কোরআনের চর্চা অব্যাহত রাখা আবশ্যকশাওয়ালের ছয় রোজার ফজিলতসৌদিসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে উদযাপিত হচ্ছে ঈদুল ফিতরবৃহস্পতিবার পবিত্র ঈদুল ফিতরপবিত্র কাবা শরীফ থেকে তিন কিলোমিটার দূর গেলো তারাবির নামাজের কাতার
No icon

অন্যায়ের প্রতিবাদ না করায় যে শাস্তি পেয়েছিলো ইয়াহুদিরা

শনিবার ছিল ইয়াহুদিদের ইবাদাতের দিন। আল্লাহর পক্ষ থেকে এ দিন মাছ শিকারে নিষেধাজ্ঞা ছিল। কিন্তু তারা কিছু কৌশল অবলম্বন করার মাধ্যমে আল্লাহর হুকুমের লঙ্ঘন করতো। আল্লাহ তাআলার বিধানের লঙ্ঘনের কারণে তাদের ওপরও আজাব এসেছিলো। যারা এ অন্যায় কাজ করা ব্যক্তিদের ব্যাপারে প্রতিবাদ করেনি বা এ অন্যায় কাজ করতে বাঁধা দেয়নি তারাও সমপরিমাণ শাস্তি ভোগ করেছিলো। পক্ষান্তরে যারা এ অন্যায়ের প্রতিবাদ করেছে এবং অন্যায়কারীদের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করেছে; কেবল তারাই মুক্তি পেয়েছিল। অন্যায়কারীদের এবং প্রতিবাদ না করার শাস্তি কী ছিল?

আল্লাহর নিষেধাজ্ঞায় কৌশল অবলম্বন নিয়ে ইয়াহুদিরা তিন দলে বিভক্ত হয়ে পড়ে। এ ঘটনাটি মুসলিম উম্মাহর জন্য বিশেষ শিক্ষা। আল্লাহর বিধানের লঙ্ঘনের প্রতিবাদ না করায় ইয়াহুদিরা আজাবের সম্মুখীন হয়েছিলেন। তাদের মধ্যে যার তিন দলে বিভক্ত হয়ে পড়েছিলো। তাদের অবস্থা ছিল এই-

প্রথম দল : অপরাধী

যারা আল্লাহ হুকুম লঙ্ঘন করে শনিবারে মাছ শিকারের অপকৌশল গ্রহণ করেছিলো। ফলে তারা আল্লাহর শাস্তির সম্মুখীন হয়। তাদের সবাইকে আল্লাহ তাআলা বানরে পরিণত করে দেন। তাদের পুরুষরা বড় বড় বানরে পরিণত হয়। আর স্ত্রীরা বানরীতে রূপান্তরিত হয় এবং শিশুরা ছোট বানরে পরিণত হয়।

দ্বিতীয় দল : প্রতিবাদ না করায় অপরাধী

যারা তাদের মধ্যকার অন্যায় কৌশল গ্রহণকারীদের আল্লাহর অবাধ্য হওয়া থেকে বিরত রাখতে চেষ্টা করেনি এবং তাদের সঙ্গে সম্পর্কও ছিন্ন করেনি। তারাও আল্লাহর গজবে নিপতিত হয় এবং বানরে পরিণত হয়। কারণ তারা তাদের সম্মুখে সংঘটিত অন্যায়ের প্রতিবাদ না করাই ছিল তাদের অপরাধ।

তৃতীয় দল : প্রতিবাদ ও সম্পর্ক ছিন্ন করায় পেয়েছিল মুক্তি

যারা তাদের অন্যায়ের প্রতিবাদ করে এবং অন্যায়কারীরা তাদের প্রতিবাদের পরেও আল্লাহর অবাধ্য হওয়ার কারণে তাদের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করে এবং তাদের বাসস্থানের মধ্যে চলাচলের রাস্তা ছাড়া সীমানা তৈরি করে আলাদা হয়ে যায়। যার ফলশ্রুতিতে আল্লাহ তাআল তাদেরকে এ গজব থেকে হেফাজত করেন।

এ কারণেই সমাজে কারো সামনে অন্যায় সংঘটিত হলে এর ঘটনমূলক প্রতিবাদ করা ঈমানের একান্ত দাবি। অন্যায় সংঘটিত হলে কীভাবে অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে হবে সে সম্পর্কে হাদিসে দিকনির্দেশনা দিয়েছেন স্বয়ং বিশ্বনবি। হাদিসে এসেছে-

হজরত আবু সাঈদ খুদরি রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন তিনি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বলতে শুনেছেন, তিনি বলেছেন, তোমাদের কেউ কোনো অন্যায় সংঘটিত হতে দেখলে সে যেন তা নিজ হাতে প্রতিরোধ করে। (নিজ হাতে প্রতিরোধ করতে) সম্ভব না হলে যেন মুখে প্রতিবাদ করে। যদি তাও সম্ভব না হয় তবে যেন অন্তত মন থেকে ঘৃণা করে। (ঘৃণার আরেক অর্থ হলো- নিরবে নিরবে অন্যায় বন্ধে প্রচেষ্টা চালিয়ে যাওয়া।) এটা দুর্বলতম ঈমানের আলামত। (মুসলিম)

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে তাঁর অবাধ্য হওয়া থেকে হেফাজত করুন। অন্যায়ের প্রতিবাদ করার ক্ষেত্রে হাদিসের দিকনির্দেশনা মেনে চলার তাওফিক দান করুন। আমিন।