ইনসাফ ও ইহসান এমন দুটি গুণ, যেগুলো অর্জন করলে ইহকালীন ও পরকালীন জীবন সুখময় হয়। পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ বলেন, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ ইনসাফ, (ইহসান) সদাচার ও নিকট আত্মীয়দের দান করার আদেশ দেন এবং তিনি অশ্লীলতা, মন্দ কাজ ও সীমা লঙ্ঘন থেকে নিষেধ করেন। তিনি তোমাদের উপদেশ দেন, যাতে তোমরা উপদেশ গ্রহণ করো।’ (সুরা : আন নাহল, আয়াত : ৯০)
উপরোক্ত আয়াতে মহান আল্লাহ প্রথমত তাঁর বান্দাদের ইনসাফের নির্দেশনা দিয়েছেন। তাফসিরবিদদের মতে, এখানে ইনসাফের অর্থ ব্যাপক। ইনসাফ দ্বারা উদ্দেশ্য হলো, প্রথমত আল্লাহর হক আদায়ের ক্ষেত্রে ইনসাফ করা। সৃষ্টিকর্তা ও পালনকর্তা একমাত্র উপাস্য মহান আল্লাহর একত্ববাদে মনে-প্রাণে বিশ্বাস করা। আল্লাহর সঙ্গে কাউকে শরিক করা থেকে বিরত থাকা। যা ওয়াজিব নয় তা অতিরিক্ত প্রদান করা। যেমন–অতিরিক্ত সদকা। (ফাতহুল কাদির)
ইহসান দুই প্রকার–এক. সৃষ্টিকর্তার ইবাদতে ইহসান। যেমন–ইবাদতের ক্ষেত্রে ইহসানের অর্থ হাদিসে জিবরিলে ব্যাখ্যা করা হয়েছে। ইরশাদ হয়েছে, লোকটি (জিবরিল) জিজ্ঞেস করল, ইহসান কী? তিনি বলেন, ইহসান হচ্ছে আল্লাহর ইবাদত এমন নিষ্ঠার সঙ্গে করবে, যেন তুমি তাঁকে দেখছ। আর যদি তুমি তাঁকে দেখতে না পাও, তবে (জানবে) আল্লাহ তোমাকে দেখছেন। (বুখারি, হাদিস : ৪৭৭৭)
আবার বান্দার আচরণে ইহসানের অর্থ হলো, মানুষের সঙ্গে সদাচরণ করা। তাদের প্রাপ্য হক আদায় করা। যেমন–পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ বলেছেন, ‘তোমরা ইবাদত করো আল্লাহর, তাঁর সঙ্গে কোনো কিছুকে শরিক কোরো না। আর সদ্ব্যবহার করো মাতা-পিতার সঙ্গে, নিকট আত্মীয়ের সঙ্গে, এতিম, মিসকিন, নিকট আত্মীয়-প্রতিবেশী, অনাত্মীয়-প্রতিবেশী, পার্শ্ববর্তী সাথি, মুসাফির এবং তোমাদের মালিকানাভুক্ত দাস-দাসীদের সঙ্গে। নিশ্চয়ই আল্লাহ পছন্দ করেন না তাদের যারা দাম্ভিক, অহঙ্কারী।’ (সুরা : নিসা, আয়াত : ৩৬)