের পাশাপাশি ইহুদি রাব্বি ও খ্রিস্টানরা অংশ নেন। সেখানে তাঁরা জুমার নামাজ আদায়ের পর ‘ফিলিস্তিন স্বাধীন করো’ এবং ‘গণহত্যা বন্ধ করো’ স্লোগান দিতে থাকেন। শোভাযাত্রায় অংশ নিয়ে নারী কংগ্রেস সদস্য উইম্যান কোরি বুশ বলেন, ‘আমরা একসঙ্গে একত্র হয়েছি এবং আপনারা এখানে একাকী নন।’ নারী কংগ্রেস সদস্য রাশিদা তালিব বলেন, ‘মানুষের নীরবতার সুযোগে গাজায় গণহত্যা চালানো হচ্ছে। ’ তিনি বাইডেনকে যুদ্ধবিরতির পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান।
ফিলিস্তিনের প্রতি সংহতি জানিয়ে ইহুদি রাব্বি ইসরইল ডভিড ওয়েইস বলেন, ‘আমাদের এখানে দাঁড়িয়ে থাকার প্রতি মিনিটে গাজায় বোমা মেরে ফিলিস্তিনিদের হত্যা করা হচ্ছে। আমরা হাজার বছর ধরে একসঙ্গে শান্তিতে বসবাস করেছি। আমরা সব আরব ও মুসলিম দেশে বসবাস করে উন্নতি লাভ করেছি। ক্রুসেডের সময় আরব ও মুসলিম দেশগুলো আমাদের রক্ষা করেছিল। এটি ছিল পবিত্র এই ভূমির সুন্দরতম দিক। কিন্তু জায়নবাদী রাষ্ট্র তা ধ্বংস করেছে। ইহুদি ধর্ম মতে এমন কার্যক্রম তাওরাতের শিক্ষার পরিপন্থী।’
এদিকে মিসরের বিভিন্ন স্থানে এক দশক পর ফিলিস্তিন ইস্যুতে জুমার পর বিশাল মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। ২০১৩ সালে প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাতাহ আল-সিসির ক্ষমতা গ্রহণের পর সরকারের সহায়তায় দেশটিতে এই প্রথম বিশাল জনসমাগম হয়। গাজায় যুদ্ধবিরতিসহ নিপীড়িত অধিবাসীদের অধিকার প্রতিষ্ঠা এবং স্বাধীন ফিলিস্তিন গঠনের আহ্বান জানানো হয়। তা ছাড়া বিশ্বখ্যাত আল-আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্র্যান্ড মসজিদে জুমার খুতবায় বিশেষ দোয়া করে বলা হয়, ‘হে আল-আকসা, চিন্তা কোরো না, আমরা আমাদের অন্তর ও রক্ত দিয়ে তোমাকে মুক্ত করব।’
সূত্র : টিআরটি ওয়ার্ল্ড