সকল প্রশংসা আল্লাহ তা‘আলার জন্য এবং দরূদ ও সালাম আল্লাহর রাসূল, তার পরিবারবর্গ, তার সাথী ও তার সকল অনুসারীদের ওপর। অতঃপর, সহিহ হাদিসে কুদসি” গ্রন্থটি আমার নিকট বিশুদ্ধ প্রমাণিত হাদিসে কুদসির বিশেষ সংকলন। এখানে আমি সনদ ও ব্যাখ্যা ছাড়া হাদিসে কুদসিগুলো উপস্থাপন করেছি। হাদিসগুলো সূত্রসহ উল্লেখ করে হুকুম ও শব্দের জরুরী অর্থ বর্ণনা করে ক্ষান্ত হয়েছি। আল্লাহ আমার এ আমল কবুল করুন এবং এর দ্বারা সকল মুসলিমকে উপকৃত করুন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যেসব হাদিস আল্লাহর সাথে সম্পৃক্ত করে বর্ণনা করেছেন আলেমগণ সেগুলোকে “হাদিসে কুদসি” নামে অভিহিত করেছেন। আল্লাহর নাম “কুদ্দুস” এর সাথে সম্পর্কযুক্ত করে এসব হাদিসকে ‘কুদসি’ বলা হয়। (“কুদ্দুস” অর্থ পবিত্র ও পুণ্যবান।)
হাদিসে কুদসি” ও কুরআনুল কারিমের মধ্যে পার্থক্য:
১. রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট জিবরিল আলাইহিস সালাম কুরআনুল কারিম নিয়ে অবতরণ করেছেন, কিন্তু হাদিসে কুদসি তিনি লাভ করেছেন কখনো জিবরিল, কখনো এলহাম, কখনো অন্য মাধ্যমে।
২. সম্পূর্ণ কুরআন মুতাওয়াতির সনদে বর্ণিত, কিন্তু হাদিসে কুদসি অনুরূপ নয়।
৩. কুরআনুল কারিমে ভুল অনুপ্রবেশ করতে পারে না, কিন্তু হাদিসে কুদসিতে কখনো কোন বর্ণনাকারী ধারণার বশবর্তী হয়ে বর্ণনা করার সময় ভুল করতে পারে।
৪. সালাতে কুরআনুল কারিম তিলাওয়াত করতে হয়, কিন্তু হাদিস কুদসি তিলাওয়াত করা বৈধ নয়।
৫. কুরআনুল কারিম সূরা, আয়াত, পারা ও অংশ ইত্যাদিতে বিভক্ত, কিন্তু হাদিসে কুদসি অনুরূপ নয়।
৬. কুরআনুল কারিম তিলাওয়াত করলে সওয়াব রয়েছে, কিন্তু হাদিসে কুদসিতে অনুরূপ ফযিলত নেই।
৭. কুরআনুল কারিম কিয়ামত পর্যন্ত সর্বকালের জন্য মু‘জিযা।
৮. কুরাআনুল কারিম অস্বীকারকারী কাফের, কিন্তু হাদিসে কুদসি অস্বীকারকারী অনুরূপ নয়। (কারণ তার মনে হতে পারে যে, এটি দুর্বল)।
৯. হাদিসে কুদসির শুধু ভাব বর্ণনা করা বৈধ, কিন্তু কুরআনুল কারিমের ভাবকে কুরআন হিসেবে বর্ণনা করা বৈধ নয়; অনুরূপভাবে কুরআনের অর্থের তিলাওয়াতও বৈধ নয়। এ হচ্ছে কুরআন ও হাদিসে কুদসির মধ্যে মৌলিক ও গুরুত্বপূর্ণ কতক পার্থক্য, এ ছাড়া উভয়ের আরো কিছু পার্থক্য রয়েছে। আর সালাত ও সালাম আমাদের নবী, তার পরিবার ও তার সকল সাথীদের ওপর।