গাজায় ১০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার জরুরি মানবিক সহায়তার ঘোষণা দিয়েছে উপসাগরীয় দেশগুলোর সহযোগিতা পরিষদ (জিসিসি)। গত ১৭ অক্টোবর ওমানের মাস্কাটে অনুষ্ঠিত উপসাগরীয় দেশগুলোর সহযোগিতা পরিষদের মন্ত্রিপরিষদের ৪৩তম বিশেষ বৈঠকে এ ঘোষণা দেওয়া হয়। গাজা উপত্যকায় ক্রমবর্ধমান সহিংসতা ও বোমা হামলা শীর্ষক এই বৈঠকে ইসরায়েলের সামরিক অভিযান বন্ধ এবং অনতিবিলম্বে যুদ্ধবিরতির আহ্বান করা হয়।
এতে উপস্থিত ছিলেন আরব আমিরাতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শেখ আবদুল্লাহ বিন জায়েদ আল-নাহিয়ান, বাহরাইনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. আবদুল লতিফ বিন রশিদ আল-জায়ানি, সৌদি আরবের পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রিন্স ফয়সাল বিন ফারহান আল-সৌদ, কাতারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শেখ মুহাম্মদ বিন আবদুর রহমান আল-থানি, কুয়েতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শেখ সালেম আবদুল্লাহ আল-জাবেন আল-সাবাহ, গালফ কো-অপারেশন কাউন্সিলের মহাসচিব জাসেম মুহাম্মাদ আল-বুদাইয়িসহ উপসাগরীয় দেশগুলোর গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা।
বৈঠকে সৌদি আরব, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও আরব লিগের যৌথ উদ্যোগে একটি প্রস্তাব তুলে ধরা হয়। তাতে মিসর ও জর্দানের সহযোগিতায় মধ্যপ্রাচ্যে শান্তিপ্রক্রিয়া আবার শুরু করতে বলা হয়। এতে পূর্ব জেরুজালেমকে রাজধানী করে এবং ১৯৬৭ সালের সীমানার ওপর ভিত্তি করে স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় জরুরি পদক্ষেপ নেওয়ার ওপর জোর দেওয়া হয়। তা ছাড়া ফিলিস্তিনি অঞ্চলে ইসরায়েলের অবৈধ দখলদারির অবসান ও ফিলিস্তিনি জনগণের আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকারের প্রতি দৃঢ় সমর্থন জানানো হয়।
বৈঠকে গাজা উপত্যকায় মানবিক সহায়তা, ত্রাণ সরবরাহ ও মৌলিক প্রয়োজন পূরণে নিরবচ্ছিন্ন অনুমোদনের পাশাপাশি অবৈধ অবরোধ তুলে নেওয়ার ওপর জোর দেওয়া হয়।সেখানকার অধিবাসীদের বাস্তুচ্যুত বা স্থানান্তর করার যেকোনো প্রচেষ্টা বন্ধ করাসহ ফিলিস্তিনি জনগণের স্থিতিশীলতার প্রতি দৃঢ় সমর্থন জানানো হয়।
এ ছাড়া সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে বেসামরিক নাগরিকদের সুরক্ষা, তাদের ওপর হামলা থেকে বিরত থাকা এবং আন্তর্জাতিক আইন ও মানবিক নীতি কঠোরভাবে মেনে চলার আহ্বান জানানো হয়। নিরপরাধ জিম্মি ও বন্দিদের মুক্তি, বিশেষ করে নারী, শিশু, অসুস্থ, বয়স্ক ও দুর্বল গোষ্ঠীর মুক্তির ওপর জোর দেওয়া হয়।
উল্লেখ্য, গত ৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস ও ইসরায়েলের হামলার মধ্য দিয়ে রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ শুরু হয়। ১১ দিনের হামলায় ফিলিস্তিনের তিন হাজার তিন শয়ের বেশি লোক মারা গেছে, যার মধ্যে এক-তৃতীয়াংশ শিশু রয়েছে। সর্বশেষ গত মঙ্গলবার রাতে গাজার আল-আহলি হাসপাতালে বোমা বর্ষণে পাঁচ শতাধিক শিশু নিহত হয়। অপরদিকে হামাসের হামলায় ইসরায়েলের প্রায় দেড় হাজার লোক নিহত হয়।
সূত্র : সৌদি গেজেট