কোরআনের চর্চা অব্যাহত রাখা আবশ্যকশাওয়ালের ছয় রোজার ফজিলতসৌদিসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে উদযাপিত হচ্ছে ঈদুল ফিতরবৃহস্পতিবার পবিত্র ঈদুল ফিতরপবিত্র কাবা শরীফ থেকে তিন কিলোমিটার দূর গেলো তারাবির নামাজের কাতার
No icon

রোগীর সেবা করা ইবাদত

রোগীর সেবা করা মুমিন মুসলমানের পারস্পরিক দ্বীনি অধিকার। নবিজীর সুন্নাত। এটি সামাজিক কোনো দায়বদ্ধতা নয়। রোগীর প্রতি সমবেদনা, সহানুভূতি ও সহযোগিতা করা উত্তম ইবাদত। বরং তা থেকে বিরত থাকা আল্লাহ থেকে বিরত থাকার শামিল। হাদিসের একাধিক বর্ণনা থেকে তা প্রমাণিত।

১. নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, 'কেয়ামতের দিন আল্লাহ বলবেন, হে আদম সন্তান! আমি অসুস্থ ছিলাম, তুমি আমাকে সেবা করনি। বান্দা বলবে, হে প্রভু! আপনি তো সব সৃষ্টির প্রতিপালক, আমি কীভাবে আপনার সেবা করতাম? তখন আল্লাহ বলবেন, আমার অমুক বান্দা অসুস্থ হয়েছিল, তুমি তার সেবা করনি, তুমি যদি তার সেবা করতে তাহলে সেখানে আমাকে পেতে!' (মুসলিম)

২. রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, এক মুসলমানের উপর অপর মুসলমানের ৬টি হক রয়েছে।

এর মধ্যে একটি হলো- কোনো মুসলমান যখন অসুস্থ হয়ে যাবে তখন তার সেবা করা।' (মুসলিম) অসুস্থ ব্যক্তির খোঁজ খবর নেয়া বা তাকে দেখতে যাওয়া বা তার যে কোনো সহযোগিতায় রয়েছে অনেক ফজিলত ও মর্যাদা। হাদিসে আরও এসেছে-

৩. হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, যখন কোনো বান্দা তার অসুস্থ মুসলমান ভাইকে দেখতে যায় অথবা তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করার জন্য যায় তখন একজন ফেরেশতা উচ্চস্বরে আকাশ থেকে চিৎকার করে বলেন- তুমি ভালো থাক, তোমার চলাফেরা ভালো ছিল, তুমি বেহেশতে ঠিকানা করে নিয়েছ।' (তিরমিজি) মুমিন ‍মুসরমান রোগী দেখতে গিয়ে তার জন্য দোয়া করেন। দোয়া করাও ইবাদত। নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নিজে রোগীর জন্য দোয়া করতেন। অন্যদের দোয়া করার উপদেশ দিয়েছেন। রোগীর সুস্থতায় তিনি পড়তেন।

১. রোগীর সুস্থতায় পড়তেন-

أَسْأَلُ اللهَ الْعَظِيْمَ رَبَّ الْعَرْشِ الْعَظِيْمِ اَن يَشْفِيَكَ উচ্চারণ : 'আসআলুল্লাহাল আজিমা রাব্বাল আরশিল আজিমি আঁই-ইয়াশফিয়াকা।

অর্থ : 'আমি মহান আরশের মালিক আল্লাহর কাছে তোমার সুস্থতার জন্য প্রার্থনা করছি।' (মিশকাত)

২. রোগীকে সান্ত্বনা দিয়ে বলতেন- لَا بَاْسَ طُهُوْرَ اِنْ شَاءَ اللهُ উচ্চারণ : 'লা বাসা তুহুরা ইনশাআল্লাহ' অর্থ

: 'ভয়ের কোনো কারণ নেই, আল্লাহর ইচ্ছায় সুস্থ হয়ে যাবে।'

৩. রোগীর কষ্ট লাগবে পড়তেন- اَللَّهُمَّ اَذْهِبِ الْبَاْسَ رَبَّ النَّاسِ اِشْفِهِ وَ اَنْتَ الشَّافِىْ لَا شِفَاءَ اِلَّا شِفَاءٌ لَّا يُغَادِرُ سُقْمًا উচ্চারণ : 'আল্লাহুম্মা আজহিবিল বাসা রাব্বান্নাসি ইশফিহি ওয়া আংতাশ শাফি লা শিফাআ ইল্লা শিফাউ লা ইয়ুগাদিরু সুক্বমা।'

অর্থ : 'হে আল্লাহ! এ কষ্টকে দূর করে দাও। হে মানুষের প্রভু! তাকে সুস্থতা দান কর। তুমিই সুস্থতা দানকারী। তুমি ছাড়া আর কারো কাছে সুস্থতার আশা নেই। এমন সুস্থতা দান কর যে, রোগের নাম নিশানাও না থাকে।' (বুখারি ও মুসলিম) সুতরাং যারা অসুস্থ তাদের মনোবল বাড়াতে বেশি বেশি খোঁজ খবর নেয়াসহ মানসিকভাবে তাদের সান্ত্বনা দেওয়া সুন্নাত ও ইবাদত। মুমিন মুসলমানের একান্ত করণীয় রোগীর পাশে থাকা। তাদের সেবা করা। রোগীর সেবা করার মাধ্যমে নিজেদের ইবাদতে শামিল করা। আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে হাদিসের নির্দেশনা অনুযায়ী রোগীর সেবা করার মতো ইবাদত ও তাদের জন্য দোয়া করার তাওফিক দান করুন। আমিন।