যেসব জায়গায় জুমার নামাজ শুদ্ধ হয় নাঅজুর সময় কথা বলা কি নাজায়েজ?কোরআনের চর্চা অব্যাহত রাখা আবশ্যকশাওয়ালের ছয় রোজার ফজিলতসৌদিসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে উদযাপিত হচ্ছে ঈদুল ফিতর
No icon

জুমার নামাজের গুরুত্ব ও করণীয়

জুমার নামাজ প্রত্যেক বয়স্ক পুরুষ ও জ্ঞানসম্পন্ন মুসলমানের উপর জামাতের সঙ্গে আদায় করা ফরজ। চাই সে শহরের বাসিন্দা হোক কিংবা গ্রামের। তবে গোলাম, রোগী, মুসাফির, শিশু ও নারীদের জন্য জুমার নামাজ ফরজ নয়। একবার হজরত ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু বাহরায়েনবাসীর প্রতি এ মর্মে এক লিখিত ফরমান জারি করেন যে- جَمِّعُوْا حَيْثُمَا كُنْتُمْ তোমরা যেখানেই থাক, জুমা আদায় কর। এ থেকে বুঝা যায় যে জুমার নামাজের গুরুত্ব অনেক বেশি।

জুমার নামাজের গুরুত্ব

১. জুমার নামাজের গুরুত্ব এতবেশি যে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম জুমা থেকে বিরত থাকা বা অলসতাকারীদের ঘর জালিয়ে দিতে চেয়েছিলেন। (মুসলিম, মিশকাত)

<২. রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আরও বলেন, জুমা পরিত্যাগকারীদের হৃদয়ে আল্লাহ মোহর মেরে দেন। এরপর তারা গাফেলদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যায়<মিশকাত

৩. তিনি আরও বলেন, যে ব্যক্তি অবহেলা করে পরপর তিন জুমা পরিত্যাগ করলো, সে ব্যক্তি ইসলামকে পেছনে নিক্ষেপ করলো। (আবু দাউদ, তিরমিজি, মিশকাত)

৪. অন্য বর্ণনায় এসেছে, যে ব্যক্তি বিনা করণে তিন জুমা পরিত্যাগ করলো, সে ব্যক্তি মুনাফিক। (ইবনু খাজায়মা)

জুমার সুন্নাত করণীয়

মুমিন মুসলমানের জন্য গুরুত্বপূর্ণ জুমার নামাজ আদায় করা জরুরি। জুমা আদায়ের ক্ষেত্রে বিশেষ কিছু সুন্নাত কাজ রয়েছে। হাদিসের বর্ণনাসহ তা তুলে ধরা হলো-

১. রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন-جَعَلَهُ اللهُ عِيْدًا হে মুসলমানগণ! জুমার দিনকে আল্লাহ তোমাদের জন্য (সাপ্তাহিক) ঈদের দিন হিসাবে নির্ধারণ করেছেন।তোমরা এদিন মেসওয়াক করগোসল কর ও সুগন্ধি লাগাও

২. জুমার দিন সুন্দরভাবে গোসল করে সাধ্যমত উত্তম পোষাক ও সুগন্ধি লাগিয়ে আগে-ভাগে মসজিদে যাওয়া। (বুখারি, মিশকাত)

৩. মসজিদে প্রবেশ করে সামনের কাতারের দিকে এগিয়ে যাওয়া। (নাসাঈ, মুসনাদে আহমাদ, মিশকাত)

৪. আর মসজিদে গিয়ে বসার আগে প্রথমে দুই রাকাত তাহিয়্যাতুল মাসজিদ আদায় করা। (বুখারি ও মুসলিম, মিশকাত)

৫. খতিব মিম্বরে বসার আগ পর্যন্ত (সম্ভব হলে) যত রাকাত খুশি নফল নামাজে নিয়োজিত থাকা। (বুখারি, মুসলিম, আবু দাউদ, মিশকাত)

৬. (ইমাম মিম্বারে আরোহন করলে) চুপচাপ মনোযোগ সহকারে খুতবাহ শোনা। (বুখারি, মুসলিম, মিশকাত)

৭. খুতবাহ চলা অবস্থায় মসজিদে প্রবেশ করলে (অন্যের ক্ষতি না হয় সেদিকে খেয়াল রেখে) শুধু দুই রাকাত তাহিয়্যাতুল মাসজিদ নামাজ আদায় করে বসে পড়া। (মুসলিম, মিশকাত, আবু দাউদ)

যারা জুমা আদায় নিয়ে অলসতা করেন তাদের উচিত, মহান আল্লাহর এ নির্দেশের দিকে মনোযোগ দেয়া। কোরআনুল কারিমে মহান আল্লাহ ঈমানদারদের উদ্দেশ্য করে এ মর্মে নির্দেশ দেন যে- یٰۤاَیُّهَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡۤا اِذَا نُوۡدِیَ لِلصَّلٰوۃِ مِنۡ یَّوۡمِ الۡجُمُعَۃِ فَاسۡعَوۡا اِلٰی ذِکۡرِ اللّٰهِ وَ ذَرُوا الۡبَیۡعَ ؕ ذٰلِکُمۡ خَیۡرٌ لَّکُمۡ اِنۡ کُنۡتُمۡ تَعۡلَمُوۡنَ

হে বিশ্বাসীগণ! জুমার দিন যখন নামাজের জন্য আহ্বান করা হয়, তখন তোমরা আল্লাহর স্মরণের (নামাজের) জন্য ধাবিত হও এবং ক্রয়-বিক্রয় ত্যাগ কর। এটাই তোমাদের জন্য উত্তম, যদি তোমরা উপলব্ধি কর।& (সুরা জুমআ : আয়াত ৯)

মনে রাখা জরুরি

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, জুমার এই দিনটি প্রথমে ইয়াহুদি ও নাছারাদের উপর ফরজ করা হয়েছিল। কিন্তু তারা এ বিষয়ে মতভেদ করে। তখন আল্লাহ তাআলা আমাদের এই দিনের প্রতি (অহির মাধ্যমে) হেদায়াত দান করেন। এখন সব মানুষ আমাদের পশ্চাদানুসারী। ইয়াহুদিরা পরের দিন (শনিবার) এবং নাছারারা তার পরের দিন (রোববার) পালন করে।