যেসব জায়গায় জুমার নামাজ শুদ্ধ হয় নাঅজুর সময় কথা বলা কি নাজায়েজ?কোরআনের চর্চা অব্যাহত রাখা আবশ্যকশাওয়ালের ছয় রোজার ফজিলতসৌদিসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে উদযাপিত হচ্ছে ঈদুল ফিতর
No icon

ইসলামে সালামের গুরুত্ব ও ফজিলত

ইসলামে সালামের গুরুত্ব ও ফজিলত অনেক। শান্তির ধর্ম ইসলাম আর ইসলামে আছে সব ধরনের দিকনির্দেশনা। মানব জীবনের সব সমাধান নির্ধারিত আছে ইসলামে। ইসলামের শান্তির প্রতীকগুলোর মধ্যে আছে সালাম এবং সালাত। আসসালামু আলাইকুম ওয়ারহমাতুল্লাাহি ওয়াবারাকাতুহর অর্থ হচ্ছে আপনার ওপর আল্লাহর শান্তি, রহমত ও বরকত বর্ষিত হোক। সালামকে আমরা সংক্ষেপে আসসালামু আলাইকুম বলি। সালামের উত্তর হলো ওয়া আলাইকুমুস সালাম ওয়ারহমাতুল্লাহি ওয়াবারাকাতুহ। অর্থাৎ আপনার ওপরেও আল্লাহর শান্তি, রহমত ও বরকত বর্ষিত হোক। যার সংক্ষেপ ওয়ালাইকুমুস সালাম।

সালাম দেওয়া-নেওয়া কোনো ব্যক্তি বিশেষের সঙ্গে সীমাবদ্ধ নয়। পরস্পর দেখা হলে একে অপরকে সালাম বিনিময় করে থাকি। সালাম একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। একজন মুসলমানের সঙ্গে যখন অন্য মুসলমানের দেখা হয়; তখন প্রথমে সালাম দেওয়া উচিত। সালাম আরবি শব্দ। এর অর্থ হচ্ছে শান্তি, প্রশান্তি, কল্যাণ, দোয়া, শুভ কামনা। সালাম একটি সম্মানজনক, অভ্যর্থনামূলক, অভিনন্দনজ্ঞাপক, উচ্চমর্যাদাসম্পন্ন পরিপূর্ণ ইসলামি অভিবাদন। সালাম আল্লাহর সুন্দর নামসমূহের মধ্যে অন্যতম। (সুরা হাশর, আয়াত: ২৪)

আল্লাহ তাআলা প্রথমে আদি মানব হজরত আদমকে (আ.) সালাম শিক্ষা দেন। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, আল্লাহ তাআলা হজরত আদমকে (আ.) সৃষ্টি করে বলেন, যাও ফেরেশতাদের সালাম দাও। তারা তোমার সালামের কী উত্তর দেন, মন দিয়ে শোনো। এটিই হবে তোমার এবং তোমার সন্তানদের সালাম। সে অনুযায়ী হজরত আদম (আ.) ফেরেশতাদের বলেন, আসসালামু আলাইকুম। অর্থ- আপনাদের ওপর শান্তি বর্ষিত হোক। ফেরেশতারা উত্তরে বলেন, আসলামু আলাইকা ওয়া রহমাতুল্লাহ। অর্থ- আপনার ওপর শান্তি এবং আল্লাহর রহমত বর্ষিত হোক। অন্যের ঘরে সালাম না দিয়ে প্রবেশ করা নিষেধ। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেছেন, হে মুমিনগণ! তোমরা নিজেদের ঘর ছাড়া অন্য ঘরে প্রবেশ করো না, যে পর্যন্ত আলাপ-পরিচয় না করো এবং তাদের সালাম না করো। এটাই তোমাদের জন্য উত্তম, যাতে তোমরা স্মরণ রাখো। (সুরা নূর, আয়াত: ২৭)

সালামের ফজিলত বর্ণনা করতে গিয়ে রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, যখন দুজন মুসলমানের মধ্যে সাক্ষাৎ হয় সালাম-মুসাফাহা (করমর্দন) করে; তখন একে অপর থেকে পৃথক হওয়ার আগেই তাদের সব গুনাহ মাফ করে দেওয়া হয়। এছাড়া সালামের দ্বারা পরস্পরের হিংসা-বিদ্বেষ দূর হয়। অহংকার থেকেও বেঁচে থাকা যায়। সর্বত্র সালামের মাধ্যমে সৃষ্টি হবে একে অপরের মধ্যে ভালোবাসা ও সৌহার্দ। বিশেষ পরিস্থিতিতে সালাম দেওয়া মাকরুহ এবং জবাব দেওয়া জরুরি নয়। যেমন- নামাজরত, কোরআন শরিফ তিলাওয়াতকারী, জিকিরকারী, হাদিস পাঠদানকারী, খুতবাদানকারী এবং শ্রবণকারী, ফিকহ নিয়ে আলোচনাকারী, বিচারকাজে ব্যস্ত বিচারক, আজানরত মুয়াজ্জিন, ইকামতদানকারী যখন ইকামত দেন, পাঠদানে ব্যস্ত শিক্ষক, বিবস্ত্র লোক ও প্রাকৃতিক কাজে লিপ্ত ব্যক্তিকে সালাম দেওয়ার প্রয়োজন নেই। সালামের উত্তর দেওয়া ওয়াজিব। আল্লাহ তাআলা বলেন, আর যখন তোমাদের সালাম দেওয়া হবে; তখন তোমরা তার চেয়ে উত্তম সালাম দেবে অথবা জবাবে তা-ই দেবে। (সুরা নিসা, আয়াত: ৮৬)