অজুর সময় কথা বলা কি নাজায়েজ?কোরআনের চর্চা অব্যাহত রাখা আবশ্যকশাওয়ালের ছয় রোজার ফজিলতসৌদিসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে উদযাপিত হচ্ছে ঈদুল ফিতরবৃহস্পতিবার পবিত্র ঈদুল ফিতর
No icon

‘কুরআন ও শবে কদর’ সম্পর্কে বর্ণনা

লাইলাতুল কদর ও কুরআন নাজিল প্রসঙ্গে সুস্পষ্ট ঘোষণা এসেছে এভাবে-


>حم وَالْكِتَابِ الْمُبِينِ - إِنَّا أَنزَلْنَاهُ فِي لَيْلَةٍ مُّبَارَكَةٍ إِنَّا كُنَّا مُنذِرِينَ - فِيهَا يُفْرَقُ كُلُّ أَمْرٍ حَكِيمٍ - أَمْرًا مِّنْ عِندِنَا إِنَّا كُنَّا مُرْسِلِينَ - رَحْمَةً مِّن رَّبِّكَ إِنَّهُ هُوَ السَّمِيعُ الْعَلِيمُ হা-মীম। শপথ সুস্পষ্ট কিতাবের। আমি একে (কুরআন) এক বরকতময় রাতে নাজিল করেছি। নিশ্চয়ই আমি সতর্ককারী। এ রাতে প্রত্যেক প্রজ্ঞাপূর্ণ বিষয় স্থিরীকৃত হয়। আমার পক্ষ থেকে আদেশক্রমে, আমিই প্রেরণকারী। আপনার পালনকর্তার পক্ষ থেকে রহমতস্বরূপ। তিনি সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞ। (সুরা দুখান : আয়াত ১-৬) আবার সুরা হামীম আস সাজদায় প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে মক্কার কুরাইশ সম্প্রদায় অনেক লোভনীয় প্রস্তাব দিয়েছে। সেসব লোভনীয় প্রস্তাবের বিপক্ষে আল্লাহ তাআলা তাদের প্রতি চ্যালেঞ্জ ঘোষণা করেছেন এভাবে-


إِلَيْهِ يُرَدُّ عِلْمُ السَّاعَةِ وَمَا تَخْرُجُ مِن ثَمَرَاتٍ مِّنْ أَكْمَامِهَا وَمَا تَحْمِلُ مِنْ أُنثَى وَلَا تَضَعُ إِلَّا بِعِلْمِهِ وَيَوْمَ يُنَادِيهِمْ أَيْنَ شُرَكَائِي قَالُوا آذَنَّاكَ مَا مِنَّا مِن شَهِيدٍ
কেয়ামতের জ্ঞান একমাত্র তাঁরই জানা। তাঁর জ্ঞানের বাইরে কোনো ফল আবরণমুক্ত হয় না। এবং কোনো নারী গর্ভধারণ ও সন্তান প্রসব করে না। যেদিন আল্লাহ তাদেরকে ডেকে বলবেন, আমার শরীকরা কোথায়? সেদিন তারা বলবে, আমরা আপনাকে বলে দিয়েছি যে, আমাদের কেউ এটা স্বীকার করে না। (সুরা হা-মীম : আয়াত ৪৭) সুরা হা-মীম আস-সাজদা : আয়াত (৪৭-৫৪) মক্কায় অবতীর্ণ এ সুরাটি সাজদা, হা-মীম আস-সাজদা, মাসাবিহ ও ফুসসিলাত নামে পরিচিত। এ সুরায় বিশ্বনবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের রিসালাতের বর্ণনা এসেছে। পাশাপাশি মৃত্যুর পর মানুষের যে জীবন আসবে, সে সম্পর্কেও আলোকপাত করা হয়েছে। তাই যারা বিশ্বনবির প্রতি ঈমান আনয়নে অনীহা প্রকাশ করে এবং তার বিরোধীতা করে, তাদের উদ্দেশ্যে কঠোর সতর্কবানী উচ্চারিত হয়েছে এ সুরায়। মক্কার কুরাইশদের বিভিন্ন প্রকার লোভনীয় প্রস্তাবের প্রেক্ষিতে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এ সুরা দিয়ে জবাব দিয়েছিলেন। মুমিন এবং কাফেরদের মধ্যে পার্থক্য করা হয়েছে এ সুরায়।

