জানের সদকা মানে আল্লাহর পক্ষ থেকে সুস্থতা, নিরাপত্তা ও হায়াত লাভের কারণে তাঁর শোকরিয়াস্বরূপ কিছু সদকা করা। সাধারণত সদকা বলতে অর্থসংশ্লিষ্ট বিষয় বোঝানো হয়। কিন্তু রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম প্রতিটি ভালো কথা ও ভালো কাজকে সদকার অন্তর্ভুক্ত করেছেন। এবং এগুলো জানের সদকা হিসেবে গণ্য করেছেন।আবু জার (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, সূর্য উদিত হয় এমন প্রতিটি দিন প্রত্যেক ব্যক্তির পক্ষে তার জানের ওপর সদকা আবশ্যক হয়। আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসুল (সা.), আমি কোত্থেকে দান করব? আমাদের তো ধন-দৌলত নেই। তিনি বলেন, নিশ্চয়ই সদকার শ্রেণিতে আছে আল্লাহু আকবার, সুবহানাল্লাহ, আল-হামদুলিল্লাহ, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ, আস্তাগফিরুল্লাহ, সৎকাজের আদেশ করা, অসৎকাজের নিষেধ করা, লোক চলাচলের রাস্তা থেকে কাঁটা, হাড়-হাড্ডি ও পাথর সরিয়ে দেওয়া, অন্ধকে পথ দেখিয়ে নিয়ে যাওয়া, কালা ও বোবা যাতে বুঝতে পারে সেভাবে তাদের শোনানো, কোনো প্রয়োজন পূরণের জন্য ঠিকানা সন্ধানকারীকে ঠিকানা জানা থাকলে তা বলে দেওয়া, সাহায্যের জন্য চিৎকারকারীকে সাহায্য করার জন্য দ্রুত পায়ে এগিয়ে যাওয়া, অসহায়-দুর্বলকে দুই বাহুর শক্তিতে তুলে ধরা। এসবের প্রত্যেকটি তোমার পক্ষে তোমার জানের ওপর সদকা।
এমনকি তোমার স্ত্রীর সঙ্গে তোমার মিলনেও তুমি সওয়াব পাবে। আবু জার বলেন, আমার কামনা পূরণেও কিভাবে আমার সওয়াব হবে? তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, বলো তো, তোমার যদি একটা ছেলে হয়, আর সে প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার পর তুমি তার থেকে উপকার ভোগের আশা করো; কিন্তু ইত্যবসরে সে মারা যায়, তুমি কি তার থেকে সওয়াব প্রত্যাশা করো? আমি বললাম, হ্যাঁ। তিনি বলেন, তুমি কি তাকে সৃষ্টি করেছিলে? তিনি বলেন, না; বরং আল্লাহ তাকে সৃষ্টি করেছিলেন। তিনি বলেন, তবে কি তুমি তাকে সৎপথে কায়েম রেখেছিলে? তিনি বলেন, না; বরং আল্লাহ তাকে সৎপথে কায়েম রেখেছিলেন।তিনি বলেন, তবে কি তুমি তাকে খাওয়া-পরা দিয়েছিলে? তিনি বলেন, না; বরং আল্লাহ তাকে খাওয়া-পরা দিয়েছিলেন। তিনি বলেন, এভাবেই সওয়াব হবে। তুমি তোমার জননাঙ্গকে আল্লাহর হালালের মধ্যে ব্যবহার করো এবং হারাম থেকে তাকে দূরে রাখো। আল্লাহ চাইলে তাকে জীবিত রাখবেন অথবা তাকে মৃত্যু দেবেন। উভয় অবস্থাতেই তুমি সওয়াব পাবে।