শরিয়তের পরিভাষায় আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য কৃত যে কোনো দানকেই সদকা বলা হয়। সদকা ফরজ ও নফল হতে পারে। সম্পদশালী মুমিনদের জন্য প্রতি বছর নির্দিষ্ট পরিমাণ সদকা করা ফরজ যা জাকাত হিসেবে পরিচিত। যদিও আমাদের দেশে প্রচলিত অর্থে শুধু নফল দানকেই সদকা বলা হয়।জাকাত ইসলামের পঞ্চস্তম্ভের একটি। জাকাত আদায় না করা কবিরা গুনাহ। আল্লাহ তাআলা বলেন, হে মুমিনগণ, আমি তোমাদেরকে যে রিজিক দিয়েছি তা হতে ব্যয় কর, সে দিন আসার পূর্বে, যে দিন থাকবে না কোন-বেচাকেনা, না কোন বন্ধুত্ব এবং না কোন সুপারিশ। আর কাফিররাই জালিম। (সুরা বাকারা: ২৫৪)
জাকাতের বাইরে নফল সদকা করা অত্যন্ত ফজিলতপূর্ণ আমল। আল্লাহ বলেন, যারা তাদের সম্পদ ব্যয় করে রাতে ও দিনে, গোপনে ও প্রকাশ্যে। অতএব, তাদের জন্যই রয়েছে তাদের রবের নিকট তাদের প্রতিদান। আর তাদের কোন ভয় নেই এবং তারা চিন্তিতও হবে না। (সুরা বাকারা: ২৭৪)
কোরআনে আল্লাহর প্রিয় ও মুত্তাকি বান্দাদের বৈশিষ্ট্য বর্ণনা করতে গিয়ে বার বার বলা হয়েছে সদকার কথা। আল্লাহ তাআলা বলেন, তোমরা দ্রুত অগ্রসর হও তোমাদের রবের পক্ষ থেকে মাগফিরাত ও জান্নাতের দিকে, যার পরিধি আসমানসমূহ ও জমিনের সমান, যা মুত্তাকিদের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে। যারা সুসময়ে ও দুঃসময়ে দান করে এবং ক্রোধ সংবরণ করে ও মানুষকে ক্ষমা করে। আর আল্লাহ সৎকর্মশীলদের ভালবাসেন। (সুরা আলে ইমরান: ১৩৩, ১৩৪)
সদকা প্রকাশ্যে ও গোপনে করা যায়। তবে নফল সদকা গোপনে করাই উত্তম। আল্লাহ বলেন, যদি তোমরা প্রকাশ্যে দান কর তবে তাও উত্তম, আর যদি তোমরা তা গোপনে কর এবং তা অভাবগ্রস্তদেরকে দান কর, তবে তা তোমাদের জন্য আরো উত্তম, অধিকন্তু তিনি তোমাদের কিছু গুনাহ মোচন করে দেবেন। যা কিছু তোমরা করছ, আল্লাহ তার খবর রাখেন। (সুরা বাকারা: ২৭১)
এ আয়াত থেকে আমরা আরও জানতে পারি যে সদকা করলে বিপুল সওয়াব তো রয়েছেই, সদকার কারণে আল্লাহ পাপও ক্ষমা করে দেন। হাদিসে এসেছে রাসুল (সা.) বলেছেন, সদকা গুনাহ মুছে দেয় যেমন পানি আগুন নিভিয়ে দেয়। (সহিহ মুসলিম)