কোরআনের চর্চা অব্যাহত রাখা আবশ্যকশাওয়ালের ছয় রোজার ফজিলতসৌদিসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে উদযাপিত হচ্ছে ঈদুল ফিতরবৃহস্পতিবার পবিত্র ঈদুল ফিতরপবিত্র কাবা শরীফ থেকে তিন কিলোমিটার দূর গেলো তারাবির নামাজের কাতার
No icon

অসহায় মানুষকে শীতবস্ত্র দেওয়াও ইবাদত

বাড়ছে শীত। ঘন কুয়াশায় সূর্যও দেখা যায় না। শীতের তীব্রতায় বস্ত্রহীন অসহায় মানুষের ভোগান্তি চরমে। তাই সাধ্যমতো শীতবস্ত্র দিয়ে শীতার্ত মানুষের পাশে দাঁড়ানো খুবই জরুরি। বস্ত্রহীন মানুষকে শীতবস্ত্র দানও ইবাদত। তাতে মহান আল্লাহ মানুষকে পুরস্কৃত করবেন বলে ঘোষণা দিয়েছেন স্বয়ং বিশ্বনবি।নিজেদের অতিরিক্ত শীতের কাপড় থাকলে তা দিয়ে হলেও সহযোগিতা করা উচিত। প্রিয়নবি হজরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, কোনো মুসলমান কোনো মুসলমানকে বস্ত্রহীন অবস্থায় বস্ত্র দান করলে, আল্লাহ তাআলা তাকে জান্নাতে সবুজ বর্ণের পোশাক পরাবেন। খাদ্য দান করলে তাকে জান্নাতের ফল খাওয়াবেন। পানি পান করালে এরচেয়েও উত্তম পানীয় পান করাবেন। (আবু দাউদ)মনে রাখতে হবে, দরিদ্র মানুষের জন্য শীতবস্ত্র বিতরণ গুরুত্বপূর্ণ মানবসেবা। এটি সওয়াবের কাজও বটে। বদরের যুদ্ধবন্দি হজরত আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহুকেও রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পোশাকের ব্যবস্থা করে দিয়েছিলেন।

শুধু তা-ই নয়, একবার মুদার গোত্র থেকে গলায় চামড়ার আবা পরিহিত বস্ত্রহীন কিছু লোক নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে আসেন। তাদের করুণ অবস্থা দেখে প্রিয়নবির চেহারা বিষণ্ন হয়ে যায়। তিনি নামাজ শেষে সাহাবাদের লক্ষ্য করে দান-সদকার জন্য উৎসাহমূলক খুতবা দিলেন। ফলে সাহাবারা এত পরিমাণ দান করলেন যে, খাদ্য ও পোশাকের দুটি স্তূপ হয়ে যায়। তা দেখে নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অনেক আনন্দিত হলেন এবং তার চেহারা উজ্জ্বল হয়ে গেল।শীতের মৌসুমে অসহায়কে শীতবস্ত্র দান করা অনেক গুরুত্বপূর্ণ কাজ। দান করলে সম্পদ কমে না বরং তা বেড়ে যায়। তাই কষ্টে থাকা মানুষকে শীতবস্ত্র দান করলে মহান আল্লাহ আপনাকেও দান করবেন।

হাড়কাঁপানো শীতে যারা দুঃখ-কষ্টে দিনাতিপাত করছেন, তাদের পাশে দাঁড়ানো প্রতিটি মানুষের দ্বীনি ও ঈমানি দায়িত্ব। শীতবস্ত্রহীন মানুষের জন্য এমন পরিস্থিতি চরম বিপদের সমান। বিপদগ্রস্ত মানুষকে সহযোগিতা করলে মহান আল্লাহ বান্দার বিপদ দূর করে দেবেন।রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি কোনো মুমিনের পার্থিব একটি বিপদ দূর করবে, আল্লাহ তাআলা কেয়ামতের দিন তার সব বিপদ দূর করে দেবেন। আর যে ব্যক্তি কোনো অভাবি মানুষকে সচ্ছল করে দেবে, আল্লাহ তাআলা তাকে ইহকাল ও পরকালে সচ্ছল করে দেবেন। (মুসলিম)সুতরাং প্রতিটি মানুষের উচিত, অভাবি ও বস্ত্রহীন মানুষের পাশে দাঁড়ানো। সামাজিক দায়বদ্ধতা, ধর্মীয় নীতি-নৈতিকতা থেকে শীতার্ত মানুষের পাশে দাঁড়ানো জরুরি। শীতের এ প্রচণ্ড কষ্টে সামান্য সহযোগিতায় কেউ উপকৃত হলে খুশি হবেন মহান আল্লাহ। আল্লাহ আমাদের তাকে খুশি করার এ কাজে সাধ্যমতো নিজেদের শরিক হওয়ার তৌফিক দান করুন। আমিন।