কোরআনের চর্চা অব্যাহত রাখা আবশ্যকশাওয়ালের ছয় রোজার ফজিলতসৌদিসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে উদযাপিত হচ্ছে ঈদুল ফিতরবৃহস্পতিবার পবিত্র ঈদুল ফিতরপবিত্র কাবা শরীফ থেকে তিন কিলোমিটার দূর গেলো তারাবির নামাজের কাতার
No icon

এতিমের সম্পদ খাওয়া কবিরা গুনাহ!

জোরপূর্বক অন্যায়ভাবে এতিমের সম্পদ গ্রাস করা মারাত্মক অপরাধ। এটি হারাম ও কবিরা গুনাহসমূহের মধ্যে অন্যতম একটি। এতিমের সম্পদ গ্রাস করা তো দূরের কথা, এতিমের সঙ্গে কঠোরতা অবলম্বন করাও নিষেধ। আল্লাহ তাআলা এতিমের প্রতি কোমল হওয়ার নির্দেশ দেন এভাবে-
فَاَمَّا الۡیَتِیۡمَ فَلَا تَقۡهَرۡ সুতরাং আপনি এতিমের প্রতি কঠোরতা করবেন না। (সুরা দোহা : আয়াত ৯)

আল্লাহ তাআলা প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে কৃতজ্ঞতাস্বরূপ কয়েকটি বিষয়ের নির্দেশ দিয়েছেন। এর মধ্যে প্রথম নির্দেশ ছিল- এতিমের সঙ্গে কঠোর ব্যবহার না করা। কোনো পিতৃহীনকে অসহায় ও বেওয়ারিশ মনে করে তার ধন-সম্পদ জবরদস্তিমূলকভাবে নিজ অধিকারভুক্ত করে না নেওয়ার ব্যাপারে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। অন্য আয়াতে আল্লাহ তাআলা বিষয়টি সুস্পষ্ট করে তুলে ধরেছেন এভাবে-
اِنَّ الَّذِیۡنَ یَاۡکُلُوۡنَ اَمۡوَالَ الۡیَتٰمٰی ظُلۡمًا اِنَّمَا یَاۡکُلُوۡنَ فِیۡ بُطُوۡنِهِمۡ نَارًا ؕ وَ سَیَصۡلَوۡنَ سَعِیۡرًا ;নিশ্চয়ই যারা পিতৃহীনদের (এতিমদের) সম্পদ অন্যায়ভাবে গ্রাস করে, তারা আসলে নিজেদের পেটে আগুন ভক্ষণ করে। আর অচিরেই তারা (জাহান্নামের) জ্বলন্ত আগুনে প্রবেশ করবে।(সুরা নিসা : আয়াত ১০)

এতিমের সম্পদ গ্রাস করা বা দখল ধ্বংসাত্মক কাজের একটি। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ৭টি কাজকে ধ্বংসাত্মক বলেছেন; তন্মধ্যে একটি হলো- এতিমের সম্পদ গ্রাস করা। হাদিসে এসেছে-
হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, তোমরা সাতটি ধ্বংসাত্মক কাজ পরিহার করো। সাহাবায়ে কেরাম বললেন, হে আল্লাহর রাসুল! সেগুলো কি? রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন-
১. আল্লাহর সঙ্গে কাউকে শরিক করা;
২. জাদু করা।
৩. অন্যায়ভাবে (বিনাদণ্ডে) কোনো প্রাণ সংহার (হত্যা) করা।
৪. সুদ খাওয়া।
৫. এতিমের সম্পদ (অন্যায়ভাবে) গ্রাস করা।
৬. যুদ্ধের মাঠ থেকে পলায়ন করা এবং
৭. মুমিনা পবিত্ৰা (সতি-সাধবি) নারীকে মিথ্যা অপবাদ দেওয়া। (বুখারি)

সুতরাং কোরআন সুন্নাহর আলোকে এটি প্রমাণিত যে, এতিমের অধিকার হরণ, সম্পদ ভোগদখল করা শাস্তিযোগ্য মারাত্মক অপরাধ ও হারাম কাজ। তাই রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কোরআনের নির্দেশনা অনুসারে উম্মতে মুহাম্মাদির সবাইকে এতিমের প্রতি কোমল হওয়ার কথা বলেছেন। বেদনা ও কষ্টদায়ক আচরণ করতে নিষেধ করেছেন।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে এতিমের সম্পদ ভোগ-দখল করা থেকে বেঁচে থাকার তাওফিক দান করুন। এতিমের প্রতি সুন্দর ও উত্তম আচরণ করা এবং তাদের প্রতি যথাযথ সহানুভূতি দেখানোর মাধ্যমে কবিরাহ গোনাহ থেকে বেঁচে থাকার তাওফিক দান করুন। আমিন।