মাহে রমজান নানাভাবে মুসলমানদের জীবন প্রভাবিত করে। এই মাসে তুলনামূলকভাবে পাপাচার কমে যায়। মানব কুপ্রবৃত্তি সর্বদা মানুষকে আরাম-আয়েশি জীবন এবং বেশি খাদ্যের প্রতি আকর্ষণ করে; যৌনতা, অশ্লীলতা, ধন-সম্পদের প্রতি অতি লোভ, ঈর্ষা, পরশ্রীকাতরতা, পরচর্চা, অপ্রয়োজনীয় কথা বলা, মিথ্যা বলা, স্বেচ্ছাচারিতা, আল্লাহর বিধি-বিধান সম্পর্কে উদাসীনতা, সালাত থেকে দূরে থাকার অনুপ্রেরণা দিয়ে থাকে। কিন্তু মাহে রমজানে এই চিত্র বদলে যায়। সর্বত্র ইবাদত ও আমলের পরিবেশ থাকে। মসজিদগুলো মুসল্লি দিয়ে ভরপুর থাকে। পবিত্র রমজানে আল্লাহ শয়তানকে শিকলবন্দি করে দেন, যাতে বান্দারা উপরোক্ত নিন্দনীয় প্রকৃতি ও প্রবৃত্তি পরিত্যাগ করে পরকালমুখী হতে পারে। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, রমজান মাস এলে জান্নাতের দরজাগুলো খুলে দেওয়া হয়, আসমানের দরজাগুলো খুলে দেওয়া হয়, জাহান্নামের দরজাগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয় এবং শয়তানকে শৃঙ্খলিত করা হয়। (বুখারি, হাদিস : ৩২৭৭)
মাহে রমজানে প্রবৃত্তির অবৈধ চাহিদার বিরুদ্ধে সংগ্রাম করা সহজ হয়। প্রবৃত্তির বিরুদ্ধে সংগ্রামে জয় লাভ করে আল্লাহর ভালোবাসা যারা পায় তাদের সম্পর্কে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, আল্লাহ যখন তাঁর কোনো বান্দাকে ভালোবাসেন, তখন জিবরাইল (আ.)-কে ডেকে বলেন, আমি অমুক বান্দাকে ভালোবাসি, তুমিও তাকে ভালোবাসো। তখন জিবরাইল (আ.)ও তাকে ভালোবাসেন। অতঃপর জিবরাইল (আ.) আসমানবাসীদের (সব ফিরিশতা) মধ্যে ঘোষণা করে দেন যে আল্লাহ অমুক বান্দাকে ভালোবাসেন।তোমরাও তাকে ভালোবাসো। তখন আসমানবাসীরাও তাকে ভালোবাসতে থাকে। তারপর পৃথিবীবাসীর অন্তরেও তাকে বরণীয় করে রাখা হয়। (বুখারি, হাদিস : ৭৪৮৫) পাপ ও প্রবৃত্তির বিরুদ্ধে সংগ্রাম করার মাধ্যমে মুসলমানরা মাহে রমজানে যথাসাধ্য পাপমুক্ত থাকার চেষ্টা করে। ফলে সমাজে অন্য মাসের তুলনায় পাপ কম হয়।