সুইডেনের রাজধানী স্টকহোমে ইসরায়েলি দূতাবাসের সামনে ধর্মীয় গ্রন্থ অবমাননার বিরুদ্ধে অভিনব পন্থায় প্রতিবাদ করেন সিরিয়ান বংশোদ্ভূত এক মুসলিম তরুণ। গত শুক্রবার আহমদ আলুশ নামের এই তরুণ পুলিশের অনুমোদন পেয়েও ইহুদি ও খ্রিস্টানদের ধর্মীয় গ্রন্থ পোড়ানো থেকে বিরত থাকেন। এর মাধ্যমে তিনি পবিত্র কোরআনসহ ধর্মীয় গ্রন্থ অবমাননাকারীদের বিরুদ্ধে নিন্দা জানান।
আল-জাজিরা মুবাশির সূত্রে জানা যায়, সম্প্রতি কোরআন পোড়ানোর ঘটনার নিন্দায় সিরিয়ান বংশোদ্ভূত এক তরুণ তাওরাত ও বাইবেল পোড়াতে চাইলে পুলিশ তাকে এর অনুমতি দেয়। এরপর সেই তরুণ কোরআন হাতে এ ধরনের কাজে অংশ না নেওয়ার কথা জানান। আহমদ আলুশ জানান, এই ঘটনার মাধ্যমে তিনি পবিত্র গ্রন্থগুলো না পোড়ানোর বিষয়ে সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চান। তিনি বলেন, ‘আমি একজন মুসলিম। বিভিন্ন ধর্মের সম্মানিত গ্রন্থগুলো আমি পোড়াতে পারি না। মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ও বিভিন্ন সম্প্রদায়ের প্রতি অসদাচরণের মধ্যে পার্থক্য এটি।’
তিনি আরো বলেন, ‘মতপ্রকাশের স্বাধীনতার যে সীমারেখা রয়েছে তা সবার সামনে তুলে ধরা খুবই জরুরি। এ বিষয়ে সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করতেই আমি পুলিশের কাছ থেকে অনুমোদন গ্রহণ করি। তবে এর মাধ্যমে কোনো ধর্মীয় গ্রন্থ পোড়ানোর উদ্দেশ্য আমার নেই। একে অপরকে সম্মান জানানো আমাদের সবার কর্তব্য সে বিষয়টি তুলে ধরাই আমার উদ্দেশ্য। কারণ আমরা সবাই একটি সমাজে বসবাস করি। আপনি তাওরাত পোড়ালেন, আরেকজন বাইবেল পোড়াবে এবং অন্যজন আরেকটি গ্রন্থ পোড়াবে। তখন এখানে যুদ্ধ বেধে যাবে। তাই পবিত্র কোরআনসহ অন্যান্য ধর্মীয় গ্রন্থগুলো পোড়ানোকে ঘৃণ্য অপরাধ হিসেবে স্বাকৃতি দিতে হবে এবং এর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে।
উল্লেখ্য, গত ২৮ জুন ঈদুল আজহার দিন সুইডেনের রাজধানী স্টকহোমের কেন্দ্রীয় মসজিদের বাইরে সালওয়ান মোমিকা নামের এক ইরাকি যুবক ঘোষণা দিয়ে পবিত্র কোরআনের একটি কপি পুড়িয়ে দেয়। ‘মতপ্রকাশের স্বাধীনতা’ অজুহাতে তাদের এই কাজ করার অনুমতি দেন সুইডেনের একটি আদালত। অবশ্য ওআইসিভুক্ত মুসলিম দেশগুলোর তীব্র নিন্দার মুখে সুইডেনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ ঘটনাকে ‘ইসলামবিদ্বেষ’ আখ্যায়িত করে এর নিন্দা জানায়।
সূত্র : আল-জাজিরা মুবাশির