দুনিয়া ও পরকালের সুন্দর জীবন গঠনের সুন্দর উপদেশ। হজরত ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহুকে দেওয়া হজরত আবু বকর রাদিয়াল্লাহু আনহুর উপদেশ। চমৎকার এ উপদেশে যে কারো দুনিয়া ও পরকাল হবে সুন্দর ও অতি উত্তম। কী সেই উপদেশ?
নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সবচেয়ে কাছের সাহাবি; ইসলামের প্রথম খলিফা হজরত আবু বকর রাদিয়াল্লাহু আনহু তাঁর পরবর্তী খলিফা হজরত ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহুকে উদ্দেশ্য করেই দিয়েছিলেন অনন্য এই দিকনির্দেশনা। তাহলো-
১.আল্লাহকে ভয় করা
হে ওমর! তুমি আল্লাহ তাআলাকে ভয় করো। জেনে রেখো! আল্লাহ তাআলার জন্য কিছু দিনের আমল রয়েছে, যা তিনি রাতে হলে গ্রহণ করবেন না। কিছু আমল রাতের রয়েছে, যা তিনি দিনে গ্রহণ করবেন না। আর ফরজ আদায় না করে, নফল আদায় করলে, সেই নফল তিনি গ্রহণ করবেন না।
২. মিজানের পাল্লা ভারি হওয়ার প্রত্যাশা
হে ওমর! কেয়ামতের দিন যাদের মিজানের পাল্লা ভারি হয়ে যাবে, তাদের সেই পাল্লা দুনিয়ায় হকের অনুসরণ করার কারণেই ভারি হবে। আর যাদের পাল্লা কেয়ামতের দিন হালকা হয়ে যাবে, তাদের সেই পাল্লা দুনিয়ায় বাতিলকে অনুসরণ করার কারণেই হালকা হয়ে যাবে।
৩. জান্নাতিদের দলভুক্ত হওয়ার আকাঙ্ক্ষা
হে ওমর! আল্লাহ তাআলা যখন জান্নাতিদের আলোচনা করেছেন, তখন তাঁদের উত্তম আমলগুলো উল্লেখ করে আলোচনা করেছেন। তাঁদের মন্দগুলোকে পরিহার করেছেন। আমি যখন তাঁদের আলোচনা করি, তখন মনে মনে বলি- নিশ্চয়ই আমার ভয় হয়, আমি যদি তাঁদের দলভুক্ত হতে না পারি।
আর আল্লাহ তাআলা যখন জাহান্নামিদের আলোচনা করেছেন, তখন তাদের মন্দ কাজগুলো উল্লেখ করে তাদের আলোচনা করেছেন। আর ভালো কাজগুলোর আলোচনা করা থেকে বিরত থেকেছেন।
আমি যখন তাদের আলোচনা করি, তখন মনে মনে বলি, নিশ্চয় আশা করি, আমি যেনো তাদের দলভুক্ত না হই। তা এই কারণে যে, বান্দার মধ্যে আশা ও ভয় উভয়টিই থাকা দরকার।
যাতে শুধু আল্লাহ তাআলার উপর আশা করেই বসে না থাকে। অন্যদিকে ভয়ের কারণে যেনো আল্লাহ তাআলার দয়া থেকে একেবারে নিরাশ হয়ে না যায়।
৪. তবেই মৃত্যু হবে প্রশান্তির
হে ওমর! যদি তুমি আমার ওসিয়তগুলো হেফাজত করে থাকো, তাহলে তোমার কাছে মৃত্যু অপেক্ষা অন্য কোনো বস্তু প্রিয় হবে না। যে মৃত্যু অচিরেই তোমার কাছে আগত। আর যদি তুমি আমার এই ওসিয়তগুলোকে নষ্ট করে থাকো, তাহলে তোমারা কাছে মৃত্যু অপেক্ষা অধিক অপছন্দনীয় কোনো বস্তু হবে না। অথচ, তুমি মৃত্যুকে ফেরাতে অক্ষম।
মুমিন মুসলমানের করণীয়
১. আল্লাহকে ভয় করা। আল্লাহর নির্দেশ পালনে যথাযথ ধারাবাহিকতা রক্ষা করা।
২. সত্যের অনুসরণ ও অনুকরণে মিজানের পাল্লা ভারি করার চেষ্টা করা এবং বাতিল বা অসত্যকে পরিত্যাগ করা।
৩. ভালো মানুষের উত্তম আমলগুলো আলোচনা করা এবং মন্দ কথা ও কর্মের আলোচনা পরিহার করা।
৪. সুনিশ্চিত কল্যাণের মৃত্যু প্রত্যাশা করা এবং উল্লেখিত উপদেশগুলো জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে বাস্তবায়ন করা।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে হজরত আবু বকর রাদিয়াল্লাহু আনহু অমূল্য নসিহতগুলো মেনে চলার তাওফিক দান করুন। দুনিয়া ও পরকালের চূড়ান্ত সফলতা পাওয়ার তাওফিক দান করুন। আমিন।