পবিত্র কাবাঘরে ১২০ কেজি স্বর্ণের নতুন গিলাফএ বছর পবিত্র হজের খুতবা দেবেন পবিত্র মসজিদুল হারামের ইমাম ও খতিব শায়খ ড. সালেহ বিন হুমাইদজুলুমকারীদের জন্য আখেরাতে কঠিন শাস্তি অপেক্ষা করছেকোরআন ও হাদিসে নারীর সামাজিক ও রাজনৈতিক অধিকারযে পদ্ধতিতে হজ করা উত্তম
No icon

জুমার নামাজ ছেড়ে দেওয়ার শাস্তি

জুমার দিন জোহরের পরিবর্তে জুমা ওয়াজিব মুসলমান প্রাপ্তবয়স্ক, জ্ঞানসম্পন্ন (যিনি মানসিকভাবে ভারসাম্যহীন নন) মুকিম (যিনি মুসাফির নন) স্বাধীন (যিনি ক্রিতদাস নন) নগর বা লোকালয়ের অধিবাসী পুরুষদের ওপর; যার এমন কোনো গ্রহণযোগ্য অসুবিধা, অসুস্থতা বা বার্ধক্য নেই যে কারণে তিনি মসজিদে উপস্থিত হতে ও জুমা আদায় করতে অক্ষম। আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন,

الْجُمُعَةُ حَقٌّ وَاجِبٌ عَلَى كُلِّ مُسْلِمٍ فِي جَمَاعَةٍ إِلاَّ أَرْبَعَةً عَبْدٌ مَمْلُوكٌ أَوِ امْرَأَةٌ أَوْ صَبِيٌّ أَوْ مَرِيضٌ জুমার নামাজ প্রত্যেক মুসলমানের ওপর জামাতের সাথে আদায় করা ওয়াজিব। কিন্তু তা চার প্রকার লোকের উপর ওয়াজিব নয়; ক্রীতদাস, নারী, শিশু ও অসুস্থ ব্যক্তি। (সুনান আবু দাউদ: ১০৬৭)

যাদের ওপর জুমা ওয়াজিব তাদের জুমা আদায়ে অবহেলা করার কঠোর নিন্দা এসেছে বিভিন্ন হাদিসে। গ্রহণযোগ্য কারণ ছাড়া তিনটি জুমা ছেড়ে দিলে তাদের অন্তরে মোহর পড়ে যায় এবং মুনাফিকদের তালিকায় তাদের নাম লিখিত হয় বলে সতর্ক করা হয়েছে। আবুল জাদ জুমায়রি (রা.) থেকে বর্ণিত আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন,

من تَرَكَ ثلاث جمعٍ تهاوناً بها طبع الله على قلبه যে ব্যক্তি অলসতা করে ধারাবাহিকভাবে তিনটি জুমার জামাতে অনুপস্থিত থাকে, আল্লাহ তাআলা তার অন্তরে মোহর মেরে দেন। (সুনানে নাসাঈ: ১৩৭২) অর্থাৎ সেই অন্তর হেদায়াত পাওয়ার অযোগ্য হয়ে যায়।

আরেকটি হাদিসে এসেছে, ইচ্ছাকৃত তিনটি জুমা ছেড়ে দিলে তার নাম মুনাফিকদের তালিকায় লিখিত হয়। উসামা ইবনে জায়েদ (রা.) থেকে বর্ণিত আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন,

من ترك ثلاث جمعات من غير عذر كتب من المنافقين যে ব্যক্তি কোনো ওজর ছাড়া তিনটি জুমা ছেড়ে দেয়, তার নাম মুনাফিকদের অন্তর্ভুক্ত হিসেবে লিখিত হয়ে যায়। (তাবরানি)

যারা অকারণে জুমার নামাজ ছেড়ে দেয়, হতে পারে জুমার এই বরকতময় দিনেই তাদের অন্তরে মোহর পড়ে যাবে এবং তাদের নাম আল্লাহর দরবারে মুনাফিক হিসেবে লিপিবদ্ধ হয়ে যাবে। তাই এ ব্যাপারে সবার সতর্ক হওয়া কর্তব্য। জুমার ব্যাপারে অবহেলা করে মসজিদে যেতে বিলম্ব করাও সমীচীন নয়।

জুমার দিন খুতবার আগেই মসজিদে চলে যাওয়া আবশ্যক। জুমার আজানের পর দুনিয়াবি কাজকর্ম করার ব্যাপারে কোরআনে নিষেধাজ্ঞা এসেছে। দ্রুত মসজিদে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আল্লাহ বলেন,

یٰۤاَیُّهَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡۤا اِذَا نُوۡدِیَ لِلصَّلٰوۃِ مِنۡ یَّوۡمِ الۡجُمُعَۃِ فَاسۡعَوۡا اِلٰی ذِکۡرِ اللّٰهِ وَ ذَرُوا الۡبَیۡعَ ذٰلِکُمۡ خَیۡرٌ لَّکُمۡ اِنۡ کُنۡتُمۡ تَعۡلَمُوۡنَ হে মুমিনগণ, যখন জুমার দিনে সালাতের জন্য আহবান করা হয়, তখন তোমরা আল্লাহর স্মরণের দিকে ধাবিত হও আর বেচা-কেনা বর্জন কর। এটাই তোমাদের জন্য সর্বোত্তম, যদি তোমরা জানতে। (সুরা জুমা: ৯)

জুমার আজান হয়ে গেলে মসজিদে চলে যাওয়া, সব দুনিয়াবি কাজ বন্ধ করে দেওয়া কুরআনের সরাসরি নির্দেশে ওয়াজিব বা অবশ্য কর্তব্য।