যেসব জায়গায় জুমার নামাজ শুদ্ধ হয় নাঅজুর সময় কথা বলা কি নাজায়েজ?কোরআনের চর্চা অব্যাহত রাখা আবশ্যকশাওয়ালের ছয় রোজার ফজিলতসৌদিসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে উদযাপিত হচ্ছে ঈদুল ফিতর
No icon

যেসব কারণে জুমআর দিনের মর্যাদা ও শ্রেষ্ঠত্ব বেশি

আল্লাহ তাআলার কাছে জুমআর দিন দুই ঈদের দিনের চেয়েও মর্যাদাবান এবং উত্তম। হাদিসের একাধিক বর্ণনায় এ দিনের মর্যাদা ও শ্রেষ্ঠত্বের বিষয়টি তুলে ধরেছেন স্বয়ং বিশ্বনবি। এ কারণেই জুমআর দিনটি ইবাদত-বন্দেগিতে অতিবাহিত করার নির্দেশ এসেছে কুরআন এবং সুন্নায়। আল্লাহ তাআলা বলেন-

يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا إِذَا نُودِي لِلصَّلَاةِ مِن يَوْمِ الْجُمُعَةِ فَاسْعَوْا إِلَى ذِكْرِ اللَّهِ وَذَرُوا الْبَيْعَ ذَلِكُمْ خَيْرٌ لَّكُمْ إِن كُنتُمْ تَعْلَمُونَ - فَإِذَا قُضِيَتِ الصَّلَاةُ فَانتَشِرُوا فِي الْأَرْضِ وَابْتَغُوا مِن فَضْلِ اللَّهِ وَاذْكُرُوا اللَّهَ كَثِيراً لَّعَلَّكُمْ تُفْلِحُونَ মুমিনগণ, জুমআর দিনে যখন নামাজের আজান দেওয়া হয়, তখন তোমরা আল্লাহর স্মরণের পানে ত্বরা কর এবং বেচাকেনা বন্ধ কর। এটা তোমাদের জন্যে উত্তম যদি তোমরা বুঝ। অতঃপর নামাজ সমাপ্ত হলে তোমরা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড় এবং আল্লাহর অনুগ্রহ (জীবিকা) তালাশ কর ও আল্লাহকে অধিক স্মরণ কর, যাতে তোমরা সফলকাম হও। (সুরা জুমআ : আয়াত ৯-১০)

এ আয়াতে জুমআর দিনের মর্যাদা ও শ্রেষ্ঠত্ব সুস্পষ্ট। এ দিন আজানের সঙ্গে সঙ্গে দেরি না করে বেচাকেনা বন্ধ করে জুমআ আদায় মসজিদে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন আল্লাহ তাআলা। আর কেন এ দিন ইবাদত-বন্দেগিতে অতিবাহিত করা জরুরি। তা ওঠে এসেছে হাদিসের একাধিক বর্ণনায়। তাহলো-

১. জুমআর দিন দুই ঈদের দিনের চেয়েও মর্যাদাবান এবং উত্তম। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামও বলেছেন,নিঃসন্দেহে জুমুআর দিন সেরা দিন ও আল্লাহর কাছে সর্বোত্তম দিন। আল্লাহ তাআলার কাছে তা ঈদুল আজহা ও ঈদুল ফিতরের দিনের চেয়েও উত্তম। (ইবনে মাজাহ)

২. জুমআর দিনের শ্রেষ্ঠত্ব ও মর্যাদা সম্পর্কে অন্য হাদিসে প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আরও ঘোষণা করেন, যে সব দিনগুলোতে সূর্য উঠে; তন্মধ্যে সর্বোত্তম হলো জুমআর দিন। এই দিনেই আদম আলাইহিস সালামকে সৃষ্টি করা হয়েছে এবং এই দিনেই তাকে জান্নাতে প্রবেশ করানো হয়েছে এবং এই দিনেই জান্নাত থেকে তাকে বের করা হয়েছে। (মুসলিম)

৩. জুমআর দিন ইসলামের পূর্ণতার ঘোষণা দিয়েছেন বিশ্বনবি। হজরত ইবন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি যখন এ আয়াতটি তেলাওয়াত করেন-
الْيَوْمَ أَكْمَلْتُ لَكُمْ دِينَكُمْ وَأَتْمَمْتُ عَلَيْكُمْ نِعْمَتِي وَرَضِيتُ لَكُمُ الإِسْلاَمَ دِينًا তখন তার কাছে একজন ইয়াহুদি ছিল। সে বলল, যদি আয়াতটি আমাদের ওপর নাজিল হতো তাহলে আমরা দিনটিকে ঈদের দিন বানিয়ে নিতাম। অতপর ইবন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু বললেন, ;আয়াতটি ঈদের দিনেই নাজিল হয়েছে (আর তা ছিল) জুমআর দিন ও আরাফার দিন। (তিরমিজি)

৪. জুমআর দিন বান্দার গোনাহ মাফের দিন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, এক জুমআ থেকে অপর জুমআ- এতদুভয়ের মাঝে (গোনাহের জন্য) কাফ্;ফারা হয়ে যায়, যদি কবিরাহ (বড়) গোনাহের সঙ্গে সম্পৃক্ত না হয়ে থাকে। (মুসলিম)

৫. বছরব্যাপী নামাজ-রোজার সাওয়াব পাওয়ার মাধ্যমও জুমআর দিনের ইবাদত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি জুমআর দিন ভালো করে গোসল করে সকাল সকাল মসজিদে আসবে এবং ইমামের কাছাকাছি হবে এবং মনোযোগ দিয়ে খুতবা শুনবে ও চুপ থাকবে তার জুমআর নামাজে আসার প্রত্যেক কদমে এক বছরের নামাজ ও রোজা পালনের সাওয়াব অর্জিত হবে। (তিরমিজি, নাসাঈ)