অজুর সময় কথা বলা কি নাজায়েজ?কোরআনের চর্চা অব্যাহত রাখা আবশ্যকশাওয়ালের ছয় রোজার ফজিলতসৌদিসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে উদযাপিত হচ্ছে ঈদুল ফিতরবৃহস্পতিবার পবিত্র ঈদুল ফিতর
No icon

ইসলামে অন্যায়ের প্রতিবাদ

শুরু থেকে পৃথিবীতে ভালো-মন্দ দুটোর অবস্থান রয়েছে। তার কারণ হলো- জগতের সৃষ্টিকর্তা আল্লাহ তায়ালা এগুলো সৃষ্টির সময় থেকে আরো দু’টি স্থান তৈরি করে রেখেছেন। যাদের নাম হলো জান্নাত-জাহান্নাম। দুনিয়ার জীবনে ভালো কর্মের অধিকারী যারা হবে তারা পরকালীন জীবনে জান্নাতের অধিবাসী হবে। আর খারাপ কর্মের অধিকারীরা হবে জাহান্নামি। তাই, পৃথিবীতে ভালো-মন্দ দুটোর অবস্থান থাকাটা স্বাভাবিক।
আল্লাহ তায়ালা মানুষকে সৃষ্টির সেরা হিসেবে উল্লেখ করে বলেন- ‘তোমাদেরকে শ্রেষ্ঠ জাতি হিসেবে সৃষ্টি করেছি মানুষকে কল্যাণের পথে আহ্বান এবং অকল্যাণ থেকে বিরত রাখার কাজ করার জন্য।’ (সূরা আলে ইমরান-১১০)
কল্যাণের দিকে মানুষকে আহ্বান করার কাজটি কিছুটা সহজ হলেও অন্যায় থেকে বিরত রাখার কাজটি কঠিন। তাই অন্যায় কাজের প্রতিবাদ কীভাবে করব, তা আমাদের জানা থাকা উচিত।
প্রতিবাদের ধরন কেমন হবে তা পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ মানব বিশ্বনবী মুহাম্মদ সা: একটি হাদিসে উল্লেখ করেন। মুসলিম শরিফের বর্ণনায় হজরত আবু সাইদ খুদরি রা: থেকে বর্ণিত- তিনি বলেন, আমি রাসূল সা:-কে বলতে শুনেছি, তিনি বলেন, ‘তোমরা যখন কোনো অন্যায় বা খারাপ কাজ দেখবে, তখন তা নিজের হাত দিয়ে প্রতিরোধ করবে। নিজের যা শক্তি আছে তা দিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়বে অন্যায় প্রতিরোধের জন্য। এটিই হলো প্রথম করণীয়। এই কাজ করতে যদি কেউ অক্ষম হয়, কেউ যদি এভাবে অন্যায়ের প্রতিরোধ করতে না পারে, তাহলে তার করণীয় হলো, মুখে প্রতিবাদ করা। কলম দিয়ে অন্যায়ের বিরুদ্ধে লিখা। অন্যায়কে অন্যায় বলে স্বীকার করা এবং অন্যায়ের বিরুদ্ধে বলিষ্ঠ কণ্ঠে ঘোষণা করা- এটি অন্যায়। এটি জুলুম। কেউ যদি এভাবেও অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে না পারে, অন্যায়কে অন্যায় বলে গর্জন দিয়ে জেগে উঠতে না পারে, তাহলে করণীয় হলো- মনের সবটুকু শক্তি দিয়ে অন্যায়কে ঘৃণা করা। অন্যায়ের বিরুদ্ধে লোকদের সংগঠিত করা। অন্যায়ের প্রতিবাদ এবং প্রতিরোধ করার জন্য করণীয় কি- তা নিয়ে চিন্তা-ভাবনা করা, পরিকল্পনা করা, পরামর্শ করা। রাসূল সা: বলেন, ‘এটি হলো একজন ব্যক্তির নিম্নস্তরের ঈমানের পরিচয়। কেউ যদি এই কাজটুকুও না করে, তাহলে সে কখনো মুমিন হতে পারে না। নিজেকে একজন সত্যিকারের মানুষ হিসেবে পরিচয় দিতে পারে না।’ তাই, আমাদের প্রত্যেকের উচিত, নিজেদের সামর্থ্যরে আলোকে আশপাশে সংঘটিত হওয়া অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করা। আমাদের সম্মিলিত প্রতিবাদই পারে একটি অন্যায় এবং বৈষম্য মুক্ত সমাজ গড়ে তুলতে।