নামাজ মুমিন ও কাফিরের মধ্যে পার্থক্যকারী। আর এই ইবাদত পালনের অন্যতম স্থান হলো মসজিদ, যা পৃথিবীর মধ্যে আল্লাহর কাছে সবচেয়ে পছন্দের জায়গা। নবীজি (সা.) বলেন, ‘আল্লাহর কাছে সর্বোত্তম জায়গা মসজিদ, আর সর্বনিকৃষ্ট জায়গা বাজার।’ (মুসলিম, হাদিস : ৬৭১)
মসজিদের আদব
(১) (২) (৩) মসজিদে প্রবেশকালে বিসমিল্লাহ, রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর ওপর দরুদ ও হাদিসে বর্ণিত মসজিদে প্রবেশের দোয়া পড়া।(আবু দাউদ, হাদিস : ৪৬৫)
(৪) ডান পা দিয়ে প্রবেশ করা।
(৫) ইতিকাফের নিয়তে প্রবেশ করা।
(৬) অজু অবস্থায় মসজিদে প্রবেশ করা।
(৭) কাঁচা পেঁয়াজ-রসুন, বিড়ি-সিগারেট ও দুর্গন্ধযুক্ত দ্রব্য খেয়ে মসজিদে না আসা।
(৮) মসজিদে ধীর-স্থিরতার সঙ্গে গমন করা উচিত, তাড়াহুড়া করে দৌড়ে যাওয়া ঠিক নয়। রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, ‘তোমরা নামাজে অবশ্যই ধীর-স্থিরতার সঙ্গে আসবে। যতটুকু পাবে, আদায় করবে। আর যতটুকু ছুটে যাবে, পূর্ণ করবে।’ (বুখারি, হাদিস : ৬০৯)
(৯) মসজিদে প্রবেশকারী দুই রাকাত ‘তাহিয়্যাতুল মসজিদ’ আদায় করবে।
(১০) মসজিদে দুনিয়াবি কথাবার্তা ও গল্পগুজব না করা। কারণ মসজিদ নিছক ইবাদতের জায়গা।
(১১) নিজের পোশাক থেকে উত্তম পোশাক পরিধান করা।
(১২) মসজিদকে নিছক নামাজের স্থান না বানিয়ে তাওহিদ প্রতিষ্ঠাসহ আদব রক্ষা করে অন্যান্য ধর্মীয় কার্যকলাপ চালিয়ে যাওয়া।
(১৩) সর্বদা মসজিদ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা। নিছক খাদেম ও মুয়াজ্জিনের কাজ না ভেবে যথাসম্ভব মহতী এই কাজে নিজে শরিক হওয়া। নবীজি (সা.) বলেছেন, ‘আমার উম্মতের সওয়াব (ইবাদতের প্রতিদান) আমার সামনে উপস্থাপন করা হয়েছে, এমনকি কোনো ব্যক্তি কর্তৃক মসজিদ থেকে ময়লা-আবর্জনা দূর করার সওয়াবও (যা আমার দৃষ্টিতে সব চেয়ে পুণ্যের কাজ)।’ (আবু দাউদ, হাদিস : ৪৬১)
(১৪) মসজিদে যত্রতত্র থুথু ফেলা নিষিদ্ধ। আনাস ইবনে মালিক (রা.) বলেন, নবীজি (সা.) বলেছেন, মসজিদে থুথু ফেলা গুনাহের কাজ, আর তার কাফফারা হচ্ছে তা মুছে ফেলা। (বুখারি, হাদিস : ৪১৫)
(১৫) মসজিদে কাউকে উচ্চৈঃস্বরে ডাকাডাকি না করা। প্রয়োজনে ইশারার মাধ্যমে সংশোধন করা।
(১৬) মসজিদে বেশি থেকে বেশি সময় দেওয়া। এ ক্ষেত্রে নামাজের ওয়াক্তগুলোতে সবার আগে আসার চেষ্টা করা।
(১৭) মসজিদে হেঁটে আসা। নবীজি (সা.) বলেন, আমি কি তোমাদের এমন বস্তুর সন্ধান দেব না, যা দ্বারা আল্লাহ তাআলা গুনাহ মিটিয়ে দেবেন এবং মর্যাদা বৃদ্ধি করে দেবেন? তাহলো কষ্টকর অবস্থায়ও পূর্ণরূপে অজু করা, মসজিদের দিকে বেশি পদচারণ এবং এক সালাতের পর অন্য সালাতের জন্য অপেক্ষা করা। (মুসলিম, হাদিস : ২৫১)
(১৮) মসজিদে অবস্থানরত সময় জিকির, তাসবিহ-তাহলিলের মাধ্যমে পার করা।
(১৯) মসজিদে থাকা অবস্থায় আজান হলে নামাজ আদায় করে বের হওয়া।
(২০) মসজিদ থেকে বের হওয়ার সময় প্রবেশ করার মতো বিসমিল্লাহ, নবী (সা.)-এর প্রতি দরুদ ও দোয়া পড়া এবং বাম পা দিয়ে বের হওয়া।