কোরআনের চর্চা অব্যাহত রাখা আবশ্যকশাওয়ালের ছয় রোজার ফজিলতসৌদিসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে উদযাপিত হচ্ছে ঈদুল ফিতরবৃহস্পতিবার পবিত্র ঈদুল ফিতরপবিত্র কাবা শরীফ থেকে তিন কিলোমিটার দূর গেলো তারাবির নামাজের কাতার
No icon

কবরের পাশে গিয়ে দোয়া করা যাবে কি?

হাদিসের বর্ণনায় এসেছে, আল্লাহ তাআলা নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে কবরবাসীদের জন্য দোয়া করার নির্দেশ দিয়েছেন। এখন প্রশ্ন হলো- আত্মীয় স্বজনের জন্য দোয়া করতে কবরের পাশে দাঁড়িয়ে দোয়া করা যাবে কি?

হ্যাঁ, আত্মীয়-স্বজনের জন্য কবরস্থানে গিয়ে কবরের পাশে দাঁড়িয়ে দোয়া করা যাবে। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মৃতব্যক্তির জন্য দোয়া করতেন। তিনি মসজিদে নববির পাশে অবস্থিত বাকিউল গারক্বাদ নামক কবরস্থানে গিয়েও কবরবাসীর জন্য দোয়া করেছেন। সুতরাং আত্মীয়-স্বজনের কবরের পাশে গিয়ে তাদের জন্য দোয়া করা যাবে।

কবরবাসীদের জন্য নবিজির দোয়া > السَّلاَمُ عَلَيْكُمْ دَارَ قَوْمٍ مُؤْمِنِينَ وَأَتَاكُمْ مَا تُوعَدُونَ غَدًا مُؤَجَّلُونَ وَإِنَّا إِنْ شَاءَ اللَّهُ بِكُمْ لاَحِقُونَ اللَّهُمَّ اغْفِرْ (لِاَهلِ الْقُبُوْرِ) لأَهْلِ بَقِيعِ الْغَرْقَدِ

অর্থ : তোমাদের উপর সালাম ও শান্তি বর্ষিত হোক, ওহে ঈমানদার ক্ববরবাসীগণ! তোমাদের কাছে পরকালে নির্ধারিত যেসব বিষয়ের প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছিল তা তোমাদের কাছে এসে গেছে। আল্লাহর ইচ্ছায় আমারাও তোমাদের সাথে মিলিত হব। হে আল্লাহ! (আপনি এ কবরবাসীকে ক্ষমা করে দাও) বাক্বী গারক্বাদ ক্ববরবাসীদেরকে ক্ষমা করে দাও।

উল্লেখ্য, যারা মদিনার কবরস্থান জিয়ারত করবে তারা বলবে লি-আহলিল বাকিউল গারক্বাদ । আর যারা অন্যান্য কবরস্থানে দোয়া করতে যাবে তারা বলবে- লি আহলিল কুবুরি কবরস্থানে গিয়ে দোয়া করতে আল্লাহর নির্দেশ

হজরত জিবরিল আলাইহিস সালাম বললেন, আপনার প্রভু আপনার প্রতি আদেশ করেছেন, বাকি‘র কবরবাসীদের কাছে গিয়ে তাদের জন্য দোয়া ও ইসতেগফার করতে। (তখন) হজরত আয়িশা রাদিয়াল্লাহু আনহা বলেন, আমি জিজ্ঞাসা করলাম- হে আল্লাহর রসুল! আমি তাদের জন্য কীভাবে দোয়া করব? রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, তুমি বল-

السَّلاَمُ عَلَى أَهْلِ الدِّيَارِ مِنَ الْمُؤْمِنِينَ وَالْمُسْلِمِينَ وَيَرْحَمُ اللَّهُ الْمُسْتَقْدِمِينَ مِنَّا وَالْمُسْتَأْخِرِينَ وَإِنَّا إِنْ شَاءَ اللَّهُ بِكُمْ لَلاَحِقُونَ

অর্থ : এ বাসস্থানের অধিবাসী ঈমানদার মুসলিমদের প্রতি সালাম বর্ষিত হোক। আমাদের মধ্যে থেকে যারা আগে বিদায় গ্রহণ করেছে আর যারা পিছনে বিদায় নিয়েছে সবার প্রতি আল্লাহ দয়া করুন। আল্লাহ চাহে তো আমরাও তোমাদের সাথে মিলিত হব। (মুসলিম)

السَّلاَمُ عَلَيْكُمْ أَهْلَ الدِّيَارِ مِنَ الْمُؤْمِنِينَ وَالْمُسْلِمِينَ وَإِنَّا إِنْ شَاءَ اللَّهُ لَلَاحِقُونَ أَسْأَلُ اللَّهَ لَنَا وَلَكُمْ الْعَافِيَةَ

অর্থ : হে ক্ববরবাসী ঈমানদার মুসলিমগণ! তোমাদের প্রতি শান্তি বর্ষিত হোক। আল্লাহর ইচ্ছায় আমরাও তোমাদের সাথে মিলিত হব। আমি আমাদের ও তোমাদের জন্য আল্লাহর কাছে নিরাপত্তার আবেদন জানাচ্ছি। (মুসলিম)

সুতরাং মুমিন মুসলমানের উচিত, নিজ নিজ বাবা-মা, দাদা-দাদি, নানা-নানী ও আত্মীয়-স্বজনের পাশাপাশি যে কোনো কবরস্থান দেখলে বা পেলে সেখানে একটুখানি দাঁড়িয়ে বিশ্বনবির অনুসরণে হাদিসের শেখানো দোয়া পড়া। কবরবাসীর জন্য দোয়া করার পাশাপাশি নিজেদের জন্যও দোয়া করা।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে কবরবাসীর জন্য ও নিজেদের জন্য দোয়া করার তাওফিক দান করুন। হাদিসের ওপর যথাযথ আমল করার তাওফিক দান করুন। আমিন।