যেসব জায়গায় জুমার নামাজ শুদ্ধ হয় নাঅজুর সময় কথা বলা কি নাজায়েজ?কোরআনের চর্চা অব্যাহত রাখা আবশ্যকশাওয়ালের ছয় রোজার ফজিলতসৌদিসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে উদযাপিত হচ্ছে ঈদুল ফিতর
No icon

জুমআর নামাজে দ্রুত আসা কি জরুরি?

সপ্তাহের সেরা দিন জুমআ। এ দিন পায়ে হেঁটে দ্রুত মসজিদে আসা খুবই গুরুত্বপূর্ণ এবং সাওয়াবের কাজ। যারা আগে আগে মসজিদে আসবে তারা কোরবানির সাওয়াব পাবে। কিন্তু জুমআর নামাজে পায়ে হেঁটে দ্রুত আসা কি জরুরি? এ সম্পর্কে ইসলামের কোনো দিকনির্দেশনা আছে কি?

হ্যাঁ, জুমআর দিন আগে আগে পায়ে হেঁটে মসজিদে আসার তাগিদ রয়েছে হাদিসের বর্ণনায়। আবার আল্লাহ তাআলা কোরআনুল কারিমে বেচা-কেনা বন্ধ করে দ্রুত মসজিদে আসার নির্দেশও দিয়েছেন। আল্লাহ তাআলা বলেন-

فَاسْعَوْا إِلَى ذِكْرِ اللَّهِ তোমরা আল্লাহর স্মরণে দৌড়ে (মসজিদে) আস। (সুরা জুমআ : আয়াত ৯)

যারা দ্রুত মসজিদে আসবে তাদের মর্যাদাও বেশি। হাদিসের বর্ণনায় তা প্রমাণিত। তাহলো-

হজরত আবায়া ইবনে রিফাআহ রাহমাতুল্লাহি আলাইহি বর্ণনা করেন আমি জুমআর নামাজে যাওয়ার সময় হজরত আবু আবস রাদিয়াল্লাহু আনহুর সঙ্গে সাক্ষাৎ হলে তিনি বললেন, আমি আল্লাহর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বলতে শুনেছি যে-

যার দুই পা আল্লাহর পথে ধূলি ধূসরিত হয়;আল্লাহ তাআলা তার জন্য জাহান্নাম হারাম করে দেন। (বুখারি)

তবে দ্রুত মসজিদে গিয়ে জুমআর পড়ার নির্দেশ মানে এই নয় যে, দৌড়ে গিয়ে জামাআতে শরিক হওয়া। বরং নামাজের আজান বা আহ্বান বা সময় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে দেরি না করে; ব্যবসা-বাণিজ্য বা অন্য কোনো কাজে দেরি না করে পায়ে হেঁটে দ্রুত মসজিদে উপস্থিত হওয়াই উদ্দেশ্য। যাতে মুসল্লিরা মসজিদে গিয়ে সুন্নাত নামাজ আদায় করে; সুন্দরভাবে খুতবাহ শুনতে পারে এবং তারপর ইমামের সঙ্গে জুমআ আদায় করতে পারে।

দৌড়ে গিয়ে জামাআতে অংশগ্রহণ করতে নিষেধ করেছেন বিশ্বনবি। এমনকি নামাজে ধীরস্থির থাকা খুবই জরুরি। হাদিসের একাধিক বর্ণনায় তা ওঠে এসেছে-

১. হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, আমি আল্লাহর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বলতে শুনেছি, যখন নামাজ শুরু হয়, তখন দৌড়ে গিয়ে নামাজে যোগদান করবে না, বরং হেঁটে গিয়ে নামাজে যোগদান করবে। নামাজে ধীর-স্থিরভাবে যাওয়া তোমাদের জন্য অপরিহার্য। কাজেই জামাআতে নামাজ যতটুকু পাও আদায় কর; আর যা ছুটে গেছে, পরে তা পূর্ণ করে নাও। (বুখারি)

২. হজরত আবু কাতাদাহ রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘তোমরা আমাকে না দেখা পর্যন্ত নামাজে দাঁড়াবেন না। তোমাদের জন্য ধীর-স্থির থাকা অত্যাবশ্যক। (বুখারি)

সুতরাং মুমিন মুসলমানের উচিত, জুমআর দিন নামাজের সময় হওয়ার আগে


মিসওয়াক করে গোসল করা।

উত্তম জামা-কাপড় পরা।
আতর-সুঘন্ধি ব্যবহার করা।
নামাজের জন্য প্রস্তুত হয়ে থাকা।
আজানের সময় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে কিংবা আজান শুনে পায়ে হেঁটে মসজিদের দিকে রওয়ানা হওয়া।
মসজিদে গিয়ে কাউকে অতিক্রম না করে যেখানে জায়গা পাওয়া যায়, সেখানে দাঁড়িয়ে দুই রাকাআত নামাজ পড়া।
< এরপর চুপচাপ খুতবাহের অপেক্ষায় বসে থাকা।
মনোযোগের সঙ্গে খুতবাহ শোনা।
ইমামের সঙ্গে জুমআর নামাজ আদায় করা।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে জুমআর সময় হওয়ার আগে প্রস্তুতি গ্রহণ করার তাওফিক দান করুন। জুমআর সময় হলে দেরি না করে দ্রুত মসজিদের দিকে পায়ে হেঁটে উপস্থিত হওয়ার তাওফিক দান করুন। আমিন।