সুরা শুরা : আয়াত ৫৩ সুরাটি মক্কায় নাজিল হয়। সুরার শুরুতেই ওহির কথা বলা হয়েছে। আর ওহি কিভাবে নাজিল হতো পরিসমাপ্তি তা আলোচিত হয়েছে। এতে প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের রিসালাতের প্রমাণ, কুরআনের শ্রেষ্ঠত্ব ও মাহাত্ম্য বর্ণনার পর তাঁকে সান্ত্বনা দিয়ে আল্লাহ বলেন, কাফেরদের নির্যাতনে ব্যথিত হবেন না। সুরার সংক্ষিপ্ত আলোচ্যসূচি তুলে ধরা হলো-
নবির পরিবারের সম্মান ও মহব্বত সম্পর্কিত বিষয়;


তাওবাহর স্বরূপ;
দুনিয়াতে সম্পদের প্রাচুর্য ও ধ্বংসের কারণ;
পরামর্শের পন্থা ও গুরুত্ব;


; ক্ষমা ও প্রতিশোধ গ্রহণের ফয়সালা প্রসঙ্গ। সুরা যুখরূফ : আয়াত ৮৯ সুরাটি মাক্কী। ওহি ও কুরআনের মাহাত্ম্য বর্ণনায় সুরাটি আরম্ভ করা হয়েছে। কুরআনুল কারিম আল্লাহর পক্ষ থেকে নাজিলকৃত ঘোষণা দিয়েই রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নবুয়তের প্রমাণ উপস্থাপন করা হয়েছে। যারা তাঁকে অস্বীকার করে, তাদের উদ্দেশ্যে কঠোর শাস্তির সতর্কবানীও করা হয়েছে। < কুরআনের সত্যতা ও বিশ্বনবির রিসালাতের প্রমাণ উপস্থাপন করা হয়েছে। কুরআনের অস্বীকারকারীদের শাস্তির বিধান ঘোষণা করা হয়েছে। সুরাটির সংক্ষিপ্ত আলোচ্যসূচি তুলে ধরা হলো-


; জীবিকা বণ্টনের প্রাকৃতিক পদ্ধতি;
; সামাজিক সাম্য ও ইসলামিক সাম্যের স্বরূপ;


আল্লাহর স্মরণ থেকে গাফেল হওয়ার পরিণতি। সুরা দুখান : আয়াত ৫৯ বরকতময় রজনীতে নাজিল হওয়া কুরআনের এ সুরাটি মাক্কী। এতে কুরআনের মর্যাদা, মাহাত্ম্য ও শ্রেষ্ঠত্ব আলোচিত হয়েছে। বিশেষ করে এ সুরায় তুব্বা সম্প্রদায়ের কথা আলোচিত হয়েছে। তাদের ইসলাম গ্রহণ এবং পরবর্তীতে ধ্বংস প্রাপ্ত হওয়ার বিবরণ বর্ণিত হয়েছে। সুরা জাসিয়া : আয়াত ৩৭ সুরাটি মক্কায় অবতীর্ণ। এ সুরার মূল বিষয়বস্তু হলো মানুষের আক্বিদা বিশ্বাসের সংশোধন সম্পর্কিত আলোচনা। তাই এতে তাওহিদ, রিসালাত, পরকালের প্রমাণ উপস্থাপিত হয়েছে। কাফের অবিশ্বাসীদের সন্দেহের অবসানে প্রমাণ উপস্থাপন করা হয়েছে। আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে কুরআনের এ গুরুত্বপূর্ণ সুরাগুলো বুঝে পড়ার এবং তাঁর ওপর আমল করার পাশাপাশি নিজেদের আকিদা-বিশ্বাসকে শিরকমুক্ত রাখার তাওফিক দান করুন। আমিন।