ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছেন জাপানি তারকা রায়ে লিল ব্ল্যাকজাহান্নামীদের শয্যা ও পোশাকঋণ থেকে মুক্তি পাওয়ার দোয়াআল্লাহর জিকির মুমিনকে শক্তিশালী করেপবিত্র কাবাঘরে ১২০ কেজি স্বর্ণের নতুন গিলাফ
No icon

ইবাদতে উদাসীনতার করুণ প্রতিফল

ইবাদতে অবহেলার কারণে মানুষের জীবনে বহু ধরনের অসংগতি নেমে আসে। মুমিন যখন ইবাদতে অবহেলা করে, তখন আল্লাহ তাকে সতর্ক করার জন্য বিভিন্ন রকম বৈরী পরিবেশের সম্মুখীন করেন। যাতে তারা সচেতন হয়ে আল্লাহর জিকিরে মনোনিবেশ করে। নিম্নে ইবাদতে অবহেলার ফলে দৈনন্দিন জীবনে সৃষ্ট কিছু সমস্যা তুলে ধরা হলো—

জীবিকা সংকুচিত হয় : ইবাদতে অবহেলার একটি নগদ শাস্তি হলো, জীবিকা সংকুচিত হয়ে আসা, যা মানুষকে অস্থির করে তোলে।

এর প্রভাবে ঘরে ঘরে বহু ধরনের অশান্তি তৈরি হয়। মানসিক চাপ থেকে শুরু করে শারীরিক অসুস্থতাও জেঁকে বসে। পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ এ ব্যাপারে আগেই সতর্ক করেছেন। ইরশাদ হয়েছে, ‘আর যে আমার স্মরণ থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবে, তার জন্য হবে নিশ্চয়ই এক সংকুচিত জীবন এবং আমি তাকে কিয়ামত দিবসে ওঠাবো অন্ধ অবস্থায়।’ (সুরা : ত্বহা, আয়াত : ১২৪)

নাউজুবিল্লাহ, তাই মুমিনের উচিত সর্বদা ফরজ ইবাদতগুলোর প্রতি যত্নবান থাকা। সাধ্য অনুযায়ী নফল ইবাদত করারও চেষ্টা করা। তাহলে আল্লাহর রহমতে মানুষ কখনো অস্থিরতা অনুভব করবে না। শাস্তিস্বরূপ চাপিয়ে দেওয়া অভাব-অনটন আসবে না।

 

পরিবার থেকে বরকত উঠে যায় : ইবাদতের প্রতি উদাসীনতা মানুষের জীবন থেকে বরকত তুলে নেয়। আর যারা ইবাদতের প্রতি যত্নবান হয়, তারা আল্লাহ প্রদত্ত বিশেষ রহমত ও বরকত অনুভব করে। বোঝা গেল ইবাদতের সঙ্গে বরকতের একটি সংযোগ রয়েছে। বিষয়টি পবিত্র কোরআনও সমর্থন করে। পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ বলেছেন, ‘আর যদি তারা তাওরাত, ইনজিল ও তাদের নিকট তাদের রবের পক্ষ থেকে যা নাজিল করা হয়েছে, তা কায়েম করত, তবে অবশ্যই তারা আহার করত তাদের ওপর থেকে এবং তাদের পদতল থেকে।

তাদের মধ্যে থেকে সঠিক পথের অনুসারী একটি দল রয়েছে এবং তাদের অনেকেই যা করছে, তা কতই না মন্দ!’
(সুরা : মায়িদা, আয়াত : ৬৬)

এই আয়াত দ্বারা বোঝা যায়, আল্লাহর বিধান পালনে যত্নবান হলে রিজিকে বরকত পাওয়া যায়।

অন্তর কঠিন হয়ে যায় : ইবাদতের অলসতা ও অবহেলার ফলে অন্তর কঠিন হয়ে যায়। অবহেলাকারী আল্লাহর রহমত থেকে বের হয়ে যায়। আর যে আল্লাহর রহমত থেকে বঞ্চিত হতে শুরু করে, তার জীবনে অশান্তির অমানিশা নেমে আসা স্বাভাবিক। পবিত্র কোরআনে ইবাদতে অবহেলাকারীর ব্যাপারে ইরশাদ হয়েছে—‘অতএব সেই নামাজ আদায়কারীর জন্য দুর্ভোগ, যারা নিজেদের নামাজের ব্যাপারে উদাসীন।’ (সুরা : মাউন, আয়াত : ৪-৫)

লাঞ্ছনার শাস্তি অবধারিত হয়ে যায় : ইবাদতে অবহেলা ও পাপের মধ্যে ডুবে যাওয়া আল্লাহকে ক্রোধান্বিত করে তোলে, ফলে অবহেলাকারীর জন্য ধ্বংস অবধারিত হয়ে যায়। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘তাদের পরে এলো এমন এক অসৎ বংশধর, যারা নামাজ বিনষ্ট করল এবং কুপ্রবৃত্তির অনুসরণ করল। সুতরাং শিগগিরই তারা ধ্বংসের সম্মুখীন হবে।’ (সুরা : মারিয়াম, আয়াত : ৫৯)

নাউজুবিল্লাহ, আল্লাহ যাদের ধ্বংস করার ঘোষণা দিয়েছেন, তাদের দুনিয়া ও আখিরাতের লাঞ্ছনা অবধারিত।

বিপদ-আপদ ও অনিশ্চয়তা দেখা যায় : ইবাদতে অবহেলা করে মানুষ নিজেই নিজের বিপদ ডেকে আনে। পৃথিবীটা তার জন্য সংকুচিত হয়ে ওঠে। অনিশ্চয়তা ও দুশ্চিন্তা তাকে সব দিক থেকে ঘিরে ধরে। মনে হয় যেন গোটা পৃথিবীটা তার জন্য বিষাক্ত হয়ে ওঠে। এর কারণ মানুষের হাতের কামাই, যা সে আল্লাহবিমুখ হয়ে অর্জন করেছে। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে—‘মানুষের কৃতকর্মের দরুন স্থলে ও সমুদ্রে ফ্যাসাদ প্রকাশ পায়। যার ফলে আল্লাহ তাদের কিছু কৃতকর্মের স্বাদ তাদেরকে আস্বাদন করান, যাতে তারা ফিরে আসে।’ (সুরা : রোম, আয়াত : ৪১)