পবিত্র কাবাঘরে ১২০ কেজি স্বর্ণের নতুন গিলাফএ বছর পবিত্র হজের খুতবা দেবেন পবিত্র মসজিদুল হারামের ইমাম ও খতিব শায়খ ড. সালেহ বিন হুমাইদজুলুমকারীদের জন্য আখেরাতে কঠিন শাস্তি অপেক্ষা করছেকোরআন ও হাদিসে নারীর সামাজিক ও রাজনৈতিক অধিকারযে পদ্ধতিতে হজ করা উত্তম
No icon

সফরে নামাজ কসর করা কি জরুরি?

কেউ তার আবাস থেকে ৪৮ মাইল বা ৭৮ কিলোমিটার দূরে যাওয়ার নিয়ত করে নিজের শহর থেকে বের হলে শরিয়তের পরিভাষায় তাকে মুসাফির বলা হয়। মুসাফির গণ্য হওয়ার জন্য সফর পরিমাণ দূরত্ব অতিক্রম করা জরুরি নয়। সফরের নিয়তে নিজের শহর থেকে বের হয়ে এক মাইল অতিক্রম করলেও সে মুসাফির গণ্য হয়।মুসাফির ব্যক্তির জন্য জোহর, আসর ও ইশার ফরজ নামাজ কসর করা অর্থাৎ চার রাকাতের জায়গা দুই রাকাত পড়া ওয়াজিব। অনেকে মনে করেন কসর করা ঐচ্ছিক এই ধারণা ঠিক নয়। সফর অবস্থায় ইচ্ছাকৃত কসর না করা গুনাহের কাজ। তাই ইচ্ছাকৃত কসর বাদ দিয়ে পূর্ণ নামাজ পড়া যাবে না।

আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, আল্লাহ তাআলা আপনাদের নবির (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) জবানে মুকিম অবস্থায় চার রাকাত ও সফর অবস্থায় দুই রাকাত নামাজ ফরজ করেছেন। (সহিহ মুসলিম: ৬৮৭)

মুসাফির ব্যক্তি যদি ভুল করে চার রাকাত বিশিষ্ট কোনো ফরজ নামাজ কসর না করে চার রাকাতই পড়ে নেয়, তাহলে দেখতে হবে সে দুই রাকাতের পর বৈঠক করেছে কি না, যদি করে থাকে তাহলে তার ওই ফরজ নামায আদায় হয়ে যাবে। এ ক্ষেত্রে প্রথম দুরাকাত ফরজ এবং শেষ দুই রাকাত নফল হবে। নামাজের ভেতরেই যদি এ ভুলের কথা মনে পড়ে, তাহলে নামাজ শেষে সাহু সিজদা দিতে হবে। হাসান বসরি (রহ.) বলেন, কোনো মুসাফির ভুলে জোহরের নামাজ চার রাকাত পড়ে ফেললে সাহু সিজদা করবেন। (মুসান্নাফ আবদুর রাযযাক: ২/৫৪১)

নামাজের ভেতরে মনে না পড়লে এবং সাহু সিজদা না দিলেও নামাজ হয়ে যাবে। আবার পড়তে হবে না।

আর যদি চার রাকাত বিশিষ্ট কোনো ফরজ নামাজ চার রাকাত পড়ে এবং মাঝের বৈঠকও করতে ভুলে যায়, তাহলে তার ফরজ বাতিল হয়ে ওই নামাজ নফল হয়ে যাবে। তাকে পুনরায় ওই ফরজ নামাজ পড়ে নিতে হবে। (আদ-দুররুল মুখতার: ২/১২৮)

জামাতে নামাজের ক্ষেত্রে করণীয়

সাফির যদি মসজিদে নামাজ পড়েন এবং সেখানে মসজিদের ইমাম নামাজ পড়ান যিনি মুসাফির নন, অথবা অন্য যে কোনো প্রেক্ষাপটে মুসাফির ব্যক্তি যদি মুকিম ইমামের পেছনে নামাজ আদায় করেন, তাহলে মুসাফির ব্যক্তি চার রাকাত বিশিষ্ট নামাজগুলো চার রাকাতই আদায় করবেন।

আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, মুসাফির যদি মুকিমদের সাথে নামাযে শরিক হয় তবে সে তাদের মত চার রাকাত নামাজ পড়বে। (মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা: ৩৮৪৯)

মসজিদের জামাতে বা মুকিমদের জামাতে অংশগ্রহণ করে মুসাফির ব্যক্তি মাসবুক হলে অর্থাৎ এক, দুই বা তিন রাকাত পেলে তাকে চার রাকাতই পড়তে হবে।

আবু মিজলায (রহ.) বলেন, আমি আবদুল্লাহ ইবনে ওমরকে (রা.) জিজ্ঞাসা করলাম, মুসাফির অবস্থায় যদি আমি মুকিমের পেছনে এক রাকাত পাই তাহলে করণীয় কী? জবাবে তিনি বললেন, মুকিমের মতো পূর্ণ নামাজ পড়বে। (মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক: ৪৩৮১)

মাগরিব ও ফজরে কসর নেই

মাগরিব ও ফজরে কসর নেই। এ দুই ওয়াক্তের ফরজ নামাজ যথাক্রমে তিন রাকাত ও দুই রাকাতই আদায় করতে হবে।

ফরজ ছাড়া অন্য নামাজগুলোও কসর করার নিয়ম নেই। তাই সেগুলো আদায় করলে পরিপূর্ণভাবেই আদায় করতে হবে। বেতর তিন রাকাতই আদায় করতে হবে। তবে সুন্নাতে মুআক্কাদা নামাজ অর্থাৎ পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের ফরজের সাথে প্রতিদিন যে বারো রাকাত সুন্নাত নামাজ আমরা আদায় করে থাকি, এগুলো সফর অবস্থায় আবশ্যক থাকে না। ক্লান্তি বা ব্যস্ততা থাকলে এই নামাজগুলো ছেড়ে দেওয়া যেতে পারে। তবে সময় সুযোগ থাকলে পড়ে নেওয়াই উত্তম।